প্রকৃতিপ্রেমী প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং
2022-04-01 14:30:03

গত ১২ মার্চ চীনে পালিত হয়েছে বৃক্ষরোপন দিবস। ২০১৩ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং রাজধানী বেইজিংয়ে টানা ৯ বছর ধরে দিবসটি উপলক্ষ্যে বৃক্ষরোপন করে আসছেন। তিনি সবাইকে প্রকৃতিকে সম্মান এবং আদর করার প্রাকৃতিক সভ্য চেতনার অনুপ্রেরণা দেন। চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) অষ্টাদশ কংগ্রেসের পর থেকে চীনে ব্যাপকভাবে গাছ লাগানো কার্যক্রম চলছে। যার ফলে গাছ ও ঘাস চাষের পরিমাণ সারা দেশে ৭ কোটি ৮২ লাখ হেক্টর ছাড়িয়েছে। এরই মধ্যে বন তৈরির পরিমাণ ৬ কোটি ৩৮ লাখ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে। মনুষ্য তৈরি বনের আয়তন বিশ্বের প্রথম স্থানে রয়েছে।

 

চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বরাবরই প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছেন। তাঁর গাছ লাগানো ও রক্ষা সম্পর্কিত অনেক গল্প রয়েছে। আজকের এ অনুষ্ঠানে আপনাদের আমরা সে গল্পগুলো শুনাবো।

 

চীনের ফু চিয়ান প্রদেশের ফু চৌ শহরের কু লৌ অঞ্চলের স্যু ওয়েই রোডে একটি হাজার বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক বটগাছ রয়েছে। এ বটগাছ এখনও প্রাণবন্ত। যাকে ফু চৌ শহরের প্রথম বটগাছ বলে গণ্য করা হয়। ১৯৯৮ সালের জানুয়ারিতে ফু চিয়ান প্রদেশের সিপিসির উপ সম্পাদক হিসেবে সি চিন পিং এ গাছ দেখতে যান। তিনি গাছ রক্ষককে বলেন, “আপনি এ প্রথম বটগাছের রক্ষক। প্রাণের যত্ন নেওয়ার মতো এ জীবিত পুরাকীর্তি রক্ষা করেন। কোনো আকস্মিত ঘটনা ঘটলে বাগান ব্যবস্থাপনা বিভাগকে জানাবেন।

 

ফু চিয়ান প্রদেশের ছাং থিং এক সময় দক্ষিণ চীনের মাটি ক্ষয়ের দিক দিয়ে সবচেয়ে গুরুতর অঞ্চলের অন্যতম ছিল। ফু চিয়ান প্রদেশে থাকার সময় সি চিন পিং পরপর পাঁচ বার ছাং থিং পরিদর্শন করেন এবং মাটি ক্ষয় রোধে নির্দেশনা দেন। ২০০০ সালের ২৯ মে ছাং থিং জেলায়  নদনদী ও মাটির প্রাকৃতিক বিজ্ঞান-শিক্ষা উদ্যান গঠনের খবর শুনে সি চিন পিং একটি কর্পূর গাছ লাগানোর জন্য একশ ইউয়ান পাঠান। বর্তমানে সে গাছটি ছাং থিং জেলার সুবজ বিষ্ময়ের প্রমাণ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।


 

২০০৯ সালের এপ্রিল মাসে সি চিন পিং হ্য নান প্রদেশের লান খাওয়ে চীনের বিখ্যাত কর্মকর্তা চিয়াও ইয়ু ল্যু’র কার্যক্রমের প্রদর্শনী দেখতে যান। তিনি সেখানে একটি 
পলোনিয়া গাছ লাগান। ২০১২ সালের মার্চ ও মে মাসে তিনি পরপর দুবার লান খাও পরিদর্শন করেন। সবার সাথে আলোচনাসভায় বসার সময় তিনি চিয়াও ইয়ু ল্যুকে স্মরণ করে বলেন, ‘আমাদের এ প্রজন্মের মানুষ চিয়াও ইয়ু ল্যু’র কর্মকান্ডে প্রভাবিত।  আমি গ্রামীণ চাষাবাদ করি, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই, সশস্ত্র বাহিনীতে যোগ দেই এবং নেতৃত্ব দেই, সে সব কাজ করার সময় কমরেড চিয়াও ইয়ু ল্যু’র ভাবমূর্তী আমার মনে ছাপ রাখে।

 

১৯৯২ সালে চীনের শীর্ষ নেতা তেং সিয়াও পিং শেন জেন শহরের সিয়ান হু বোটানিক গার্ডেনে একটি বটগাছ লাগান। ২০১২ সালে শেন জেন শহরের লিয়ান হুয়া শান পার্কে তেং সিয়াও পিং’র তামার মূর্তীর অদূরে একই গাছ লাগান। দুটি বটগাছ দুজন শীর্ষনেতার মধ্যে বসন্তকালের গল্প ধরে রাখার প্রমাণ। পরিদর্শনে  গিয়ে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ‘সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ অব্যাহতভাবে এগিয়ে নেওয়ার’ নির্দেশনা দিয়েছেন। 

১৯৯২ সালে চীনের শীর্ষ নেতা তেং সিয়াও পিং শেন জেন শহরের সিয়ান হু বোটানিক গার্ডেনে একটি বটগাছ লাগান। ২০১২ সালে শেন জেন শহরের লিয়ান হুয়া শান পার্কে তেং সিয়াও পিং’র তামার মূর্তীর অদূরে একই গাছ লাগান। দুটি বটগাছ দুজন শীর্ষনেতার মধ্যে বসন্তকালের গল্প ধরে রাখার প্রমাণ। পরিদর্শনে  গিয়ে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ‘সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ অব্যাহতভাবে এগিয়ে নেওয়ার’ নির্দেশনা দিয়েছেন। 

 

২০১৯ সালের বেইজিং বিশ্ব উদ্যান মেলায় প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বিদেশী নেতাদের সঙ্গে  একটি ক্ষুদ্র গাছের গোড়ায় মাটি ও পানি দেন। বিশ্ব উদ্যান মেলায় ভাষণ দেওয়া সময় সি চিন পিং পাঁচটি দিকে জোর দিয়ে বলেন, সবার উচিত মানব জাতি ও প্রকৃতির সম্প্রীতি বাস্তবায়ন, সবুজ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি অর্জন করা, প্রকৃতির যত্ন ও আদর করা, বৈজ্ঞানিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং হাতে হাত ধরে সহযোগিতা জোরদার করা। 

তিনি বলেন, “আমি আশা করি যে, এই মেলার উদ্যান থেকে সবুজ উন্নয়নের চেতনা বিশ্বের প্রতিটি দিকে ছড়িয়ে যাবে, যাতে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের লোকেরা সমৃদ্ধ বৈষয়িক সম্পদ উপভোগের পাশাপাশি তারকাময় আকাশ, সুবজ পবর্ত এবং ফুলের সুগন্ধ উপভোগ করতে পারেন।


 সিপিসির অষ্টাদশ কংগ্রেসের পর থেকে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং প্রতি বছর তাঁর সহকর্মীদের সঙ্গে বেলচা হাতে নিয়ে গাছ লাগাতে যান।  তিনি সব সময় ‘বন ও সুবজায়ন এবং প্রাকৃতিক সংরক্ষণসহ  নানা কাজে উত্সাহিত করে ভাষণ দেন এবং তার ‘প্রকৃতি প্রেম, প্রকৃতির যত্ন ও প্রকৃতি সংরক্ষণ’ সংক্রান্ত চেতনা সম্প্রসারণ করেন।  একটি গাছ লাগালে পরিবেশগত সভ্যতার আশাআঙ্খাকা জ্বাগ্রত হয় এবং সুন্দর চীনের স্বপ্ন পূরণ হওয়ার আলো জ্বলে ওঠে।


সুপ্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, অনুষ্ঠানের শেষ প্রান্তে চলে এসেছি আমরা। আজকের অনুষ্ঠান কেমন লাগলো, যদি ভালো লেগে থাকে, এবং আপনার কোনো মতামত থাকে, তাহলে আমাদের চিঠি বা ইমেইল লিখতে ভুলবেন না। আমাদের ইমেইল ঠিকানা ben@cri.com.cn এবং wangdanhong@cri.com.cn। আপনারা আমাদের ফেসবুকেও কমেন্ট করতে পারেন। আপনাদের মতামত আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। সবাই ভালো থাকুন এবং সুন্দর থাকুন। আগামী সপ্তাহে আবারও কথা হবে।