গিনিতে চীনের স্বাস্থ্যসেবা দল: মানবসেবার দৃষ্টান্ত
2022-03-17 20:38:12

মার্চ ১৭, চীন আন্তর্জাতিক বেতার: এশিয়া-আফ্রিকা-ইউরোপ থেকে শুরু করে সুদূর ল্যাটিন আমেরিকা কিংবা ওশেনিয়া, এমন কোন অঞ্চল নেই যেখানে মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ করেনি চীন। বিশ্বের অন্তত ৭১টি দেশে স্বাস্থ্য সুরক্ষা দিতে গেল কয়েক দশক ধরে কাজ করছে চীন সরকার। এসব দেশে পাঠানো হয়েছে ২৮ হাজার  স্বাস্থ্যকর্মী। সম্প্রতি আফ্রিকার দেশ গিনিতে গিয়ে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা দিয়েছে চীনা কর্মীরা।

নিজ দেশের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ করে চীন। বিশেষ করে বিশ্বের ৭১টি দেশে সরাসরি মানবসেবায় কাজ করছেন ২৮হাজার চীনা স্বাস্থ্যকর্মী। এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ ও ওশেনিয়ায় ২৯০ মিলিয়ন রোগীকে স্বাস্থ্যসেবা দিয়েছেন তারা।

৫৯ বছর আগে আফ্রিকার দেশ গিনিতে প্রথম মেডিকেল মিশন পাঠায় চীন। পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটিতে ছিলো এইডস, ম্যালেরিয়া ও টাইফয়েডের প্রাদুর্ভাব। ২০২১ সালে দেশটিতে ইবোলা ও মারবুর্গ রোগের বিস্তার দেখা দেয়। কিন্তু তাদের পরীক্ষা ও সুরক্ষার ব্যবস্থা ছিল দুর্বল।

গিনিতে ২৮তম চীনা মেডিকেল মিশনের সদস্য ওয়াং সিংওয়েন। তিনি জানান, যে কোন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াই এখানকার প্রধান চ্যালেঞ্জ।

“যখন রোগীর জীবনের প্রশ্ন তখন ডাক্তারকে সাহসের সঙ্গে পীড়িত ব্যক্তির জীবন রক্ষায় এগিয়ে যেতে হবে। এমন সময়ে রোগীর জন্য ইবোলা, ম্যালেরিয়া ও করোনা ভাইরাসের টেস্টে বেশি সময় ব্যয় করাও অসম্ভব। কিন্তু চায়নিজ ডাক্তাররা এই ধরনের পরিস্থিতিতে ভয়ে পিছিয়ে না গিয়ে সাহসের সঙ্গে সংকট মোকাবেলা করে।”

১৮ মাসের মিশনে অনেক সংকটাপন্ন রোগীকেও চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ্য করেছে চীনা মেডিকেল দল। নিউরোমেডিসিন সেন্টার ও গিনির ফার্স্ট নিউরোসার্জারি মাইক্রোস্কোপিক ল্যাবরেটরি স্থাপনেও সহায়তা করেছে এ দলটি।

সাইলা, নিউরোসার্জন

“আমি যখন মাইক্রোস্কোপে প্রথমবারের মতো সরু রক্তনালী দেখি তখন চমকে গিয়েছিলাম। সার্জারির সময় আমরা রক্তনালী পর্যবেক্ষণ করছিলাম। আগে মাইক্রোস্কোপে দেখে অপারেশন করতে অভ্যস্ত ছিলাম না। কিন্তু দেখেছি এটি খুবই সুবিধাজনক পদ্ধতি। সার্জিকাল চিকিৎসায় এটি বিশাল সহায়তা করে।”

২০২১ সালে ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৬টি চীনা মেডিকেল মিশন এসেছে এখানে। কাজ করেছে স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার উন্নয়নে।

চায়না-গিনি ফ্রেন্ডশিপ হসপিটালের পরিচালক ডিয়ান জানান, মেডিকেল মিশন তাদের জন্য অনেক সহায়ক হয়েছে।

“আমি প্রত্যেকের নামের তালিকা দিতে পারছি না কিন্তু তারা সকলেই খুবই যোগ্য ও নিবেদিত চিকিৎসক। তারা কঠোর পরিশ্রমী। আমরা মেডিকেল মিশনের কাছ থেকে তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক দুই দিক থেকেই অনেক কিছু শিখেছি।”

গিনিতে ১৮ মাসের মিশন শেষে সম্প্রতি ফিরে যান চিকিৎসকরা। তবে তাদের অবদান ভোলেনি গিনি। স্বাস্থ্যসেবায় অবদানের স্বীকৃতি দিয়ে তাদের সম্মান জানায় গিনির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

প্রতিবেদন: শান্তা মারিয়া

সম্পাদনা: সাজিদ রাজু