দুই অধিবেশনে প্রেসিডেন্ট সির গুরুত্বপূর্ণ তত্পরতাসমূহ
2022-03-16 11:30:42

মার্চ মাসের উষ্ণ বসন্ত বাতাসের মাঝে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের গণমহাভবনে শেষ হয়েছে চলতি বছরের দুই অধিবেশন। অধিবেশন চলাকালে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ইনার মঙ্গোলীয় প্রতিনিধি দলের আলোচনাসভা, জাতীয় রাজনৈতিক পরামর্শ পরিষদের কৃষি, সমাজ কল্যাণ ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতের সদস্যদের আলোচনাসভা, এবং গণমুক্তি ফৌজ ও সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিনিধিদের পুর্ণাঙ্গ অধিবেশনে অংশ নিয়েছেন। এ ছাড়া,  বিশ জনেরও বেশি প্রতিনিধির সঙ্গে চীনা জাতির অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট চেতনা, গ্রামীণ পুনরুত্থান কৌশল এবং সামাজিক নিরাপত্তার গুণগত মান সম্পন্ন উন্নয়ন বেগবান করা নিয়ে মতবিনিময় করেছেন সি চিন পিং। আজকের অনুষ্ঠানে আমরা চীনা প্রেসিডেন্টের দুই অধিবেশনে গুরুত্বপূর্ণ কর্মতত্পরতাগুলো নিয়ে আলাপ করবো।

 

গত ৫ মার্চ ত্রয়োদশ জাতীয় গণকংগ্রেসের পঞ্চম অধিবেশনে ইনার মঙ্গোলীয় প্রতিনিধি দলের পর্যালোচনা সভায় সি চিন পিং বলেছেন, চীনা জাতির অভিন্ন স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট কমিউনিটি গঠনের চেতনা সুসংহত করা প্রয়োজন। এ জন্য বাহ্যিক কাজগুলো করার পাশাপাশি ব্যাপক পরিমানে বাইরের কাজও করতে হবে। চীনা জাতির অভিন্ন চেতনামূলক গৃহ নির্মাণ করা এবং বিভিন্ন জাতির যোগাযোগ, বিনিময় ও  সংমিশ্রণ প্রমোট করতে হবে। সবকাজের পুরোপুরি বাস্তবায়ন  করতে হবে।

 

 

অপ্রত্যাশিত দুর্ঘটনার ব্যাপারে সচেতনতা সম্পর্কে সি চিন পিং বলেন, ইনার মঙ্গোলিয়া সীমান্ত এলাকায় অবস্থিত।  জাতিগত ঐক্য ও সীমান্ত নিরাপত্তা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে অঞ্চলটির। অপ্রত্যাশিত ঘটনার ব্যাপারে সচেতন থাকতে এবং কৌশলগত চেতনার উন্নয়ন করতে হবে। যাতে জাতিগত বিভিন্ন ঝুঁকি প্রতিরোধ করা এবং দেশের উত্তর সীমান্তের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা রক্ষা যায়।

 

কার্বন নিঃসরণ সম্পর্কে সি চিন পিং বলেন, দুটি কার্বন নিরসনের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন করতে গেলে রাষ্ট্রীয় অবস্থার স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি এবং তা ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করতে হবে। বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তা বাস্তবায়ন করা যাবে না।

 

 গত ৬ মার্চ খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ে জাতীয় রাজনৈতিক পরামর্শ পরিষদের পঞ্চম অধিবেশনে অংশগ্রহণকারী কৃষি, সমাজ কল্যাণ ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতের প্রতিনিধিদের যৌথ এক দলীয় পর্যালোচনায় সি চিন পিং বলেন, খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়ে কোনো অসাবধানতা চলবে না। এটি ভাবলে চলবে না যে শিল্পায়নে প্রবেশ করা হয়েছে, তাই খাদ্যের বিষয়টি আর গুরুত্বপূর্ণ নয়। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর আমাদের খাদ্যের জন্য নির্ভর করা চলবে না। খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টি সবসময় মনে রাখতে হবে। এ বিষয়ে বরাবরই দেশের উত্পাদনের পরিমাণ উন্নত করা এবং উপযোগী পরিমাণে রপ্তানি করা এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে খাদ্য উত্পাদন বাড়ানোর কৌশল বাস্তবায়ন করতে হবে।

 

আবাদি জমি রক্ষার বিষয়ে সি  চিন পিং বলেন, বিভিন্ন স্তরের সিপিসি কমিটি ও সরকারকে আবাদি জমি রক্ষার দায়িত্ব পালন করতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকার সে সব সংস্থার ওপর আবাদি জমি রক্ষার ক্ষেত্রে তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব দিয়েছে, তাদের সেই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে। স্থানীয় সরকার ও সিপিসির কমিটিকে এ ক্ষেত্রে কঠোর পরীক্ষা দিতে হবে, যাতে ১২ কোটি হেক্টর আবাদি জমি নিশ্চিত করা যায়।

খাদ্য নিরাপত্তা সম্পর্কে তিনি বলেন, খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তার মানে জনগণের আরও সুন্দর জীবনের চাহিদার কথা মাথায় রেখে খাদ্যের কাঠামোগত পরিবর্তনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। খাদ্যশস্য সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি মাংস, সবজি ফলমূল ও মত্স্যপণ্যসহ  সবধরণের খাদ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করা প্রয়োজন, তাতে কোনো ধরণের অভাব হলে চলবে না।

 


 

জনগণের দুর্ভোগ মোকাবিলা সম্পর্কে তিনি বলেন, মহামারি ও দুর্যোগের কারণে দুর্ভোগে পড়া লোকদের সাহায্য জোরদার করা প্রয়োজন। প্রতিবন্ধীদের পুনর্বাসন, শিক্ষাদান ও কর্মসংস্থানসহ নানা কাজ নিশ্চিত করতে হবে। মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্তদের যত্ন নিতে হবে। নারী-শিশু, বুড়ো ও প্রতিবন্ধীদের নির্যাতনের যে কোনো অপরাধী তত্পরতা দমন করতে হবে।

 

গত ৭ মার্চ ত্রয়োদশ জাতীয় গণকংগ্রেসের পঞ্চম অধিবেশনের গণমুক্তি ফৌজ ও সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিনিধিদের পুর্ণাঙ্গ অধিবেশনে সি চিন পিং নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা সম্পর্কে বলেন, পুরো বাহিনীর উচিত যুদ্ধের প্রস্তুতি জোরদার করা। স্থানীয় অঞ্চলে সামাজিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় সহযোগিতা করা এবং নানা আকম্মিক দুর্ঘটনা মোকাবিলার পাশপাশি দেশের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা রক্ষায় প্রস্তুত থাকা প্রয়োজন।