চীন: সমৃদ্ধি ও উদ্ভাবনের উদাহরণ হলো যেভাবে
2022-03-11 16:06:27

ঢাকা, মার্চ ১০: উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা অর্জনের মাধ্যমে উচ্চ-মানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে চীন। এই প্রবৃদ্ধির পেছনে অন্যতম অবদান প্রযুক্তিগত গবেষণা। এরইমধ্যে উদ্ভাবনী সক্ষমতাকে আরো বহুগুণ বাড়াতে বিপুল অঙ্কের তহবিলও গঠন করেছে বেইজিং। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আর সেরা উদ্ভাবনে বিশ্বে এক উদাহরণ এখন চীন।

 

গত কয়েক বছরে চীনের উদ্ভাবনী সক্ষমতা অনেক বেড়েছে। অব্যাহত উন্নয়ন কার্যক্রমে এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। এরই মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত গবেষণায় জোর দিয়েছে চীন। ফলে এসবখাতে এসেছে স্বনির্ভরতা।

ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি অর্গানাইজেশন-ডব্লিউআইপিও এর প্রকাশিত সবশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রযুক্তিখাতে ২০২১ সালে ৬৯ হাজার ৫৪০টি বিষয়ের পেটেন্ট আবেদনের তালিকায় শীর্ষে আছে চীন। এ তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে এ সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার বেশি এবং জাপানের তুলনায় ২০ হাজার বেশি। আর্থিকখাতকে চাঙ্গা করতে প্রযুক্তি অনেক বড় ভূমিকা পালন করছে বলে মনে করেন WIPO এর একজন কর্মকর্তা লিউ হুয়া।

লিউ হুয়া, WIPO কর্মকর্তা

তিনি বলছিলেন, “এটা বলতে কোনো দ্বিধা নেই যে, উদ্ভাবনীতে চীন বিশ্বব্যাপী মাইলফলক সাফল্য অর্জন করেছে। এর প্রভাবে অর্থনীতিতে বড় ধরণের উত্থান ঘটেছে। বর্ধিত উদ্ভাবন ক্ষমতা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে চালিত করছে।” 

আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় যথেষ্ট উন্নতিই শুধু নয় বরং উদ্ভাবনী কৌশল ব্যবহার করে বহু মাত্রিক ও দ্রুত গতির নেটওয়ার্ক তৈরি করছে চীন। যার আওতায় আছে পুরো দেশ। এরই মধ্যে বেইজিং, সাংহাই, কুয়াংতংয়ে তিনটি প্রধান আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। সারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাড়ানো হয়েছে উৎপাদন ও সেবার পরিধি। 

এদিকে, গবেষণা ও উদ্ভাবনে গতি আনতে বিপুল পরিমাণ অর্থের তহবিল গঠন করেছে চীন। পরিসংখ্যান বলছে, ২০২১ সালে চীনের জাতীয় গবেষণা ও উন্নয়ন ব্যয় ২০২০ সালের তুলনায় বেড়ে হয়েছে প্রায় ১৫ শতাংশ। এর পরিমাণ ২ হাজার ৭৮৬ বিলিয়ন ইউয়ান বা ৪৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশেষ করে দেশটিতে মৌলিক গবেষণা খাতের ব্যয় ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ শতাংশের বেশি।  

মহাকাশ অনুসন্ধান থেকে শুরু করে পারমাণবিক পদার্থবিদ্যা, কোয়ান্টাম বিজ্ঞান, জীব প্রকৌশল ও অন্যান্য ক্ষেত্রে চীন অর্জন করেচে যুগান্তকারী সাফল্য। আর এসবই প্রভাব ফেলেছে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে।

WIPO এর প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, আগের বছরের তুলনায় ২০২১ সালে উচ্চ প্রযুক্তির উৎপাদনখাতে মূল্য সংযোজন করেছে প্রায় ১৮ দশমিক ২ শতাংশ। ফলে এ খাতে মুনাফা হয়েছে ৪৮ শতাংশ বেশি। পরিসংখ্যানে দেখানো হয়, দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে ৬০ শতাংশের বেশি অবদানে রেখেছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিখাত। এই উন্নয়ন চীনের উন্নয়নে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।  

প্রতিবেদন: রওজায়ে জাবিদা ঐশী

সম্পাদনা: সাজিদ রাজু