মার্চ ১০: সম্প্রতি রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, সামরিক অভিযানে রাশিয়া আবিষ্কার করছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে ইউক্রেন সামরিক জৈব কর্মসূচি চালিয়ে আসছিল। গত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিকে ইউক্রেনের মার্কিন দূতাবাস তাদের ওয়েবসাইটে মার্কিন জৈব ল্যাব-সংক্রান্ত দলিল জরুরিভাবে মুছে দিয়েছে। তাই এ নিয়ে মানুষের মনে সন্দেহ জোরদার হয়েছে। অনেকেই জানতে চান, যুক্তরাষ্ট্র আসলে কোন বিষয়ে ভয় পাচ্ছে? ইউক্রেনসহ অনেক দেশে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েক শ’ জৈব ল্যাব রয়েছে। তারা এসব নিয়ে কেন লুকোচুরি করছে? এবং তারা এসব ল্যাবে কি লুকিয়ে রেখেছে?
যুক্তরাষ্ট্রের নিজের প্রকাশিত উপাত্ত মতে, ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্রের ২৬টি জৈব ল্যাব রয়েছে। এসব ল্যাবে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে যুক্তরাষ্ট্র। রুশ সংবাদ অনুসারে, রাশিয়া ইউক্রেনে প্রবেশের পর ইউক্রেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সব জৈব ল্যাবকে বিপদজনক বস্তু ধ্বংস করার নির্দেশ দিয়েছে। তাতে যুক্তরাষ্ট্রের অপকর্মের প্রমাণ নিহিত রয়েছে।
তবে, ইউক্রেন সংকট তীব্রতর হতে থাকলে তারা এসব আর গোপন করতে পারবেনা। বুলগেরিয়ার এক সাংবাদিক মনে করেন, মুছে ফেলা তথ্যের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সমাজ মার্কিন সরকারকে আরো স্পষ্টভাবে জানতে পারবে। কিছু সংবাদে বলা হয়, ওই ল্যাবে বড় পরিমাণে বিপদজনক ভাইরাস রাখা হতো। যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট দলিল মুছে ফেলার লক্ষ্য হলো সংশ্লিষ্ট তথ্যকে রাশিয়ার নাগালের বাইরে রাখা।
তথ্যমাধ্যমের খবর অনুসারে, বহু বছর ধরে বিশ্বের ৩০টিরও বেশি দেশে যুক্তরাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণ করেছে ৩৩৬টি জৈব ল্যাব। আরো বড় ব্যাপার হচ্ছে, এসব ল্যাবের আশেপাশে নানা সময় বিরল কিছু সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব হয়েছে।
ইউক্রেন থেকে কিছু উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। ২০১৬ সালে খারকিভ শহরে এইচ ওয়ান এন ওয়ান ফ্লু দেখা দেয়। তাতে ২০ জনেরও বেশি ইউক্রেনীয় সেনা মারা গেছেন এবং ২০০ জনেরও বেশি হাসপাতালে চিকিসতা নেন। রাশিয়ার প্রধান মহামারি প্রতিরোধ চিকিতসক আনা পপোভা জানান, মধ্য এশিয়া অঞ্চলে নতুন মহামারির প্রাদুর্ভাবের এলাকাসমূহ মার্কিন জৈব ল্যাবের আশেপাশে অবস্থিত।
এসব সংক্রামক রোগের যুক্তরাষ্ট্রের চালানো জৈব সামরিক কার্যক্রমের সাথে সম্পর্ক রয়েছে কিনা? তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। যুক্তরাষ্ট্র সংশ্লিষ্ট তথ্য কেন মুছে দিয়েছে? এবং তাদের আসল ভয় কি? যুক্তরাষ্ট্রকে এসব প্রশ্নের উত্তর বিশ্ববাসীকে দিতে হবে।
সত্যকে আসলে গোপন করা যায় না। বহু প্রমাণ থেকে এটি স্পষ্ট যে, যুক্তরাষ্ট্রের এহেন আচরণ জৈবাস্ত্র নিষেধ চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। ইউক্রেনের পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে। প্রত্যেক ল্যাব একটি টাইম বোমার মতো। ইউক্রেন ও তার আশেপাশের এলাকার জনগণের সুস্থতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের উচিত দ্রুত সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রকাশ করা।
(আকাশ/এনাম/রুবি)