সাজিদ রাজু, সিএমজি বাংলা ডেস্ক: ভূ-পৃষ্ঠ পর্যবেক্ষণে নতুন স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে চীন। সম্প্রতি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় চীনের চিউকুয়ান উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে মহাকাশে পাঠানো হয় এ স্যাটেলাইটটি। চীনা কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রতি ইঞ্চি জমির পরিমাপ, গঠন ও বৈশিষ্ট্যসহ সব তথ্য দেবে এ স্যাটেলাইট। জানাবে যে কোন অঞ্চলের দুর্যোগ ও দুর্বিপাকের খবরও।
চলতি মাসের শুরুর এ সকালটা ছিলো সত্যিই আলাদা। বেশ খুশির আবেশ ছড়িয়ে পড়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় চীনের চিউকুয়ান উৎক্ষেপণ কেন্দ্র। এখান থেকেই মহাকাশের পথে পাড়ি দেয় এল-এসএআর জিরো ওয়ান বি স্যাটেলাইট।
রকেট লংমার্চ-ফোর সি’তে করে যাত্রা শুরু করে এ স্যাটেলাইট। এটি কেবল একটি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ নয় বরং ভূ-পৃষ্ঠের প্রতিটি কোনের সুনির্দিষ্ট তথ্য ও চিত্র জানার আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবে রূপ দিতেই এর যাত্রা।
স্যাটেলাইটটি মূলত মহাকাশ থেকে ছড়িয়ে দেবে তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ। যা ছড়িয়ে পড়বে ভূপৃষ্ঠের সর্বত্র। তুলে ধরবে প্রতি ইঞ্চি জমির পরিমাপ, গঠন ও বৈশিষ্ট্যসহ সব তথ্য। এর পাশাপাশি যে কোন অঞ্চলে ঘটে যাওয়া ভূমিধস ও ভূমিকম্পনসহ যে কোন দুর্যোগ ও দুর্বিপাকের খবরও দেবে এই স্যাটেলাইট। জানাবে ভৌগলিক সীমারেখার খুটিনাটি তথ্য।
ভূ-পৃষ্ঠ সম্পর্কিত স্যাটেলাইট পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের প্রকৌশলী থাং সিনমিং। তিনি বলেন, স্যাটেলাইটটি অসাধারণ কিছু বৈশিষ্ট্য সম্বলিত।
থাং সিনমিং, প্রকৌশলী, ভূ-পৃষ্ঠ সম্পর্কিত স্যাটেলাইট পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র
“আমাদের দুটি স্যাটেলাইটের অসাধারণ কিছু বৈশিষ্ট্য হলো, ঘন মেঘ কিংবা ভারি বৃষ্টি হলেও সূক্ষ্মভাবে ভূ-পৃষ্ঠ পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম। এটি ঘন মেঘের ভেতরেও ঢুকতে পারে, আবার ভারি বৃষ্টি থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে চলতে পারে। এ কারণেই আরো প্রবলভাবে ভূ-পৃষ্ঠের সব তথ্য বিস্তৃতভাবে সংগ্রহ করতে পারে।”
এই স্যাটেলাইটটি মূলত দুটি স্যাটেলাইটের সমন্বয়। প্রথমটি পাঠানো হয়েছে গেল ২৬ জানুয়ারি। সম্প্রতি উৎক্ষেপণ করা স্যাটেলাইটটি যুক্ত হবে আগেরটির সঙ্গে।
লি তাও, উপ-পরিচালক, স্যাটেলাইট পরিকল্পনা বিভাগ, প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রণালয়
“এই দুটি স্যাটেলাইট কাজ শুরু করার পর আমাদের তথ্য সংগ্রহ ও পর্যবেক্ষণ সক্ষমতা আরো বাড়বে। আগে যেখানে তথ্য সংগ্রহের আগে প্রতি ১২ দিন অন্তর ১২ মিটার করে ভূমি পর্যবেক্ষণ করতে পারতাম, এখন প্রতি ৪ দিন অন্তর ৩ মিটার ভূমিও সূক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব। তথ্য সংগ্রহের সময়ের দিক দিয়ে আমরা ৩গুণ বেশি সক্ষমতা অর্জন করেছি।”
বনভূমির পরিমাণ ও দুর্যোগ মোকাবিলায়ও তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবে এই দুই স্যাটেলাইট। দুর্যোগ মোকাবিলায় বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে বিপুল অর্থ খরচ করে তথ্য কিনতে হয় চীনকে। চীনের মহাকাশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি করপোরেশন বলছে, নিজস্ব প্রযুক্তি ও জনশক্তি ব্যবহার করে তৈরি এই দুই স্যাটেলাইট কাজ শুরু করলে বিদেশ নির্ভরতা কেবল নয় কমবে দেশের বিপুল এক খরচের ভার।
তথ্য ও ছবি: সিসিটিভি প্লাস