বাংলাদেশের বীমা খাতের পথচলার ইতিবৃত্ত
2022-03-04 16:43:24

আফরিন মীম, ঢাকা: দীর্ঘ দিনের পথচলার পরও শক্ত ভিত্তি পায়নি বাংলাদেশের বীমা খাত। অথচ অগ্রসরমান অর্থনীতিতে এ খাতের অংশগ্রহণ অপরিহার্য। বীমা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সংস্কার ও পুনর্গঠন প্রয়োজন অনিবার্যভাবে।

‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার, বীমা হোক সবার’ প্রতিপাদ্য নিয়ে বাংলাদেশে তৃতীয়বারের মত পালিত হলো ‘জাতীয় বীমা দিবস’। এ দিবস উদযাপনের ভাবনা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তৎকালীন পাকিস্তানের আলফা ইন্স্যুরেন্সে যোগদানকে স্মরণীয় করা। পরে সরকারও এর অনুমোদন দেয়। ১৯৬০ সালের ১ লা মার্চ বীমা খাতে যোগ দেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি।

 

সাধারণত দুই ধরনের বীমা হয় বাংলাদেশে; জীবন বীমা ও সাধারণ বীমা। এরমধ্যে জীবন বীমা হচ্ছে সকল শ্রেণি পেশার মানুষের জীবনের ঝুঁকি গ্রহণের মাধ্যমে তাদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এ বীমায় একজন ব্যক্তি নিজের বা পরিবারের কোন সদস্যের জীবন বীমা করাতে পারেন। বীমাকারী ব্যক্তির মৃত্যুর পর পরিবার বা নির্ধারিত ব্যক্তিকে বীমাকৃত অর্থের পুরোটাই প্রদান করার বিধান আছে।

অন্যদিকে বাড়ি, গাড়িসহ নানা সম্পদের সুরক্ষায় করা হয় সাধারণ বীমা। বিশেষ করে আগুন, চুরি, বন্যা, ঝড়, দুর্ঘটনা, ভূমিকম্প ও অন্যান্য দুর্ঘটনা থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র রক্ষার চুক্তি সম্পাদিত হয়।

বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য মতে, সরকারি-বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক মিলিয়ে মোট ৩৬টি জীবন বীমা কোম্পানি তাদের কার্যক্রম চালু করেছে। এর মধ্যে বেসরকারি ৩৩টি, বিদেশি ২টি, রাষ্ট্রায়ত্ত ১টি জীবন বীমা কোম্পানি আছে।

অন্যদিকে মোট সাধারণ বীমার সংখ্যা ৪৭টি। এরমধ্যে বেসরকারি ৪৬টি, রাষ্ট্রায়ত্ত সাধারণ বীমার সংখ্যা মাত্র ১টি।

২০১৯ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু বীমা প্রিমিয়াম ৯ ডলার এবং জিডিপির তুলনায় বীমা খাতের অবদান শূন্য দশমিক ৪৯ শতাংশ। বেসরকারি জীবন বীমা ও সাধারণ বীমার কোম্পানির তিন বছরের চিত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৮ সালে জীবন বীমায় প্রিমিয়াম আয় ছিল ৮৪৮৫, সাধারণ বীমায় প্রিমিয়াম আয় ছিল ৩০৩৪। ২০১৯ সালে জীবন বীমায় প্রিমিয়াম আয় ছিল ৯০৪৬, সাধারণ বীমায় প্রিমিয়াম আয় ছিল ৩৪১১। ২০২০ সালে জীবন বীমায় প্রিমিয়াম আয় ছিল ৮৯২৬, সাধারণ বীমায় প্রিমিয়াম আয় ছিল ৩৩৯১।

বীমা আর পুনঃবীমা ব্যবসাই হল সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের মূল স্তম্ভ। মোট প্রিমিয়াম আয়, বিস্তৃত অফিস নেটওয়ার্ক এবং দক্ষ জনশক্তির কারণে সাধারণ বীমা কর্পোরেশন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় নন-লাইফ বীমা দায়গ্রহণকারী প্রাতিষ্ঠান। এছাড়াও সাধারণ বীমা কর্পোরেশন বাংলাদেশে বীমা ব্যবসা পরিচালনাকারী ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানসমূহের ঝুঁকির পুনঃবীমা করে থাকে।

সম্পাদনা: সাজিদ রাজু