সার্বিক ও কঠোরভাবে সিপিসি পরিচালনা ও দুই অধিবেশন
2022-03-03 16:10:33

মার্চ ৩: দেশ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে চাইলে আগে ক্ষমতাসীন পার্টিকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে হবে এবং পার্টিকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে হলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ‘সার্বিক ও কঠোরভাবে পার্টি পরিচালনা’ হচ্ছে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সি চিন পিংয়ের কাছে এবারের দুই অধিবেশনের মূল কথা। ২০১৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত সি চিন পিং ‘দুই অধিবেশন’ চলাকালে পৃথকভাবে ৫০ বার বিভিন্ন গ্রুপের সঙ্গে আলোচনায় যোগ দেন। আলোচনায় তিনি রাজনৈতিক পরিবেশ উন্নয়ন, নেতাদের দক্ষতা বৃদ্ধি, দুর্নীতিদমন, ইত্যাদি বিষয়ের ওপর অধিক গুরুত্ব দেন।

একটি সুষ্ঠু ও স্বাস্থ্যকর রাজনৈতিক পরিবেশ গঠন করা হচ্ছে সার্বিক ও কঠোরভাবে পার্টি পরিচালনার প্রধান লক্ষ্য। সিপিসির অষ্টাদশ জাতীয় কংগ্রেসের পর থেকেই সি চিন পিং বহু বার জোর দিয়ে বলেছেন, পার্টির উন্নয়ন করতে চাইলে বিভিন্ন দিকের কাজ করতে হবে এবং একটি সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি করা খুব জরুরি।

২০১৫ সালের দুই অধিবেশন চলাকালে তিনি চিয়াংসি প্রদেশের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনায় বলেন, দক্ষতা উন্নয়নের জন্য দুর্নীতি দূর করা এবং একটি পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি করা উচিত। 

তিনি বলেন, “আমি বলেছিলাম, প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য সবুজ পাহাড় ও নীল নদী দরকার। রাজনৈতিক পরিবেশেও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হওয়া দরকার। দুর্নীতি কঠোরভাবে দমন করা হলো সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করার মূল পূর্বশর্ত। পার্টির মধ্যে দুর্নীতি থাকলে রাজনৈতিক পরিবেশ নষ্ট হবে। দুর্নীতিদমন কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ পেলে তা তদন্ত করতে হবে এবং দোষী প্রমাণিত হলে শাস্তি দিতে হবে। দুর্নীতি নির্মূল করতে হবে, অন্যায়-অপরাধ ঝেটিয়ে দূর করতে হবে।”

২০১৭ সালের দুই অধিবেশনে লিয়াংনিংয়ের প্রতিনিধিদলের সদস্যদের ঘুষ দেওয়ার বিষয়টি অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। লিয়াওনিং প্রতিনিধিদলের ৯৮ জন সদস্যের মধ্যে ৪০ জন প্রথম বারের মতো দুই অধিবেশনে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পান। ঘুষ দিয়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের পরিবর্তে তাদেরকে নির্বাচিত করা হয়। নতুন নির্বাচিতদের মধ্যে অধিকাংশ ছিলেন কারখানার শ্রমিক, ডাক্তার ও শিক্ষক। নতুন প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে সি চিন পিং জোর দিয়ে বলেন, একটি অঞ্চলে সুপ্রশাসন ও সুশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে চাইলে সেখানকার সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। 

তিনি বলেন, “রাজনৈতিক পরিবেশ মন্দ হলে মানুষের মনে লোভ বাড়ে এবং লোভের কারণে তারা মুখে মুখে হ্যাঁ হ্যাঁ বলেন, কিন্তু পেছনে অমান্য করেন। তা ছাড়া, ছোট ছোট চক্র সৃষ্টি, পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ পার্টির নৈতিক ভিত্তিকে ধ্বংস করে দিতে পারে। ক্যাডারদের সার্বিক মান উন্নত করতে হবে। জনগণ ও পার্টির জন্য আন্তরিক ও পরিচ্ছন্ন মানুষ বেছে নিতে হবে। এ ধরনের মানুষের মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিবেশও সুষ্ঠু ও পরিচ্ছন্ন হয়ে উঠবে।”

রাজনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের মধ্যে সম্পর্কের ওপরও সি চিন পিং খুব গুরুত্বারোপ করেন। এ ক্ষেত্রে কঠোর নিয়মকানুন মানা না-হলে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ব্যক্তিগত লাভ অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি হয়। ২০১৬ সালে দুই অধিবেশন চালাকালে তিনি শিল্প ও বাণিজ্য ক্ষেত্রের প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনার সময় বলেন, রাজনীতি ও বাণিজ্যের মধ্যে ‘ঘনিষ্ঠ’ ও ‘পরিচ্ছন্ন’ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে হবে। 

তিনি বলেন, “ক্যাডারদের জন্য ‘আন্তরিকতা’ মানে আন্তরিকভাবে বিভিন্ন শিল্প ও বাণিজ্য সংস্থার সাথে যোগাযোগ করা এবং তাদের সমস্যা সমাধানে সাহায্য করা; ‘পরিচ্ছন্নতা’ মানে এ সম্পর্ককে পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন রাখা। এতে ক্ষমতা ও টাকার বিনিময় নিষিদ্ধ। শিল্পপতিদের উচিত সত্য কথা বলা এবং আসল অবস্থা তুলে ধরা। তাদের উচিত আইনবিধি অনুযায়ী শিল্পপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা।” (ইয়াং/আলিম/ছাই)