সাজিদ রাজু, ফেব্রুয়ারি ১৭: কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্য পূরণে নবায়নযোগ্য জ্বালানী উৎপাদনে ব্যাপক জোর দিয়েছে চীন। চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে নেওয়া হচ্ছে সৌরবিদ্যুৎ, জলবিদ্যুৎ ও বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনের নানা প্রকল্প। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বসন্ত উৎসবের পর নতুন গতি পেয়েছে প্রকল্পগুলোতে।
যতোদূর চোখ যায়, বিস্তীর্ণ প্রান্তর জুড়ে বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনের টার্বাইন। চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চলে চোখে পড়বে নবায়নযোগ্য জ্বালানী উৎপাদনের এমন সব প্রকল্প। পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর জীবাস্ম জ্বালানী থেকে সরে এসে পরিবেশবান্ধব ও নবায়নযোগ্য জ্বালানী উৎপাদনের যে জোর প্রচেষ্টা তারই অংশ এসব প্রকল্প।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় চীনের কুনমিং-এও এমন প্রকল্প হাতে নিয়েছে চীন। স্থাপন করা হয়েছে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। চীনের হাউনেং ল্যানচ্যাং রিভার হাইড্রোপাওয়ার ইনকরপোরেশনের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক লু চি। তিনি জানান, ১৪তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার শেষ দিকে অর্থাৎ ২০২৫ সাল নাগাদ এই প্রকল্পের মাধ্যমে অন্তত ৩৫ মিলিয়ন কিলোয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে সক্ষম হবে তারা।
লু চি, পরিচালক, হাউনেং ল্যানচ্যাং রিভার হাইড্রোপাওয়ার ইনকরপোরেশন
“জলবিদ্যুৎ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানী উৎপাদনের ক্ষেত্রে সমন্বিত উন্নয়ন ব্যবস্থা দেশের অন্যান্য বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থাকে আরো গতিশীল করতে পারে। বিশেষ করে সৌর বিদ্যুৎ ও জলবিদ্যুতের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে আরো বেশি বিদ্যুৎ সঞ্চালন করা সম্ভব হবে।”
চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চলের নিংশিয়া স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে চোখে পড়বে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের এক মহাযজ্ঞ। পাহাড়ি অ্হচল থেকে শুরু করে মরুভূমি, ভূমির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে স্থাপন করা হচ্ছে সারি সারি এসব সৌর প্যানেল। এসব কাজের সঙ্গে যুক্ত আছেন হাজারো চীনা কর্মী। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব প্রকল্পের কাজ শেষ হলে বিপ্লব ঘটে যাবে চীনের বিদ্যুৎখাতে। চায়না সাউদার্ন পাওয়ার গ্রিডের কৌশলগত নীতি বিভাগের মহাব্যবস্থাপক ছেং ওয়েইশেং বলছিলেন, এ খাতে চীন সরকারের বিনিয়োগ পরিকল্পনার কথা।
ছেং ওয়েইশেং, মহাব্যবস্থাপক, চায়না সাউদার্ন পাওয়ার গ্রিড
“নতুন করে আরো বেশ কিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এসব প্রকল্পের বেশিরভাগই বায়ু বিদ্যুৎ ও সৌরবিদ্যুৎ। এই প্রকল্পগুলোর কাজ তরান্বিত করতে আরো অন্তত ৬২০ বিলিয়ন ইউয়ান বিনিয়োগ করা হবে। এর মাধ্যমে ১১৫ মিলিয়ন কিলোওয়াট নতুন বিদ্যুৎ মূল গ্রিডে যুক্ত হবে।”
নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে চীন বেছে নিয়েছে মরুভূমি অঞ্চল। বিশেষ করে চীনের বিশাল গোবি মরুভূমিসহ অন্যান্য অনাবাদি ভূমিকে বাছাই করা করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুরো মাত্রায় চালু হলে বেইজিং-তিয়ানচিন-হেবেই অঞ্চলের এসব প্রকল্প থেকে বছরে পাওয়া যাবে ৫ বিলিয়ন কিলোওয়াট নবায়নযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ।