গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং জাতীয় স্টেডিয়াম তথা বার্ডস নেস্টে ২৪তম বেইজিং শীত্কালীন অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে গেমসের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এর মাধ্যমে এই স্টেডিয়ামে দুই অলিম্পিকের স্বপ্ন পূরণ হলো।
২০১৫ সালের নভেম্বরে সি চিন পিং সবুজ অলিম্পিক, সমন্বয়িত অলিম্পিক, উন্মুক্ত অলিম্পিক ও শুদ্ধ অলিম্পিক আয়োজনের ধারণা উত্থাপন করেন। বেইজিং শীত্কালীন অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এসব ধারণার সঠিক প্রতিফলন।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির ১৩৯তম পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে এক ভিডিও ভাষণে সি চিন পিং বলেন, ‘বেইজিং শীত্কালীন অলিম্পিক গেমসের প্রস্তুতিকালে ৩০ কোটি মানুষের বরফ ও তুষার ক্রীড়ায় অংশগ্রহণ ত্বরান্বিত করা হয়েছে। পাশাপাশি, আঞ্চলিক উন্নয়ন, পরিবেশগত নির্মাণ, সবুজ সৃজনশীলতা ও গণজীবিকার উন্নয়নও বেগবান করেছে চীন, যা বিশ্বের বরফ ও তুষার ক্রীড়া উন্নয়নে বিশাল সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। বেইজিং শীত্কালীন অলিম্পিক গেমসকে নতুন সূচনা হিসেবে বিশ্বের বরফ ও তুষার ক্রীড়ার নতুন অধ্যায় সৃষ্টি করতে চীন নিজের বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে জানান তিনি।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির প্রেসিডেন্ট থমাস বাখ অলিম্পিকে অংশগ্রহণকারী ক্রীড়াবিদদের উদ্দেশে বলেন, শুধুমাত্র একসাথে কাজ করার মাধ্যমে আমরা দ্রুত সামনে এগিয়ে যেতে পারি, বড় লক্ষ্য অর্জন করতে পারি, এবং শক্তিশালী হতে পারি। তিনি বলেন, বেইজিং শীতকালীন অলিম্পিক গেমস অবশ্যই বিশ্বে ‘ঐক্যের শক্তি’ যোগাবে।
এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত যা বিশ্ব দেখছে এবং যার জন্য বিশ্ববাসী অপেক্ষা করছে। অলিম্পিকের নীতিবাক্যে ‘আরও ঐক্যবদ্ধ’ টার্মটি যুক্ত করার পর প্রথম শীতকালীন অলিম্পিক হিসেবে বেইজিং শীতকালীন অলিম্পিক গেমস ৯০টি দেশ ও অঞ্চলের প্রায় ৩ হাজার ক্রীড়াবিদকে আকর্ষণ করেছে। এবারের গেমসের ইভেন্ট-পদকের সংখ্যাও হবে আগের যে-কোনো শীতকালীন অলিম্পিক গেমসের তুলনায় বেশি। নিঃসন্দেহে, বেইজিং শীতকালীন অলিম্পিক শত বছরের ইতিহাসের প্রাচীন অলিম্পিক গেমসের গৌরব ও স্বপ্নকে আলোকিত করবে এবং বিশ্বকে শান্তি, বন্ধুত্ব ও সংহতির চেতনায় একত্রিত করবে।
২০০৮ সালে বেইজিং গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক আয়োজন করেছিল। আর এখন করছে শীতকালীন অলিম্পিক গেমস। এর মাধ্যমে বেইজিং উঠে গেছে এক অনন্য উচ্চতায়। এখন বেইজিংকে ডাকা হচ্ছে ‘ডাবল অলিম্পিক সিটি’ বলে। বলা বাহুল্য, এই মর্যাদা এখন পর্যন্ত কেবল বেইজিংই পেয়েছে।
বেইজিং শীতকালীন অলিম্পিক গেমস চীনে পুনর্মিলনের প্রতীক সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উত্সব বসন্ত উত্সবের সময়ে আয়োজিত হচ্ছে। বিদেশি ক্রীড়াবিদরা চীনা কর্মীদের কাছ থেকে চীনের বসন্ত উত্সবের রীতিনীতি বোঝার সুযোগ পাচ্ছেন। তাঁরা পারিবারিক পুনর্মিলন ও জাতীয় ঐক্যের জন্য চীনা জনগণের সাধনা সম্পর্কে আরও স্পষ্ট ধারণা পাচ্ছেন। চীনের অলিম্পিক গেমস আয়োজনের উদ্দেশ্য কখনও পরিবর্তন হয়নি। আর তা হচ্ছে, বিভিন্ন অঞ্চল, সংস্কৃতি, জাতীয়তা ও রঙের লোকদের একত্রিত করা, বিশ্বে একতা এবং শান্তি ও আশা নিয়ে আসে।
(রুবি/এনাম)