দেহঘড়ি পর্ব-৫৫
2022-02-04 18:19:07

‘দেহঘড়ি’র এ পর্বে থাকছে স্বাস্থ্যখাতের একটি প্রতিবেদন, স্বাস্থ্য বুলেটিন, সাক্ষাৎকার-ভিত্তিক আয়োজন ‘আপনার ডাক্তার’, এবং প্রাকৃতিকভাবে রোগপ্রতিরোধ ও রোগমুক্তি নিয়ে আলোচনা ‘ভাল থাকার আছে উপায়’।

#প্রতিবেদন

বিশ্ব ক্যান্সার দিবস আজ: ঝুঁকি কমাতে সচেতনতা বৃদ্ধির তাগিদ

মরণব্যাধি ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে বাংলাদেশে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, বিশ্বে প্রতিবছর ক্যান্সারে মৃত্যু হয় ৮২ লাখ মানুষের। বিশেষ করে সাড়ে ১০ কোটি নারী ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। সবচেয়ে আশঙ্কার খবর হলো, এ মরণব্যাধিতে আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশই হচ্ছে বাংলাদেশসহ তৃতীয় বিশ্বের নাগরিক।

দেশে ক্যান্সার সংক্রমণের এমন পরিস্থিতিতে শুক্রবার সারা দেশে পালিত হয়েছে বিশ্ব ক্যান্সার দিবস। দিবসটি উপলক্ষে এবারের প্রতিপাদ্য - ‘আসুন ক্যান্সার সেবায় বৈষম্য দূর করি’।

দিবসটি উদযাপনের উদ্দেশ্য হলো মারাত্মক ও প্রাণঘাতী এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং এই রোগে আক্রান্ত রোগীদের সাহায্য করার জন্য মানুষকে উৎসাহিত করা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্যান্সার একটি বড় রোগ, যার সময়মত চিকিৎসা প্রয়োজন। প্রতিবছর বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে বিপুল সংখ্যক মানুষ এই মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারায়। একইসঙ্গে বাংলাদেশে ক্যান্সার ও এ রোগে মৃত্যুর হার বৃদ্ধির কারণ হিসেবে সচেতনতা ও শিক্ষার অভাব এবং অর্থনৈতিক অবস্থাকে বিবেচনা করেন তারা।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা মনে করেন, নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ক্যান্সারের রোগ তাড়াতাড়ি ধরা পড়ে এবং সেক্ষেত্রে চিকিৎসা সহজ হয়। ক্যান্সারের লক্ষণগুলো নির্ভর করে ক্যান্সারটি কোথায়, এটি কতটা বড় এবং এটি কাছাকাছি কোনো অঙ্গ বা টিস্যুকে কতটা প্রভাবিত করে। ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়লে শরীরের বিভিন্ন স্থানে লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

ক্যান্সার প্রতিরোধে নিয়মিত ব্যায়ামের ওপর গুরুত্ব দেয়া এবং ধূমপান পরিহার করতে হবে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোসহ নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করার উপর তাগিদ দেন স্বাস্থ্যবিদরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সবার আগে ক্যান্সার বিষয়ে জনগনের মাঝে ব্যাপক আকারে সচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন। এটা কী ধরনের রোগ, কী কী কারণে ঝুঁকি বাড়ে এবং প্রতিরোধের জন্য করণীয় কী কী এসব নিয়ে ক্যাম্পেইন চালানোর পরামর্শ দিয়েছেন তারা।  - অভি/রহমান

#বুলেটিন

 ‘জানুয়ারিতে করোনায় মৃতদের ৭৩ শতাংশই টিকা নেননি’

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যারা মারা গেছেন তাদের ৭৩ শতাংশই টিকা নেননি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড নাজমুল ইসলাম। সম্প্রতি করোনা পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য বুলেটিনে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব তথ্য জানান। যারা টিকা নিচ্ছেন না, তাদেরই মৃত্যু বেশি হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৬১ থেকে ৭০ বছর বয়সীদের মধ্যে মৃত্যুহার বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গেল ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সারাদেশে ৯ লাখ ৮৭ হাজার নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্ত হয় ২ লাখ ১৩ হাজারের বেশি মানুষ। নতুন বছরের প্রথম মাসে করোনায় মারা যান ৩২২ জন।

এদিকে করোনাভাইরাসের উপ-ধরণ আরও বেশি সংক্রামক হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন ডা. নাজমুল ইসলাম। ওমিক্রনের নতুন যে ভ্যারিয়েন্ট দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এসেছে, তারও একটি সাব-ভ্যারিয়েন্ট বিশ্বে ৫০টিরও বেশি দেশে শনাক্ত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। রোগীর সংখ্যা কোনোভাবেই যাতে না বাড়ে সে জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাসহ দায়িত্বপূর্ণ আচরণ করার আহ্বান জানান তিনি।

চীনের করোনা টিকা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে কার্যকর

চীনের দুটি বহুল ব্যবহৃত কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন, সিনোভাক এবং সিনোফার্ম করোনাভাইরাসের ডেল্টা রূপের বিরুদ্ধে কার্যকর । বাস্তব বিশ্বের তথ্যের উপর ভিত্তি করে চীনের একটি গবেষণায় এই তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। দুটি ভ্যাকসিন ডেল্টা সংক্রমণের বিরুদ্ধে ৫২  শতাংশ এবং লক্ষণীয় রোগের জন্য ৬০ শতাংশ কার্যকর। গেল বছরের মে এবং জুন মাসে দক্ষিণ চীনের কুয়াংতুং প্রদেশে ডেল্টা প্রাদুর্ভাবের সময় ১০০টিরও  বেশি সংক্রমণ এবং তাদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের দশ হাজার জনেরও বেশি বিশ্লেষণের উপর ভিত্তি এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে।

আরও এক কোটি ফাইজারের টিকা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশকে করোনাভাইরাসের আরও এক কোটি ডোজ ফাইজারের টিকা অনুদান দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি ঢাকায় অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস এ তথ্য জানিয়েছে। দূতাবাস জানায়, এই টিকা বাংলাদেশের শিক্ষার্থী এবং যারা এখনও টিকার প্রথম ডোজ পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন, তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া সহজ হবে। এছাড়া ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকতে ফাইজারের বুস্টার ডোজ টিকা নেওয়া যাবে। বাংলাদেশকে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র তিন কোটি ৮০ লাখ টিকা অনুদান দিয়েছে।

## আপনার ডাক্তার

দেহঘড়ির আজকের পর্বে আমরা আলোচনা করেছি ক্যান্সার নিয়ে। বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর অন্যতম কারণ ক্যান্সার। জাতিসংঘের ক্যান্সার গবেষণা প্রতিষ্ঠান – ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার আশঙ্কা করছে, আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ ক্যান্সারে প্রতি বছর বিশ্বে ১ কোটি ৩২ লাখ মানুষ মারা যাবে, যেখানে ২০০৮ সালে এ সংখ্যা ছিল মাত্র অর্ধেক। বাংলাদেশও মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ ক্যান্সার। এদেশে প্রতি বছর যত মানুষের মৃত্যু হয়, তার ১০ শতাংশের কারণ ক্যান্সার। বর্তমানে বাংলাদেশে ১৩ থেকে ১৫ লাখ ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী রয়েছে এবং প্রতি বছর আনুমানিক দেড় লক্ষ মানুষ নতুন করে আক্রান্ত হয়। তবে ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চললেও চিকিৎসা অবকাঠামো, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সংখ্যা এখনও অপ্রতুল। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে আমাদের সাথে যুক্ত হন ডাক্তার নাজিরুম মুবিন। তিনি কাজ করছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যান্সার বিভাগের চিকিৎসক হিসাবে।

 

#ভালো_থাকার_আছে_উপায়

সর্দি-কাশি-ঠাণ্ডা থেকে মুক্তির ঘরোয়া উপায়

## আপনার ডাক্তার

দেহঘড়ির আজকের পর্বে আমরা আলোচনা করেছি ক্যান্সার নিয়ে। বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর অন্যতম কারণ ক্যান্সার। জাতিসংঘের ক্যান্সার গবেষণা প্রতিষ্ঠান – ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার আশঙ্কা করছে, আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ ক্যান্সারে প্রতি বছর বিশ্বে ১ কোটি ৩২ লাখ মানুষ মারা যাবে, যেখানে ২০০৮ সালে এ সংখ্যা ছিল মাত্র অর্ধেক। বাংলাদেশও মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ ক্যান্সার। এদেশে প্রতি বছর যত মানুষের মৃত্যু হয়, তার ১০ শতাংশের কারণ ক্যান্সার। বর্তমানে বাংলাদেশে ১৩ থেকে ১৫ লাখ ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী রয়েছে এবং প্রতি বছর আনুমানিক দেড় লক্ষ মানুষ নতুন করে আক্রান্ত হয়। তবে ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চললেও চিকিৎসা অবকাঠামো, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সংখ্যা এখনও অপ্রতুল। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে আমাদের সাথে যুক্ত হন ডাক্তার নাজিরুম মুবিন। তিনি কাজ করছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যান্সার বিভাগের চিকিৎসক হিসাবে।

 

#ভালো_থাকার_আছে_উপায়

সর্দি-কাশি-ঠাণ্ডা থেকে মুক্তির ঘরোয়া উপায়

শিশু ও বয়স্কদের জন্য সর্দি-কাশির সমস্যা নিয়মিত ব্যাপার। প্রায় সময়ই তাদের কাবু করে ফেলে ঠাণ্ডা লাগা, গলা ব্যথা ইত্যাদি। এ থেকে রেহাই পেতে অনুসরণ করা যায় বেশ কিছু ঘরোয়া্ উপায়। 

ভীষণ কার্যকর আদা চা:

এই চা বিশেষ উপকারে আসতে পারে আপনার। জ্বর-ঠাণ্ডায় মুখের স্বাদ চলে যায়। হারানো সেই স্বাদ ফিরিয়ে আনতে বেশ উপকারী আদা চা। শুধু স্বাদে ফেরানোর কাজেই লাগে তা নয়, সর্দি-কাশি থেকে মুক্তি পেতেও কাজে দেয় আদা চা। আবার নিয়মিত কিছুদিন এই চা পান করলে তা শ্বাসনালি থেকে কফ বের হতে সাহায্য করে। তাই, যারা আদা চা পছন্দ করেন, তাদের জন্য এটি একটি সুখবর বলাই যায়। 

মধু-দারুচিনি-লেবু চা

সাধারণ সর্দি এবং কাশির জন্য ঘরোয়া সমাধানগুলোর একটি হলো লেবু, দারুচিনি ও মধুর মিশ্রণ। কাশি থেকে মুক্তি পাওয়ার ভালো একটি উপায় এটি, আবার বানিয়ে ফেলাও তুলনামূলক সহজ। আধা চামচ মধুতে কয়েক ফোঁটা লেবু এবং অল্প একটু দারুচিনি মিশিয়েই বানিয়ে ফেলা যায় এই সিরাপ।

উপকার দেবে চিকেন স্যুপ

অনেকেরই পরামর্শ থাকে ঠাণ্ডার সময় সর্দি-কাশির থেকে বাঁচতে স্যুপ খেতে। এই স্যুপের মধ্যে চিকেস স্যুপের কথা বিশেষষভাবে উল্লেখযোগ্য। কারণ একে তো চিকেন স্যুপ বেশ সুস্বাদু, তার সঙ্গে সব বয়সের মানুষের জন্য এটা উপকারী। গবেষণায় প্রমাণিত যে, সব্জির সঙ্গে চিকেন স্যুপ দেহের শ্বেত রক্তকণিকা নিউট্রোফিলের গতিবিধি কমিয়ে দিতে ভাল ভূমিকা রাখে, যা আপনার শরীরকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সহায়ক। এছাড়া শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের লক্ষণ কমায় চিকেন স্যুপ।

হলুদ

সব বাঙালির রান্নাঘরে পাওয়া যায় হলুদ। এতে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। সর্দি-কাশির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বেশ ভালো কাজ দেয় এই অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। শীতের রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস গরম দুধে হলুদ মিশিয়ে পান করাটা তাই বেশ কার্যকরী হতে পারে। 

গরম পানির বাষ্প

পানি গরম করে রেখে শ্বাসের মাধ্যমে বাষ্প নিলে বেশ উপকার পাওয়া যায়। সাইনাসের চাপ কমাতেও সাহায্য করতে পারে এটি। পানিতে কয়েক ফোঁটা ইউক্যালিপটাস তেল মিশিয়ে নিলেও বাড়তি উপকার মেলে। -অভি/রহমান

‘দেহঘড়ি’ অনুষ্ঠান সম্পর্কে আপনাদের মতামত ও পরামর্শ জানতে চাই আমরা। আমাদের ফেইসবুক পেইজ facebook.com/CMGbangla অথবা ওয়েবসাইট bengali.cri.cn’র মাধ্যমে জানাতে পারেন আপনাদের মতামত বা পরামর্শ।