ফেব্রুয়ারি ৪: শুধুমাত্র একসাথে কাজ করার মাধ্যমে আমরা দ্রুত সামনে এগিয়ে যেতে পারি, বড় লক্ষ্য অর্জন করতে পারি, এবং শক্তিশালী হতে পারি। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির প্রেসিডেন্ট থমাস বাখ অলিম্পিকে অংশগ্রহণকারী ক্রীড়াবিদদের উদ্দেশে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, বেইজিং শীতকালীন অলিম্পিক গেমস অবশ্যই বিশ্বে ‘ঐক্যের শক্তি’ যোগাবে।
এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত যা বিশ্ব দেখছে এবং যার জন্য বিশ্ববাসী অপেক্ষা করছে। অলিম্পিকের নীতিবাক্যে ‘আরও ঐক্যবদ্ধ’ টার্মটি যুক্ত করার পর প্রথম শীতকালীন অলিম্পিক হিসেবে বেইজিং শীতকালীন অলিম্পিক গেমস ৯০টি দেশ ও অঞ্চলের প্রায় ৩ হাজার ক্রীড়াবিদকে আকর্ষণ করেছে। এবারের গেমসের ইভেন্ট-পদকের সংখ্যাও হবে আগের যে-কোনো শীতকালীন অলিম্পিক গেমসের তুলনায় বেশি। নিঃসন্দেহে, বেইজিং শীতকালীন অলিম্পিক শত বছরের ইতিহাসের প্রাচীন অলিম্পিক গেমসের গৌরব ও স্বপ্নকে আলোকিত করবে এবং বিশ্বকে শান্তি, বন্ধুত্ব ও সংহতির চেতনায় একত্রিত করবে।
২০০৮ সালে বেইজিং গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক আয়োজন করেছিল। আর এখন করছে শীতকালীন অলিম্পিক গেমস। এর মাধ্যমে বেইজিং উঠে গেছে এক অনন্য উচ্চতায়। এখন বেইজিংকে ডাকা হচ্ছে ‘ডাবল অলিম্পিক সিটি’ বলে। বলা বাহুল্য, এই মর্যাদা এখন পর্যন্ত কেবল বেইজিংই পেয়েছে।
বেইজিং শীতকালীন অলিম্পিক গেমস চীনে পুনর্মিলনের প্রতীক সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উত্সব বসন্ত উত্সবের সময়ে আয়োজিত হচ্ছে। বিদেশি ক্রীড়াবিদরা চীনা কর্মীদের কাছ থেকে চীনের বসন্ত উত্সবের রীতিনীতি বোঝার সুযোগ পাচ্ছেন। তাঁরা পারিবারিক পুনর্মিলন ও জাতীয় ঐক্যের জন্য চীনা জনগণের সাধনা সম্পর্কে আরও স্পষ্ট ধারণা পাচ্ছেন। চীনের অলিম্পিক গেমস আয়োজনের উদ্দেশ্য কখনও পরিবর্তন হয়নি। আর তা হচ্ছে, বিভিন্ন অঞ্চল, সংস্কৃতি, জাতীয়তা ও রঙের লোকদের একত্রিত করা, বিশ্বে একতা এবং শান্তি ও আশা নিয়ে আসে।
বর্তমান বিশ্বের অবস্থা জটিল ও উত্তেজনাময়। কোভিড-১৯ মহামারী বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে। এ পরিস্থিতিতে অলিম্পিকের চেতনা আরও বেশি প্রয়োজন। বিশ্বের ১৯০টি দেশকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আরও সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে হবে। এটি হলো বেইজিং অলিম্পিক গেমসের স্লোগান ‘যৌথভাবে অভিন্ন ভবিষ্যতের জন্য’-এর উদ্দেশ্য। এটি অলিম্পিক গেমসের মানবজাতিকে একত্রিত করার দায়িত্ব ও প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ।
ছয় বছরের প্রস্তুতির পর, মহামারীর মধ্যেই বেইজিং শীতাকালীন অলিম্পিক গেমস সময়মতো আয়োজিত হচ্ছে। এতে বিশ্বে ঐক্যের প্রতি চীনের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন ঘটেছে।
এদিকে, ৩০ জনেরও বেশি আন্তর্জাতিক নেতা বেইজিং শীতাকালীন অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। সম্প্রতি জাতিসংঘ ইতিহাসে প্রথম বারের মতো শীতকালীন অলিম্পিক গেমস উপলক্ষ্যে বিশেষ ডাকটিকিট প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের আইস হকি স্টেডিয়ামে চায়নিজ লাল লাইট জ্বালানো হয়েছে। মিসরের কায়রো টাওয়ারে ‘বেইজিং শীতকালীন অলিম্পিক গেমস’ লাইট জ্বালানো হয়েছে। বেইজিং শীতকালীন অলিম্পিক গেমস ক্রীড়ার চেতনা দিয়ে বিশ্বের ঐক্য জোরদারের চমত্কার প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে এবং মানবজাতির অভিন্ন ভাগ্যের কমিউনিটি গড়ে তোলার কাজে গতি সৃষ্টি হয়েছে।
আমি চীনা বন্ধুদের সঙ্গে বেইজিং শীতাকালীন অলিম্পিক গেমসের আনন্দ ভাগ করতে চাই। সম্প্রতি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ক্রীড়া হলো মানবজাতির সভ্যতার একটি বিশেষ অংশ। অলিম্পিক গেমস আয়োজনের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে দূরত্ব কমে যাবে এবং সমঝোতা বাড়বে। (ছাই/আলিম/স্বর্ণা)