বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠানে গায়ক শুয়ে জি ছিয়ানের কয়েকটি গান শোনাবো। শুয়ে জি ছিয়ান ১৯৮৩ সালে শাংহাইয়ে জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৫ সালে তিনি একটি গানের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। মাঝখানে তিনি গান গাওয়ার পথে বিভিন্ন বিনোদন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের মাধ্যমে মানুষের দৃষ্টিতে থাকার চেষ্টা করেন। ২০১৪ সাল থেকে তাঁর জনপ্রিয়তা আর কমেনি। এখন যে গানটি আপনারা শুনছেন, সেটা হলো ‘ছৌ পা কুয়াই’, যার মানে ‘কুত্সিত’। গানে বলা হয়েছে: অন্ধকার পৃথিবীতে থাকলে আমাকেও সুন্দর বলা যায়। ভালবাসার গল্প মানুষের আড্ডার বিষয়বস্তু হয়েছে। অপ্রাসঙ্গিক বিতর্ক ঠিক বা বেঠিক যা-ই হোক গুরুত্বপূর্ণ নয়। তোমার মতো হলে সব মানুষ প্রশংসা করবে। অনেক সুযোগ থাকলেও আমি খেয়াল করি না।
এখন আরেকটি গান শুনুন। গানের নাম ‘নি হাই ইয়াও ওয়া জেন ইয়াং’ বা তুমি আর আমার কাছ থেকে কি চাও? গানে বলা হয়েছে: তুমি আমাদের পরিচিত রাস্তায় পূর্বপ্রস্তুত কথাগুলো বলে দিয়েছো। আমি সাহসীর ভান করে মিথ্যা কথা বলেছি। তারপরও তোমাকে থামাতে পারিনি। অন্তত বিদায় দেওয়ার সময় আমি বেশ ভদ্র ছিলাম। আমি পরে সবসময় ওই রাস্তা এড়িয়ে যেতে শুরু করি। আশা করি অন্য রাস্তায় তোমার সঙ্গে দেখা হবে। তোমাকে মিস করি। তোমাকে ভুলতে পারি না। যদি ভালবাসায় দুর্বল হয়ে যাই, তাহলে আরো উদাসীনের ভান করতে হয়। তুমি আর আমার কাছ থেকে কী চাও? তোমার একটা ম্যাসেজ দেখে আমার মন ব্যথাক্রান্ত হয়ে যায়। আমি ভুলতে পারি না, আমাকে স্মরণ করতে হবে না। আমি আর কী করতে পারি?
এখন শুনুন গান ‘শেন শি’ বা ‘ভদ্রলোক’। গানে বলা হয়েছে: অনেক দিন দেখা হয়নি। এখন কি চরিত্রে তোমার সঙ্গে দেখা করবো? যত্ন করে নিজেকে সাজিয়েছি। সাদা শার্টের বাটাম তুমি দিয়েছিলে। আমি তোমার চুল স্পর্শ করতে চাই, শুধু দেখতে চাই তোমার প্রতিক্রিয়া কেমন হবে। তোমাকে আগের মতো কোলে নিতে চাই, পারবো? তুমি আধা পদক্ষেপ পিছিয়েছো। সত্যি? এ ছোট মুভমেন্ট আমাকে যেন বড় আঘাত দিয়েছে। আমি ভদ্রলোকের মতো ভান করলে কেবল তোমার সঙ্গে কথা বলতে পারি। আমি তোমাকে বাসা পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পারি? বাইরে বৃষ্টি হতে পারে। আমি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না-পেরে পেছন থেকে তোমাকে জড়িয়ে ধরলাম।
এখন শুনুন গান ‘ইয়ান ইউয়ান’। গানে বলা হয়েছে: সহজ হোক, কথাগুলো আরো সহজ হোক। তুমি তো অভিনেতা নও, অভিনয়ের দরকার নেই। আমার কোনো অভিমত নেই। আমি শুধু দেখতে চাই তুমি কিভাবে শেষ করবে। তোমার বেদনা খুব হালকা, একজন অনভিজ্ঞ অভিনেতার অভিনয়ের মতো। তোমার সঙ্গে অভিনয় করা আমার উপেক্ষা করা উচিত। তোমাকে কে ভালবাসার মানুষের অভিনয় করতে বাধ্য করেছে! সবার মতো আমরাও সেই সস্তা অভিনয় দেখাতে শুরু করি!! তুমি আগে কত ভালবাসতো আমাকে!!!...
এখন শুনুন আরেকটি গান ‘কাং কাং হাও’ বা ‘এইতো, ভালোই’। গানে বলা হয়েছে: আমাদের ভালবাসা এইতো, ভালোই। কম না এবং বেশিও না, ভোলা যায়। আমি নিজের যত্ন নিতে পারি। আমাদের দূরত্ব এইতো, ভালোই। এখান থেকে আমরা আলিঙ্গন করতে পারি না। মন দিয়ে ভালবাসলে আর এমন চাপ দেওয়া উচিত না। কেন আমাকে বাইরের বর্ম খুলে নিজের দাগ দেখাতে হবে? কিন্তু অনুভূতি রাজি হয় না। আর কোন উপায় নেই। যদি বিছিন্ন হওয়া অনেক জটিল, গায়ক নিজের হাতের গিটার রেখে দিবে। আমাদের ভালবাসা এখানে থামলে ভালোই। আর ঝগড়া করার দরকার নেই, আর কোন ব্যথা নেই। আমার ভাল তোমাকে দেখতে হবে না। আকাশ অন্ধকার তো ভালই, তাহলে আর কেউ আমার কষ্ট দেখতে পাবে না।
‘ওয়া হাও শিয়াং জাই না লি চিয়ান কুও নি’ বা ‘আমি যেন কোথায় তোমাকে দেখেছিলাম!’ গানে বলা হয়েছে: যেন কোথায় তোমাকে দেখেছিলাম! তুমি যেন আমার পাশের ক্লাসে পড়েছিলে। মানুষ না-বলা ভালবাসার কথা মাটির নিচে পুতে রাখতে পছন্দ করে। অন্য মানুষের গল্প দেখে নিজেরটা ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করে। আমি তোমার কন্ঠ শুনেছি। মধ্যরাতে আকাশের ঐ তারা খোঁজার চেষ্টা করি। আমি ভাবলাম আমার সব ভালবাসা সব শেষ হয়েছে। তুমি একটি প্রেমের চিঠির মত পরিষ্কার। মানুষ সব ভালবাসাকে সিন্দুকের মধ্যে লুকিয়ে রাখতে চায়।
প্রিয় শ্রোতা, গান শুনতে শুনতে অনুষ্ঠানের শেষ প্রান্তে চলে এলাম। তবে বিদায় নেওয়ার আগে আরেকটি গান শোনাবো। গানের নাম ‘তুং উ শি চিয়ে’ বা ‘পশুপাখির পৃথিবী’। গানে বলা হয়েছে: মানুষ বদলাতে চেষ্টা করে। পশুপাখির পৃথিবীকে তামাসা করে। মানুষের পূর্বপুরুষের আর তীক্ষ্ম দাঁত বা বড় থাবা নেই। ভালবাসার জন্য পরস্পরকে হত্যা করা আর আধুনিক যুগের প্রেম নয়। তার চেয়ে নিশ্চয় আরো ভাল উপায় আছে। দেখা যাক কে আগে হাঁটু পেতে নতি স্বীকার করে। আমাদের পশুপাখির মত তীক্ষ্ম দাঁত ও থাবা থাকা উচিত। ভালবাসার জন্য পরস্পরকে হত্যা করা ছাড়া আর অন্য উপায় নেই। জিতে যাওয়া, নতি স্বীকার করা, কেউ আঘাত পেলে সে নিজেই নিজের যত্ন নেবে। বিবর্তনের ভান করে মানুষ যেন পশুপাখি থেকে অনেক উন্নত। অবেশেষ দেখা গেছে মানুষের হিংসা পশুর চেয়ে বেশি।
(স্বর্ণা/আলিম)