২০২২ সালের বেইজিং শীত্কালীন অলিম্পিক ও প্রতিবন্ধী শীত্কালীন অলিম্পিকের মাসকট'র নাম বিং তুন তুন এবং স্যু রুং রুং। আসুন আমরা তাদের সম্পর্কে জেনে নিই।
বিং তুন তুন ২০২২ সালে শীত্কালীন অলিম্পিকের মাসকট। এ মাসকট সততা, সুস্থতা, প্রাণচাঞ্চল্য ও কিউটনেসের প্রতীক। যার মাধ্যমে শীত্কালীন অলিম্পিক খেলোয়াড়দের শক্তিশালী শরীর, সহনশীল চেতনা এবং উত্সাহব্যঞ্জক অলিম্পিক চেতনার প্রতিফলন হয়েছে। পান্ডার নমুনা থেকে তৈরি হয় বিং তুন তুন। পান্ডার ভাবমূর্তীর সাথে আইস ক্রিস্টাল শেল যুক্ত হয়েছে। এ শেল সুপার পাওয়ারের প্রতীক। তাতে শীত্কালীন তুষার ও বরফ ক্রীড়া ও আধুনিক প্রযুক্তির প্রতিফলন হয়েছে। তার মাথায় পরানো হয়েছে স্পোর্টস হেলমেট। হেলমেটকে রঙিনবৃত্তাকার বন্ধনী দিয়ে সাজানো হয়েছে। এ বন্ধনী শীত্কালীন অলিম্পিক ভেন্যু-জাতীয় স্পীড স্কেটিং ভেন্যু থেকে নকশা করা হয়েছে। বাম হাতে হৃদয় আকৃতির প্যাটার্ন রয়েছে। তার মাধ্যমে আয়োজক দেশ হিসেবে বিশ্বব্যাপী সকল বন্ধুকে উদ্যমী সম্ভাষণ জানায় চীন।
বেইজিং প্রতিবন্ধী শীত্কালীন অলিম্পিকের মাসকট-সুয়ে রুং রুং চীনের লণ্ঠনের নমুনায় নকশা করা হয়েছে। লণ্ঠন ফসল, উল্লাস, উষ্ণতা ও উজ্জ্বলতার প্রতীক। তার মাথায় যে ডিজাইন করা হয়েছে, এর নাম চীনা ভাষায় রুই। রুই মানে শুভ কামনা ও সুখ।
শান্তি কবুতর ও টেম্পল অব হ্যাভেন নিয়ে গঠিত প্যাটার্নের অর্থ শান্তি ও মৈত্রী। তাছাড়া, প্যাটার্নে চীনের ঐতিহ্যবাহী পেপারকাট রয়েছে। তার মুখে যে তুষার রয়েছে, তার মানে মোটা তুষার পড়লে সমৃদ্ধ বর্ষা নামবে। এ মাসকট মানুষের মতো দেখায়, দেখতে অনেক কিউট। লণ্ঠনের মুল রং লাল, কারণ অলিম্পিকের সময় চীনের বসন্ত উত্সবও চলবে। লণ্ঠন জ্বালিয়ে দেওয়া মানে স্বপ্ন জ্বালিয়ে বিশ্বকে উষ্ণ করা, যা বন্ধুত্ব, উত্সাহ ও প্রতিজ্ঞার প্রতীক। তাতে প্রতিবন্ধী অলিম্পিক ক্রীড়াদের সংগ্রামী আত্মা এবং বিশ্বকে উত্সাহ দেওয়ার প্রতিবন্ধী অলিম্পিক গেমসের চেতনাকে প্রতিফলিত করেছে।
এটি বিন তুন তুন ও স্যু রুং রুং’র গল্প। আপনারা তাদের পছন্দ করছেন?
প্রতিটি শীত্কালীন অলিম্পিক ও প্রতিবন্ধী শীত্কালীন অলিম্পিকের আলাদা মাসকট আছে। চলুন, একসাথে দেখি আগেকার মাসকটগুলো।
২০১৮ সালের পিছাং শীত্কালীন অলিম্পিকের মাসকট একটি সাদা বাঘ। তার নাম সুহোরাঙ্গ। সাদা বাঘের রং তুষার ও বরফ ক্রীড়ার প্রতীক।
২০১৮ সোচি শীত্কালীন অলিম্পিকের মাসকট হলো তিনটি কিউট পশু। তারা হচ্ছে সুদর্শন এবং শক্তিশালী তুষার চিতা। নিষ্পাপ পোলার বিয়ার, এবং লক্ষ্মী খরগোশ। রাশিয়ায় সরাসরি টিভি লাইভে গণভোটের মাধ্যমে তাদের নির্বাচিত করা হয়েছে।
২০১০ সালে ভ্যাঙ্কুভার শীত্কালীন অলিম্পিকের মাসকট কিংবন্দন্তী থেকে ৩টি কার্টুন মূর্তী। তারা হলো মিগা নামের পোলার বিয়ার, কুয়াটছি নামের উত্তর আমেরিকার আদি মানুষ। প্রতিবন্ধী শীত্কালীন অলিম্পিকের মাসকট হলো সুমি নামের থান্ডারবার্ড।
২০০৬ সালে তুরিন শীত্কালীন অলিম্পিকের মাসকট নেভে ও গ্লিজ। নেভে আসলে তুষারের বল এবং গ্লিজ তো বরফের কিউব। তারা শীত্কালীন অলিম্পিকের মূল উপাদান।
২০০২ সালে সল্টলেক শীত্কালীন অলিম্পিকের মাসকট হলো স্নোশু র্যাবিট (পাউডার), উত্তর আমেরিকার প্রেইরি উলফ (কপার) এবং আমেরিকান ব্ল্যাক বিয়ার (কয়লা)। মাসকটগুলো অলিম্পিক গেমস দ্রুত, উচ্চতর এবং শক্তিশালী হওয়ার নীতির প্রতিনিধিত্ব করে।
১৯৯৮ সালে জাপানের নাগানো শীতকালীন অলিম্পিকের মাসকটের নাম হলো সুক্কি, নক্কি, লেক্কি এবং সুক্কি। সেগুলো বনাঞ্চলে চারটি ভিন্ন উপাদানের প্রতিনিধিত্ব করে। সে চারটি উপাদন হল আগুন, বায়ু, ভূমি এবং জল।
১৯৯৪ সালে লিলহ্যামার শীতকালীন অলিম্পিকের মাসকটগুলো হল হ্যাকন এবং ক্রিস্টিন । দুটোই নরওয়ে’র রূপকথার দুটি প্রধান চরিত্রের নমুনা থেকে নকশা করা হয়েছে।
১৯৯২ সালে আলবার্টভিল শীতকালীন অলিম্পিকের মাসকটের নাম ম্যাজিক। এটি হল প্রথম মাসকট যার আর্কিটাইপ কোন প্রাণী নয়। এর রং ফরাসি পতাকা থেকে এসেছে।
১৯৮৮ সালে ক্যালগারি শীতকালীন অলিম্পিকের মাসকটের নাম হিডি এবং হাউডি। মাসকটগুলো হলো দুটো মেরু ভালু। অলিম্পিক মাসকটগুলোর মধ্যে এবার প্রথমবার মতো একজন পুরুষ এবং একজন মহিলার জুটি হিসেবে উপস্থিত হয়েছিল।
১৯৮৪ সালে যুগোস্লাভিয়ার সারাজেভো শীতকালীন অলিম্পিকের মাসকটের নাম ভুকো। নেকড়ে থেকে তৈরি করা হয়েছে এ মাসকট। নেকড়ে আয়োজক দেশটির সাধারণ প্রাণী।
১৯৮০ সালের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে লেক প্ল্যাসিড শীতকালীন অলিম্পিকের মাসকটের প্রোটোটাইপটি ছিল
একটি র্যাকুন এবং তার নাম রনি।
১৯৭৬ সালে অস্ট্রিয়ার ইনসব্রুক শীতকালীন অলিম্পিকের মাসকট হল স্নোম্যান, যা বিশুদ্ধ অলিম্পিকের প্রতীক।
১৯৬৮ সালের ফ্রান্সে গ্রেনোবল শীতকালীন অলিম্পিকের স্কিয়ার শুস হল শীতকালীন অলিম্পিকের ইতিহাসে প্রথম মাসকট। অতিরঞ্জিত বড় মাথা, সূক্ষ্ম তবে দৃঢ় শরীর দৃঢ় ইচ্ছার প্রতীক।
১৯৭২ সালে জাপানের সাপোরো শীতকালীন অলিম্পিকের কোন মাসকট ছিল না।