স্যাটেলাইট নগরী উহান
2022-01-06 19:44:44

সাজিদ রাজু, জানুয়ারি ৬: স্মার্ট স্যাটেলাইট তৈরির জন্য সারা বিশ্বে সুনাম কুড়িয়েছে চীনের মধ্যাঞ্চলের শহর উহান। ছোট আকারের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির স্যাটেলাইট তৈরির কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে এখানে। বিশেষ করে মহাকাশ গবেষণায় গতি আনতে এসব স্যাটেলাইট নানা ক্ষেত্রে কাজে লাগবে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা।

 

উহান, নাম শুনলেই নিশ্চয়ই মনে পড়ে করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত এক নগরীর কথা।

তবে করোনা কাটিয়ে শহরটি এখন সফলতায় প্রজ্জ্বল এক নাম। এ সফলতার কেন্দ্রে স্যাটেলাইট।

টেক-দুনিয়ার প্রধান আলোচ্য যে ছোট ছোট স্যাটেলাইট, তার প্রথান উৎপাদন কেন্দ্র এই উহান। এমনকি চীনের প্রথম স্মার্ট পদ্ধতিতে স্যাটেলাইট উৎপাদন শুরু হয়েছে উহানে স্থাপন করা বেশ কিছু কারকানায়। বিশেষ করে উন্নত মান ও বিপুল উৎপাদন হারের কারণে এখানকার স্যাটেলাইট নিয়ে আলোচনাও আছে বেশ। এখানকার কারখানাগুলোতে নেই উৎপাদনের প্রাচীন পদ্ধতি, নেই মানুষের হাতের স্পর্শ।

উহানের ন্যাশনাল অ্যারোস্পেস শিল্প ঘাটিতে স্যাটেলাইট তৈরির এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে গেল বছরের মে মাসে।

কেমন চলছে সেই কারখানা?

চীনের অ্যারোস্পেস সায়েন্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি করপোরেশন লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান ‘দ্য স্পেস ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিডেট’। তারা বলছে, বছরে অন্তত ২৪০টি ছোট স্যাটেলাইট তৈরির সক্ষমতা আছে তাদের। এসব স্যাটলাইটের প্রতিটির ওজন অন্তত ১টন। তারা আরো বলছে, উৎপাদন হার আরো ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর সক্ষমতা আছে এই কোম্পানিটির।

কারখানার যে ওয়ারহাউজ নির্মাণ করা হয়েছে, সেখানে কয়েক হাজার সরঞ্জাম সংরক্ষণ করা যায় যা প্রতিনিয়ত উৎপাদন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। আর বিপুল সংখ্যক সরঞ্জামের মধ্য থেকে প্রয়োজনীয়টি খুঁজে বের করতে আছে স্মার্ট ব্যবস্থাপনা।

সট:

কেসিক স্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং ডেভেলেপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের ডেপুটি চিফ টেকনিক্যাল কর্মকর্তা লিউ ফেং বলছিলেন, “আমরা এমন একটি ওয়ারহাউজ ব্যবস্থাপনা দাঁড় করিয়েছি যা আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে খুব সহযোগিতা করে। বিশেষ করে কোড, নাম ও তাদের যথাযথ অবস্থান ধরে খুঁজে বের করার কাজটি খুব সহজ হয়েছে। ওয়ারহাউজটিতে ১৮ হাজারের বেশি বুথ আছে যেখানে স্যাটেলাইটের হাজার হাজার যন্ত্রাংশ সংরক্ষণ করা যায়।“

 

উৎপাদন সারিতে যন্ত্রাংশ পরিবহনের কাজও হয় স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের মাধ্যমে। বিশেষ করে রোবটিক আর্মসের ব্যবহার গতি এনেছে সামগ্রিক উৎপাদনে। লিউ বলছিলেন, কাজের চাপ কমাতে সর্বত্র ব্যবহার করা হয় প্রযুক্তির নানা উদ্ভাবন।

“উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত সব ক্ষেত্রেই আমরা চেষ্টা করি স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করার। বিশেষ করে উদ্ভাবনকে আমরা সব সময় গুরুত্ব দেই। এসব ডিজিটাল ও স্মার্ট ডিভাইস ব্যবহার করার কারণে আমাদের বিজ্ঞানীদের কাজের চাপও অনেক কমে গেছে।“

স্যাটেলাইট তৈরির সর্বশেষ ধাপ থার্মাল ভ্যাকিউম পরীক্ষা। প্রতিকূল পরিবেশেও যেন স্যাটেলাইটগুলো স্থিতিশীল ও সাবলিলভাবে কাজ করতে পারে তার জন্য এ পরীক্ষা করা হয়। কর্তৃপক্ষ জানায়, সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে ৯ দিন ব্যাপী এ পরীক্ষা করা হয় স্যাটেলাইটগুলোকে।