জানুয়ারি ৬: বিগত ২০২১ সালে, তাইওয়ান প্রণালীর দু’তীরের সম্পর্ক ছিল জটিল, গুরুতর, উত্তেজনাপূর্ণ এবং অশান্ত। তাইওয়ানের তথাকথিত ‘স্বাধীনতাকামীদের’ বিচ্ছিন্নতাবাদী অপতত্পরতা, বিদেশি চীনবিরোধী শক্তির হস্তক্ষেপ, এবং কোভিড-১৯ মহামারীর আঘাত মোকাবিলা করতে হয়েছে দু’তীরকে। ফলে, অবশেষে দু’তীরের সম্পর্কের ক্ষেত্রে সৃষ্ট অসুবিধাগুলো কাটিয়ে ওঠা গেছে; অর্জিত হয়েছে অগ্রগতি।
২০২২ সালে চীনের মূল ভূভাগ তাইওয়ানের স্বদেশীদের জন্য আরও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবে। তাইওয়ানের স্বদেশীরাও মূল ভূভাগের সঙ্গে তাইওয়ানের সম্পর্ক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে—এমনটা আশা করা যায়।
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত, দু’তীরের বাণিজ্যের মোট পরিমাণ ছিল ২৯৮২৮ কোটি মার্কিন ডলার, যা ২০২০ সালের একই সময়ের তুলনায় ২৩.৭ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে তাইওয়ানের কাছে মূল ভূভাগের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৭০৭৭ কোটি মার্কিন ডলার, যা ২০২০ সালের একই সময়ের তুলনায় ৩১.২ শতাংশ বেশি। আর তাইওয়ান থেকে আমদানির পরিমাণ ছিল ২২৭৫১ কোটি মার্কিন ডলার, যা ২০২০ সালের একই সময়ের তুলনায় ২৬.২ শতাংশ বেশি।
২০২১ সালে তাইওয়ানের বেশিরভাগ বাসিন্দা চীনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠার শততম বার্ষিকী উদ্যাপন এবং ‘সিন হাই’ বিপ্লবের ১১০তম বার্ষিকী উদ্যাপনের প্রধান ইভেন্টগুলোতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। পাশাপাশি, ১৩তম প্রণালী ফোরাম, ২০২১ সালের দু’তীরের শিল্পপতি ‘চি চিন শান’ শীর্ষসম্মেলন এবং ২০২১ সালের শাংহাই-তাইপেই শহুর ফোরামসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আলোচনাসভায় অংশও নিয়েছে তাঁরা।
২০২২ সালে তাইওয়ান প্রণালীর দু’তীরের সম্পর্ক চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ—দুটিরই সম্মুখীন হবে। আশা করা যায়, দু’পক্ষ সুযোগগুলো বেশি কাজে লাগাবে এবং চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় একযোগে কাজ করবে।
যুক্তরাষ্ট্রে চীনের সাবেক রাষ্ট্রদূত কুই তিয়ানকাই বলেছেন: ‘চীন-মার্কিন সম্পর্কের বর্তমান পর্যায় দীর্ঘস্থায়ী হবে’। ২০২২ সালে, যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যবর্তী নির্বাচন হবে। নির্বাচনের ফলাফল চীন-মার্কিন সম্পর্ককে প্রভাবিত করবে। ‘চীনকে নিয়ন্ত্রণ করতে তাইওয়ানকে ব্যবহার করার’ সম্ভাবনাও রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের একশ্রেণির রাজনীতিবিদ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়ন চান না—এটা স্পষ্ট। এদিকে নতুন বছরে, তাইওয়ানে ‘নাইন-ইন-ওয়ান’ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া জরুরি।
যা হোক, ২০২২ সালেও, চীনের মূল ভূখণ্ডে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও আনন্দের ঘটনা ঘটবে। বেইজিং ২০২২ শীতকালীন অলিম্পিক এবং চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ২০তম জাতীয় কংগ্রেস এ বছরই আয়োজিত হবে। দেশটির অর্থনৈতিক উন্নয়নও একটি নতুন স্তরে পৌঁছে যাবে।
আমরা বিশ্বাস করি যে, মাতৃভূমির সম্পূর্ণ পুনর্মিলনের চলমান প্রক্রিয়ার অগ্রগতির সাথে, তাইওয়ানের আরও বেশি স্বদেশি তথাকথিত ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতা’ ধারণার বিপদ উপলব্ধি করতে পারবেন এবং ষড়যন্ত্রকারীদের রুখে দেবেন। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই )