জানুয়ারি ৪: আজ (মঙ্গলবার) থেকে আগামি শুক্রবার পর্যন্ত আফ্রিকার তিনটি দেশ তথা ইরিত্রিয়া, কেনিয়া, এবং কমোরোস সফর করবেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। আফ্রিকা সফর শেষে মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কা যাবেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এ প্রসঙ্গে চীন সরকারের আফ্রিকা-বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি সু চিং হু সিএমজিকে দেয়া এক বিশেষ সাক্ষাতকারে বলেন,“চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রতিবছর তাঁর প্রথম বিদেশ সফর আফ্রিকা দিয়ে শুরু করেন। এই ঐতিহ্য ১৯৯১ সাল থেকে শুরু হয়ে গত ৩২ বছর ধরে চলছে। এ সময়ে চীনে কয়েকজন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পরিবর্তন হয়েছে, তবে এই ঐতিহ্য কখনো পরিবর্তন হয়নি।”
সু চিন হু জানান, করোনাভাইরাসের ওমিক্রন প্রজাতির ছড়িয়ে পড়া এখনো অব্যাহত রয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটেও চীন ৩২ বছরের ঐতিহ্য বজায় রাখছে। এতে প্রতিফলিত হয়, চীন ও আফ্রিকা একে অপরের ভাই ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু। পাশাপাশি, এটিও প্রমাণিত হয়, চীন আফ্রিকার ঐতিহ্যিক বন্ধু এবং আফ্রিকার সঙ্গে সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় চীন। তিনি বলেন, “চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীগণ টানা ৩২ বছর ধরে প্রতিবছরই তাঁদের বিদেশ সফর শুরু করেন আফ্রিকা ভ্রমণের মাধ্যমে। এটি কোনো কাকতালীয় বিষয় নয়, বরং চীনের বিশেষ বন্ধুত্বের বহিঃপ্রকাশ। আফ্রিকার দেশসমূহের সাথে একতা, সহযোগিতা জোরদার ও উন্নয়ন হচ্ছে চীনের কূটনৈতিক নীতির কৌলশলগত দিক। আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির যতোই পরিবর্তন হোক না কেন, চীনের এ নীতি কখনোই পরিবর্তন হয়নি।”
তিনি আরো বলেন, এবার যে তিনটি দেশে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী যাচ্ছেন, সেসব হচ্ছে চীনের ঐতিহ্যিক বন্ধু। তিনি বলেন,“আফ্রিকায় চীনের অনেক বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ রয়েছে। মহাদেশটির মোট ৫৩টি দেশের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সবদেশে সফর করতে অনেক সময় লাগবে। আমার মতে, এবারে এ তিনটি দেশকে বাছাই করা হচ্ছে বন্ধুদের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ আদানপ্রদান। এতে বড় বা ছোট দেশকে সমানভাবে মূল্যায়ন করার চীনা নীতি প্রতিফলিত হয়েছে। আমি ভাবছি, এবারের সফরের মাধ্যমে চীন এ তিনটি দেশের সঙ্গে তার বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।”
তিনি আরো বলেন, “আমি মনে করি, এবারের সফর করোনা টিকাকে আফ্রিকায় সহজলভ্য করতে সহায়ক হবে। কারণ চীন আফ্রিকাকে আরো এক বিলিয়ন ডোজ টিকা সরবরাহ করবে। নতুন বছরে আফ্রিকার ৬০ শতাংশ জনগণকে টিকাদানের আফ্রিকান ইউনিয়নের লক্ষ্য বাস্তবায়নে সাহায্য করবে বেইজিং। পাশাপাশি, এবারের সফরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই তিনটি দেশের সাথে চীন ও আফ্রিকার বাস্তব সহযোগিতার নতুন ব্যবস্থা নিয়ে গভীরভাবে আলোচনা করবেন, তাদের মতামত ও প্রস্তাব শুনবেন এবং আফ্রিকায় মহামারীর প্রভাব মোকাবিলা ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার বাস্তবায়নের জন্য নতুন প্রাণশক্তি প্রদান করবেন।”
তিনি জানান, নতুন বছরের শুরুতে চীন ও আফ্রিকার সহযোগিতা ইতোমধ্যে সুষ্ঠু সূচনাবিন্দুতে রয়েছে। তিনি বলেন, “ভবিষ্যতে চীন ও আফ্রিকার মধ্যকার সহযোগিতা আরো দ্রুত ও সুষ্ঠুভাবে অগ্রগতি লাভ করবে। আমি বিশ্বাস করি, চীন ও আফ্রিকার মধ্যকার সহযোগিতার ভবিষ্যত আরো সুন্দর হবে।”
চায়না মিডিয়া গ্রুপ(সিএমজি) থেকে আকাশ