আজকের টপিক: ‘চিংড়ি জমা করা মেয়ের গল্প’
2021-12-14 17:11:58

আজকের টপিক অনুষ্ঠানে আমি  ‘প্লেটে চিংড়ি জমা করা মেয়ের গল্প’ বলবো। চাং সিয়াও সিয়াও নামে ৮ বছর বয়সী এক চীনা মেয়ে স্কুলে যখন দুপুরের খাবার খায়, তখন সে নিজের প্লেটে কিছু চিংড়ি জমা করে। সে কেন এটা করে? তার উত্তর শুনে সবাই মুগ্ধ হয়ে যায়। সে বলছিল, ‘এটি আমার মা-কে দেবো’। কিন্তু মেয়েটি কেন তার মা’র জন্য চিংড়ি মাছ নিয়ে যায়? 

 

সিয়াও সিয়াও হচ্ছে চীনের হ্যনান প্রদেশের ‘চৌখৌ’ শহরের ‘থাই খাং’ জেলার ‘ছিং চি’ উপকণ্ঠের ‘আর লাং মিয়াও’ স্কুলের একজন ছাত্রী। এই গ্রামীণ শিশুটির বাবা সঙ্গে থাকে না। তার বাবা সারা বছর গ্রামের বাইরে কাজ করেন। বাড়িতে অসুস্থ মা আছে। এই শিশুটি প্রায়শই এই কাজ করে থাকে। সে প্রতিদিন স্কুল থেকে দেওয়া কিছু মজার ও ভালো খাবার জমা করে। তারপর নিজের অসুস্থ মা’র জন্য বাসায় নিয়ে যায়। সে পরিবারের অসুস্থ মাকে খাওয়ানোর জন্য দিনের পর দিন এই কাজ করে। এই গল্পটি প্রচারিত হওয়ার পর অসংখ্য নেটিজেন মুগ্ধ হয়। অনেক মানুষ তাকে দু’টি বড় বাক্স চিংড়ি, নতুন জামাকাপড় এবং লেখাপড়ার সামগ্রী পাঠায়। ছোট্ট সিয়াও সিয়াও বলে, সে পরিশ্রম করে নিজের উন্নতি করতে চায়।

 

এই মেয়েটির পিছনে স্কুলের প্রধান চাং ফেং ছেংয়ের সহযোগিতা রয়েছে। প্রিন্সিপাল চাং ফেং ছেংয়ের বয়স ৪০ বছর হয়নি। কিন্তু তার মাথায় অনেক সাদা চুল দেখা যায়। তিনি মনে করেন- ‘যদি একটি শিশু সূর্যালোক না পায়- তাহলে সে কীভাবে অন্যদের আলোকিত করবে; সে ভালবাসা পায়নি এবং সে কোমলতা অনুভব করতে পারে নি। তাহলে সে কীভাবে সমাজ ও অন্যদের ভালবাসবে?’

 

প্রায় দশ বছর অবিরাম চেষ্টার পর, চাং ফেং ছেংয়ের সাহায্যে এই গ্রামীণ স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৩০ থেকে হয় ১৮০জন। এই স্কুলের প্রধানের দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি, চাং ফেং ছেং একজন চীনা শিক্ষক ও ইংরেজি শিক্ষক। স্কুলে মাত্র ১০জন শিক্ষক আছে। স্কুলের নানা কাজ চাং ফেং নিজেই করেন। ক্রেতা, ইনস্টলার, ইলেক্ট্রিশিয়ান ও রাঁধুনির কাজেও তাকে সহযোগিতা করতে হয়। একবার তাঁর ডান পা আহত হলে তিনি হুইলচেয়ারে বসে স্কুলের কাজ করেন।

 

যেখানে দরকার সেখানেই চাং ফেং ছেং ছুটে যান। তিনি বলেন, তিনি এসব শিশুর সুষ্ঠুভাবে বেড়ে ওঠা প্রত্যাশা করেন।

‘সাদা চুল প্রিন্সিপাল’ এবং ‘চিংড়ি জমানো মেয়ের গল্প’ দেখার পর, চীনের বিভিন্ন স্থান থেকে ভালোবাসার ত্রাণ সামগ্রী এই স্কুলে আসতে থাকে। এই স্কুলটি নীরবে বদলে যেতে থাকে। দুপুরের খাবার আরও সমৃদ্ধ হয়। প্রতি সপ্তাহে মুরগির পা, চিংড়ি, গরুর মাংস পাঁজরের হাড় এবং কমলা ও আঙ্গুরের মতো মৌসুমি ফল পাওয়া যায়।

(ওয়াং হাইমান/তৌহিদ/ছাই)