বাণিজ্যিক সেতু গড়ে তুলে বিশ্ব অর্থনীতিতে চালিকাশক্তি যোগ করবে চীন
2021-12-10 14:16:14

ডিসেম্বর ১০: এ বছর বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় চীনের যোগদানের ২০তম বার্ষিকী। ২০ বছরে চীন সার্বিক সংস্কার উন্নত করা ও উন্মুক্তকারণ বাড়ানোর চেষ্টা করেছে। চীন বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সুযোগ কাজে লাগিয়ে যৌথভাবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা সংস্কারের ক্ষেত্রে চীনের বুদ্ধি যোগ করেছে।

 

গত ১০ নভেম্বর চতুর্থ চীন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলা শেষ হয়েছে। এবারের ছয় দিনব্যাপী মেলায় ৭২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারী বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে চতুর্থ বিশ্ব আমদানি মেলা সফলভাবে আয়োজন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বিশ্বের কাছে চীনা বাজারের সুযোগ ও উচ্চ মানের উন্মুক্তকরণ উন্নয়নের সংকল্প দেখা যায়। ২০ বছর আগে এদিন অর্থাত্ ২০০১ সালের ১০ নভেম্বর কাতারে আয়োজিত বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার চতুর্থ মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে সংস্থাটিতে চীনের যোগদানের অনুমোদন দেওয়া হয়। চীন বিশ্বের বৃহত্তম উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গভীরভাবে অর্থনীতির বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছে।

চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং চতুর্থ চীন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলায় তাঁর বক্তৃতায় বলেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় অংশ নেওয়ার পর চীন অব্যাহতভাবে উন্মুক্তকরণ এগিয়ে নিয়েছে। এর মাধ্যমে চীনের উন্নয়ন জোরদার করা এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে চালিকাশক্তি যুক্ত হয়েছে।

২০ বছর আগে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় যোগদানের  প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেছে চীন। চীনের শুল্কের মান ১৫.৩ শতাংশ থেকে ৭.৪ শতাংশে কমেছে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার পরিসংখ্যানে বলা হয়, চীনের আমদানি ও রপ্তানির মোট পরিমাণ ২০০১ সালের ৫০৯ বিলিয়ন ৮০০ মিলিয়ন থেকে ২০২০ সালের চার ট্রিলিয়ন ৬৪৬ বিলিয়ন ৩০০ মিলিয়ান মার্কিন ডলার প্রবৃদ্ধি হয়েছে। যা বিশ্বের প্রথম স্থানে রয়েছে। ২০ বছরে সেবা বাণিজ্যের পরিমাণ বিশ্বের একাদশ থেকে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মহাপরিচালক নগোজি ওকোঞ্জো ইওয়িলা গত ৫ নভেম্বরে অনলাইনে চতুর্থ চীন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলায় বক্তৃতা করেন। তিনি বলেন, ত্রয়োদশ শতাব্দীতে মার্কো পোলো পূর্বদিকে যাত্রা করার পর থেকে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় চীনের যোগদান চীন ও পশ্চিমের মধ্যে বৃহত্তম বাণিজ্যের সেতু হিসাবে দেখা যাবে।

২০০১ সালের ১১ ডিসেম্বরে চীন আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ১৪৩টি সদস্য হিসেবে যোগ দেয়। চীনের বৈদেশিক অর্থনীতি ও বাণিজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনের বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার গবেষণা একাডিমার প্রধান থু স্যিন ছুয়ান মনে করেন, চীন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় অংশ নেওয়ার পর নিজস্ব উন্নয়ন জোরদার করেছে এবং বিশ্বের জন্য সুযোগ সৃষ্ট হয়েছে।

তিনি বলেন, চীন অর্থনীতির বিশ্বায়ন ব্যবস্থা ও বাজার ব্যবস্থায় অংশ নিয়েছে। উৎপাদনসহ সমগ্র বৈশ্বিক সংস্থানগুলোর একটি পুনর্বিন্যাস করেছে, এর কার্যকারিতা ব্যাপকভাবে উন্নত করেছে।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় অংশ নেওয়ার ২০ বছরে চীন বিশ্বের ৫০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদারি এবং ১২০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলের শীর্ষ তিনটি ব্যবসায়িক অংশীদারে পরিণত হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বিশ্ব অর্থনীতি বৃদ্ধির খাতে চীনের অবদান ৩০ শতাংশ। চীনে অবাধ বাণিজ্যের পরীক্ষামূলক অঞ্চলগুলো দ্রুত উন্নত হচ্ছে। চীনের উদ্যোগে ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগ ও মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের সমাজ আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে। চীন বিশ্বের শিল্প চেইন ও সরবরাহ চেইনের নিশ্চয়তা এবং বিশ্ব অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। 

(ছাই/তৌহিদ)