আজকের টপিক: চীনের ‘জনতার গণতন্ত্র’ ও প্রসঙ্গকথা
2021-12-09 09:18:03

ডিসেম্বর ৯: গত ৪ ডিসেম্বর চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের তথ্য কার্যালয় থেকে ‘চীনের গণতন্ত্র’ শীর্ষক শ্বেতপত্র প্রকাশিত হয়েছে।  অনেক বিদেশি বিশেষজ্ঞ ও পণ্ডিত সম্প্রতি চীনের গণতান্ত্রিক অনুশীলন ও অনুশীলনের ফলের ভিত্তিতে নিবন্ধ বা মতামত প্রকাশ করেছেন। শ্বেতপত্রে বর্ণিত ‘জনতার গণতন্ত্র’ বাস্তবায়নে চীন যে-সাফল্য অর্জন করেছে, তার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন বিদেশি বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা একমত হয়েছেন যে, একটি দেশের গণতন্ত্র যথার্থ কি না, তা বোঝা যাবে যদি সে-গণতন্ত্র জনগণের কল্যাণে নিবেদিত হয়।

পর্তুগালের চীনা পর্যবেক্ষণ বিষয়ক গবেষণালয়ের প্রধান লু ইজুন বলেছেন, চীনে ‘জনতার গণতন্ত্র’ নির্দিষ্ট কোনো গোষ্ঠীর পরিবর্ততে জনগণকে সেবা দেয় এবং জনগণকেই দেশের মালিক হিসবে মর্যাদা দেয়। বিগত ১০০ বছরে, চীনের কমিউনিস্ট পার্টি ক্রমাগত গণতান্ত্রিক চিন্তাভাবনা ও অনুশীলনকে সমৃদ্ধ করেছে এবং সর্বদা জনতার গণতন্ত্রকে মেনে চলেছে, যার মধ্যে গণতান্ত্রিক নির্বাচন, গণতান্ত্রিক পরামর্শ, সামাজিক জীবনে গণতন্ত্র এবং তৃণমূল পর্যায়ে গণতন্ত্রের চর্চা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলোর গণতন্ত্রই বিশ্বের গণতন্ত্রের একমাত্র রূপ নয়, কোনো দেশে সত্যিকারের গণতন্ত্র আছে কি না তা পশ্চিমাদের নির্ধারণ করা উচিত নয়।

 

দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের আলবেনিয়ান ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক এনভার বিডিক একটি নিবন্ধ লিখেছেন, চীন বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্দান্ত সাফল্য অর্জন করেছে। একদিকে, চীন অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে উন্মুক্ত বাজারের নীতি অনুসারে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে; অন্যদিকে, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে, তার নিজস্ব ঐতিহ্যের ভিত্তিতে, ‘জনতার গণতন্ত্রের’ চর্চা করে, যা পশ্চিমা গণতন্ত্র থেকে আলাদা।

 

অস্ট্রেলিয়ার নিউক্যাসল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক রোল্যান্ড বোল বিশ্বাস করেন যে,  চীনের সমাজতান্ত্রিক গণতন্ত্র চীনের উন্নয়নের জন্য খুবই উপযোগী এবং এর প্রাতিষ্ঠানিক শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে। চীনের সফল উন্নয়ন বিশ্বকে সমাজতান্ত্রিক গণতন্ত্রের গুরুত্ব ও কার্যকারিতা সম্পর্কে সচেতন করেছে। উদাহরণস্বরূপ, চীনে পিপলস পলিটিক্যাল কনসালটেটিভ কনফারেন্স রয়েছে। এই রাজনৈতিক পরামর্শপদ্ধতির অধীনে, সমস্যা সমাধানের অনেক উপায় খুঁজে পাওয়া সম্ভব এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে ঐক্যমতে পৌঁছানো যায়।

 

সাইপ্রাসের ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটির সাবেক অধ্যাপক কস্তাস গুলিয়ামোস বলেছেন,  চীনের সমাজতান্ত্রিক গণতন্ত্র কেবল আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে তুলনা করলে, চীনের জনমুখী সামাজিক শাসন পুরো সমাজের জ্ঞান ও শক্তিকে উজ্জীবিত করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ‘চতুর্দশ পাঁচসালা পরিকল্পনা’ ও ‘২০৩৫ সাল পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য’ নির্ধারণ করার সময় চীন সরকার ইন্টারনেটের মাধ্যমে ১০ লাখেরও বেশি মতামত ও পরামর্শ সংগ্রহ করেছে।

 

ব্রিটেনের লন্ডন শহরের অর্থনীতি ও ব্যবসা নীতি বিষয়ক সংস্থার সাবেক প্রধান জন রোস বলেছেন যে, চীন এমন একটি ব্যবস্থা বেছে নিয়েছে যা সত্যিকার অর্থে মানুষের জীবনের মান উন্নত করতে পারে। অন্য কথায়, চীনে জনগণের দ্বারা শাসনের ধারণাটি খুবই বাস্তবসম্মত। উদাহরণস্বরূপ, চীন সফলভাবে ৮৫ কোটি মানুষকে দারিদ্র্যমুক্ত করেছে। এটি ইতিহাসে বিরল ঘটনা।  অথচ ১৯২৯ সালে চীন ছিল বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর অন্যতম। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)