ডিসেম্বর ৮: চীনের মহাকাশ গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গতকাল (মঙ্গলবার) শেনচৌ-১২ মানববাহী মহাকাশযানের তিন নভোচারীকে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে হাজির করে। প্রেস ব্রিফিংয়ে দেখা যায়, মহাকাশে দীর্ঘকাল থাকার পর পৃথিবীতে ফিরে আসা নভোচারীদের শারীরিক অবস্থা এখন চমত্কার। মহাকাশচারী নিয়ে হাই শেং প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ভবিষ্যতে চীনের মহাকাশ স্টেশনে সাধারণ মানুষও যেতে পারবে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে চীনের মহাকাশ গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা জিং হাই ফেং তিন নভোচারীর বর্তমান অবস্থা ও পরবর্তী কর্মসূচি সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করেন। তিনি বলেন, শেনচৌ-১২ মিশন পুরোপুরি সফল হয়েছে। তিন নভোচারী মানসিকভাবে সুস্থ আছেন, তাদের অবস্থা বেশ ভালো। তাদের ওজন মহাকাশে যাওয়ার আগের পর্যায়ে ফিরে এসেছে। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গও স্বাভাবিকভাবে কাজ করছে। বর্তমানে তাঁদেরকে বিভিন্ন ধরনের চিকিত্সা-পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে এবং সংশ্লিষ্ট ডেটা সংগ্রহ করা হচ্ছে। এসব পরীক্ষা ও মূল্যায়নের পর তিন মহাকাশচারী স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন। ৱ
মহাকাশচারী নিয়ে হাই শেং তিন বার মহাকাশে গিয়েছেন এবং দুই বার মহাকাশে হেঁটেছেন ও সংশ্লিষ্ট দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বলেন, চীনের মহাকাশ শিল্প আরও উন্নত হবে এবং একের পর এক নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করবে। চীন এ খাতে আরও সাফল্য অর্জন করবে।
তিনি আরও বলেন, চীনা মানুষ মহাকাশ-অনুসন্ধানের আরও সামনে এগুবে। যখন চীনের নিজের মহাকাশ স্টেশনের নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষে হবে, তখন দেশি-বিদেশি সাধারণ মানুষও মহাকাশ স্টেশনে যেতে পারবেন।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষই চীনের নিজস্ব মহাকাশ স্টেশান সম্পর্কে আগ্রহী। এ সম্পর্কে মহাকাশচারী লিউ পো মিং বলেন, মহাকাশে ঘুমানো পৃথিবীর মতো নয়, সম্পূর্ণ ভিন্ন। তিন মহাকাশচারীর ঘুমানোর ধরনেও ভিন্নতা ছিল। তিনি নিজে ঘুমানোর ব্যাগে ঘুমাতেন, নিয়ে হাই শেং কেবিনে ভাসমান অবস্থাতেই ঘুমতেন। তবে তাঁদের ভালোই ঘুম হতো। কোনো কোনো সময় তিনি ঘুমের মধ্যে স্বপ্নও দেখেছেন। যেমন, কেবিনের বাইরে যাওয়ার আগে ঘুমে তিনি এলিয়েনদের সাথে যোগাযোগের স্বপ্ন দেখেছেন। তিন নভোচারী সবসময় নিজেদের স্বপ্ন নিয়ে আলোচনা করতেন। বিষয়টা খুবই মজার ছিল।
২০২১ সাল প্রায় শেষ হতে চলেছে। আগামী বছরের প্রত্যাশা নিয়ে মহাকাশচারী ইয়াং হং পো বলেন, পরিবারের সাথে আরও বেশি সময় কাটাতে চান তিনি। অবশ্যই আবারও মহাকাশে যেতে চান তিনি। তিনি বলেন, আসলে এবারের মহাকাশে দায়িত্ব পালন করার জন্য তিনি প্রচুর সময় ও শক্তি ব্যয় করেছেন। তিনি একজন মাতা হিসেবে সন্তান ও পরিবারের সঙ্গে খুবই কম সময় কাটাতে পেরেছেন। এবারের ছুটিতে তিনি পরিবারের সঙ্গে থাকবেন। তাঁর সন্তানের কাছে তিনি অনেক বেশি ঋণী। তিনি আশা করেন, আবার মহাকাশে যাওয়ার সুযোগ তার হবে। তবে বর্তমানটা হলো পরিবারের সঙ্গে কাটানোর জন্য। (ছাই/আলিম/স্বর্ণা)