ডিসেম্বর ৭: চীনা প্রধানমন্ত্রী লি খ্য ছিয়াং গতকাল (মঙ্গলবার) বেইজিংয়ে বিশ্ব ব্যাংকের প্রধান ডেভিড মালপাস, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের প্রধান ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মহাপরিচালক এনগোজি ওকোন্জো আইওয়েলা, বিশ্ব শ্রম সংস্থার প্রধান গাই রাইডার, অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থার মহাসচিব ম্যাথিয়াস কোরম্যান, এবং আর্থিক স্থিতিশীলতা পরিষদের প্রধান ক্লাস নটের সঙ্গে অনলাইনে ষষ্ঠ ‘১+৬’ গোলটেবিল সংলাপে অংশগ্রহণ করেন। এবারের সংলাপের মূল প্রতিপাদ্য ছিল: ‘বিশ্বের অর্থনীতির উন্নয়ন, সমেত ও টেকসই প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিতকরণ: পুনরুদ্ধার থেকে পুনর্গঠন’। তাঁরা বিশ্বের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, কোভিড-১৯ মহামারীর পর টেকসই উন্নয়ন এবং চীনা অর্থনীতির স্থিতিশীল উন্নয়নের বিষয় নিয়ে মত বিনিময় করেন।
সংলাপে লি খ্য ছিয়াং বলেন, বর্তমান বিশ্বের অর্থনীতি স্থিতিশীলভাবে পুনরুদ্ধার হচ্ছে, তবে চালিকাশক্তি দুর্বল এবং অস্থিতিশীলতার কারণ প্রচুর। এর ফলে স্বাভাবিক অবস্থায় পুনরুদ্ধার হতে অনেক বেশি সময় লাগবে। চলতি বছর জটিল বৈদেশিক পরিস্থিতি ও দেশের অর্থনীতির বৃদ্ধির গতি কম হওয়ার প্রেক্ষাপটে, চীন কোভিড-১৯ মহামারী প্রতিরোধ এবং সমাজ ও অর্থনীতি উন্নয়নের চেষ্টা করে এসেছে। চেষ্টার মাধ্যমে চীনা জনগণের জীবনমান ঠিক রাখা সম্ভব হয়েছে। চীনের চলতি বছরের মূল লক্ষ্যগুলো পূরণের সামর্থ্য রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চীনা অর্থনীতি বিশ্বের অর্থনীতির সঙ্গে মিলে-মিশে আছে। চীন উন্মুক্তকরণ আরও জোরদার করবে। চীন বিশ্বের সঙ্গে নিজের উন্নয়নের অভিজ্ঞতা শেয়ার করবে।
তিনি বলেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থাকে কেন্দ্র করে বহুপক্ষীয় বাণিজ্যিক ব্যবস্থা সুরক্ষা করতে হবে, যাতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে উদারীকরণ ও সহজীকরণ বাস্তবায়ন করা যায়। এ ছয়টি আন্তর্জাতিক সংস্থা হলো বিশ্বের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার সংগ্রামের প্রধান সমর্থক এবং বহুপক্ষবাদ ও অবাধ বাণিজ্য সুরক্ষার প্রধান শক্তি। বিশ্ব অর্থনীতির স্থিতিশীল পুনরুদ্ধারের জন্য একটি ভাল পরিবেশ তৈরি করতে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ ও সহযোগিতা জোরদার করতে ইচ্ছুক চীন।
সাংলাপে অংশগ্রহণকারীরা মহামারী প্রতিরোধ ও অর্থনীতি উন্নয়নের ক্ষেত্রে অর্জিত সাফল্যের জন্য চীনের প্রশংসা করেন। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার প্রধান গাই রাইডার বলেন, ‘আমাদের অভিন্ন দায়িত্ব পালন করতে হবে। আমি চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের উদ্যোগে বিশ্ব উন্নয়ন প্রস্তাবের প্রশংসা করি। আমাদের উচিত বিশ্বজুড়ে সমঝোতা ও একীকরণ জোরদার করে বর্তমানের বিভিন্ন চ্যালঞ্জ মোকাবিলা করা।’
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের প্রধান ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সমাজকে উন্নয়নশীল দেশগুলো বিশেষ করে নিম্ন আয়ের দেশগুলোকে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সহায়তা করতে হবে। এ খাতে চীন ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে।’
চলতি বছর হলো চীনের বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় যোগদানের ২০তম বার্ষিকী। ২০ বছরে চীন ভালভাবে নিজের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেছে। চীন নিজের উন্নয়ন বাস্তবায়নের পাশাপাশি বিশ্বের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করেছে। চীন টানা ১২ বছর ধরে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার। এ সম্পর্কে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার প্রধান এনগোজি ওকোঞ্জো আইওয়েলা বলেন, ‘আসলে চীন হলো বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নেতা। চীনের উন্নয়ন অন্যান্য দেশের জন্য সুযোগ। চীন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সংস্কারকে সমর্থন করার ক্ষেত্রে নেতৃত্বাধীন ভূমিকা পালন করে যাবে বলে আশা করা যায়।’ (ছাই/আলিম/স্বর্ণা)