ডিসেম্বর ৬: সম্প্রতি চীনের শিল্প ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় চতুর্দশ পাঁচসালা পরিকল্পনার আওতায় ‘শিল্পের সবুজ উন্নয়ন পরিকল্পনা’ প্রকাশ করেছে। পরিকল্পনায় বলা হয়, ২০২৫ সালে শিল্প-সংযোজিত মূল্যের ইউনিটপ্রতি কার্বন-ডাই-অক্সাইডের নির্গমন ১৮ শতাংশ কমবে; লোহা ও ইস্পাত, অ-লৌহ ধাতু এবং ভবনের নির্মাণ-উপকরণসহ মূল শিল্পের মোট কার্বন নির্গমন ধীরে ধীরে কমিয়ে আনা হবে।
চীনের শিল্প-খাত কার্বন শিখর ও কার্বন নিরপেক্ষতার লক্ষ্য অর্জনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিল্প ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জ্বালানিসম্পদ সাশ্রয় ও বহুমূখী ব্যবহার বিভাগের পরিচালক হুয়াং লি পিন বলেন, চতুর্দশ পাঁচসালা পরিকল্পনা বাস্তবায়নকালে শিল্প ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, কার্বন শিখর ও কার্বন নিরপেক্ষতার লক্ষ্য অনুযায়ী, শিল্প উন্নয়ন ও কার্বন নির্গমন হ্রাসকল্পে সামগ্রিক ও আংশিক, স্বল্প-মেয়াদী ও মধ্য থেকে দীর্ঘমেয়াদী ব্যবস্থাদির মধ্যে সম্পর্ক সমন্বয় ও ব্যবস্থাপনা করা হবে। হুয়াং আরও বলেন,
“উত্পাদন শিল্পে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, উত্পাদন-চেইন ও সরবরাহ-চেইনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ভোক্তা-সন্তুষ্টি যুক্তিসঙ্গত পর্যায়ে ধরা রাখার পাশাপাশি, কার্বন শিখর ও কার্বন নিরপেক্ষতার লক্ষ্যের ভিত্তিতে শিল্প-উত্পাদনের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া পরিচালিত করতে হবে। জ্বালানিসম্পদের সাশ্রয়ের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। উদ্ভাবনকে প্রথম চালিকাশক্তি হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। ভালভাবে সরকার ও বাজারের মধ্যে সম্পর্ক মোকাবিলা করতে এবং উত্পাদিত শিল্পের সবুজ ও নিম্ন কার্বন কাঠামোয় পরিবর্তন এবং উচ্চ মানের উন্নয়ন জোরদার করতে হবে।”
পরিসংখ্যান অনুসারে, ‘দ্বাদশ পাঁচসালা পরিকল্পনা’ বাস্তবায়নকালে বড় আকারের শিল্প-প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি ইউনিটপ্রতি জ্বালানিসম্পদ ব্যবহারের পরিমাণ হ্রাস পেয়েছিল। এখন ত্রয়োদশ পাঁচসালা পরিকল্পনা বাস্তবায়নকালে আরও ১৬ শতাংশ কমেছে। শিল্প-সংযোজিত মূল্যের ইউনিটপ্রতি পানির ব্যবহার প্রায় ৪০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, চতুর্দশ পাঁচসালা পরিকল্পনা বাস্তবায়নকালে শিল্প ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় কার্বন শিখর ও কার্বন নিরপেক্ষতার লক্ষ্য অর্জনের জন্য জ্বালানিসম্পদের সাশ্রয় ও ব্যবহারের দক্ষতা উন্নত করাকে একটি মূল দায়িত্ব হিসাবে গ্রহণ করবে। এটি হবে শিল্প খাতে যুক্তিসঙ্গত, দক্ষ এবং সবুজ শক্তি ব্যবহার প্রচারের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়। এ সম্পর্কে শিল্প ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জ্বালানিসম্পদ সাশ্রয় ও বহুমূখী ব্যবহার বিভাগের উপপরিচালক ওয়াং স্যিয়াও ইয়াং বলেন,
“চতুর্দশ পাঁচসালা পরিকল্পনা বাস্তবায়নকালে আমরা ব্যাপকভাবে সমস্ত শিল্পে আরও বেশি জ্বালানিসম্পদ সাশ্রয় করব। তথ্যপ্রযুক্তি, ডিজিটাইজেশন, এবং স্মার্ট শক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে দক্ষতা বাড়ানো হবে। পাশাপাশি, নতুন অবকাঠামোর কার্যকারিতা ও সবুজায়ন উন্নয়ন করতে হবে।”
ওয়াং আরও বলেন, চতুর্দশ পাঁচসালা পরিকল্পনার মেয়াদে চীন শিল্পের সবুজায়ন উন্নয়নে ডিজিটাল প্রযুক্তির অগ্রণী ভূমিকার প্রতি আরও মনোযোগ দেবে। ডেটা ফাউন্ডেশন একত্রীকরণ, ডিজিটাল রূপান্তরকে ত্বরান্বিত করা এবং প্রয়োগের পরিস্থিতি তৈরি করার তিনটি দিক থেকে, ডিজিটাল অর্থনীতির নতুন সুবিধা শিল্প সবুজ এবং নিম্ন কার্বন রূপান্তরের জন্য নতুন চালিকাশক্তিতে রূপান্তরিত হবে। ৫জি, শিল্প ইন্টারনেট, ক্লাউড কম্পিউটিং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ডিজিটাল টুইনস এবং অন্যান্য নতুন প্রজন্মের তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে পণ্যের ডিজাইন, উত্পাদন, ব্যবহার, পুনর্ব্যবহার এবং অন্যান্য লিঙ্কের মধ্যে সমন্বয় করা হবে। শিল্প খাতে পরিমার্জিত ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়ন করা হবে এবং জ্বালানিসম্পদ ব্যবহারের দক্ষতা উন্নত করা হবে। (ছাই/আলিম/স্বর্ণা)