ডিসেম্বর ৩: ২০২১ সালের ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ফোরাম গতকাল (বৃহস্পতিবার) বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হয়। ৭৭টি দেশের সরকারি কর্মকর্তা, বাণিজ্যিক সমিতির প্রতিনিধি, সুপরিচিত কোম্পানির প্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিসহ ৬ শতাধিক লোক অনলাইন ও অফলাইনে ফোরামে অংশগ্রহণ করেন।
এদিকে চীনে আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত বলেছেন, আগামী বছর তাঁর দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগে যোগ দিবে বলে আশা করা হচ্ছে। চীনা ও বিদেশি রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক মহলের ব্যক্তি ও পণ্ডিতরাও প্রত্যাশা জানিয়েছেন যে, ডিজিটাল অর্থনীতি এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগ আরও বেশি ভূমিকা পালন করবে।
‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগ ২০১৩ সালে উত্থাপিত হওয়ার পর ৮ বছর কেটে গেছে। গত ৮ বছরে, চীন সক্রিয়ভাবে নতুন উন্নয়ন-ধারণা বাস্তবায়ন করেছে, এবং ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ বরাবর দেশ ও অঞ্চলের সাথে যৌথ উন্নয়ন ও জয়-জয় সহযোগিতা বাস্তবায়ন করেছে। এখন পর্যন্ত চীন ১৭০টিও বেশি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে ‘এক অঞ্চল, এক পথ’-এর আওতায় ২ শতাধিক সহযোগিতা নথি স্বাক্ষর করেছে।
এদিন ফোরামে, চীনে আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত চায়না মিডিয়া গ্রুপের সংবাদদাতাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাত্কারে উল্লেখ করেন যে, আর্জেন্টিনার সরকার সক্রিয়ভাবে ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগে যোগদানের প্রস্তুতি নিচ্ছে, এবং আগামী বছর আনুষ্ঠানিকভাবে ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ পরিবারে যোগ দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। তিনি বলেন,
“আজ ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগ একটি বৈশ্বিক উদ্যোগ। আর্জেন্টিনাও ‘মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি’ ধারণাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে। একই সময়ে ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগের মাধ্যমে, আমরা অবকাঠামোসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলিতেও মনোযোগ দিয়েছি। আর্জেন্টিনাসহ ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোকে তাদের নিজস্ব অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে। এ কারণে চীনের সাথে সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তা ছাড়া, দু’দেশের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কও অত্যন্ত ভালো, যা জয়-জয় সহযোগিতার একটি মডেল। যেমন, চীন আমাদের অবকাঠামো নির্মাণে সাহায্য করে। আমাদের লজিস্টিক অবস্থা, পরিবহন-অবকাঠামো এতে উন্নত হচ্ছে। তার পর আমরা আমাদের উচ্চ মানের কৃষি ও পশপালন পণ্য রফতানি করতে পারি। চীনে আমাদের রফতানি-ক্ষমতা বাড়াতে পারি। এটি সহযোগিতার একটি খুব আদর্শ অবস্থা।”
চীনে মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রদূত এদিন ফোরামে বলেন, গত ১২ বছর ধরে চীন মালয়েশিয়ার বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। তিনি আশা করেন, ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগের প্রেক্ষাপটে দু’দেশ ডিজিটাল রেশমপথসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়ন জোরদার করবে। তিনি বলেন,
“দু’দেশের সহযোগিতা ফলপ্রসূ। আমরাও প্রত্যাশা করছি যে অন্যান্য উদীয়মান ক্ষেত্রেও সহযোগিতা জোরদার করবো। যেমন, ডিজিটাল ‘রেশমপথ’, স্বাস্থ্য রেশমপথ’ ইত্যাদি। আমরা এই সময়ে বিশ্ব বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ফোরাম আয়োজন করছি, যা আমাদের আগামী বছর আরও ভালো অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক উন্নয়নের সুযোগ দেবে।”
আন্তর্জাতিক বণিক সমিতির অনারারি চেয়ারম্যানও একই ভাবে অনুভূতি প্রকাশ করেছেন। তিনি ‘এক অঞ্চল, এক পথ’-এর যৌথ নির্মাণে অর্জিত ফলাফলকে উচ্চ পর্যায়ের মূল্যায়ন করেন। তিনি বলেন, ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগকে আরও গভীরভাবে সমর্থন করতে হবে।
কোভিড-১৯ মহামারী বিশ্বব্যাপী এখনও ছড়িয়ে পড়ছে। ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চায়না ইনস্টিইউট অফ ইকোনমিক থট অ্যান্ড প্র্যাকটিস-এর ডিন ফোরামে ভিডিওয়ের মাধ্যমে লাইভ সংযোগের সময় উল্লেখ করেন, ‘এক অঞ্চল, এক পথ’-এর যৌথ নির্মাণ বিশ্বকে কোভিড-১৯ মহামারীতে সাড়া দিতে কার্যকরভাবে সাহায্য করতে পারে। বিভিন্ন দেশের উচিত বিশ্বায়নের নীতি মেনে চলা, উত্পাদন-ক্ষমতায় সহযোগিতা জোরদার করা, মহামারী-পরবর্তী যুগের বিভিন্ন সমস্যা যৌথভাবে মোকাবিলা করা, এবং মহামারীর পরে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য একত্রিত হওয়া।
(জিনিয়া/আলিম/শুয়েই)