ডিসেম্বর ২: চলতি বছর হলো বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় চীনের যোগদানের ২০তম বার্ষিকী। পাকিস্তানের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা বিভাগের যুগ্মসচিব ওমর হামিদ সম্প্রতি চায়না মিডিয়া গ্রুপকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেন, বিগত ২০ বছরে চীনের সার্বিক জাতীয় শক্তি ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় চীনের ভূমিকাও বেড়েছে। তিনি বলেন, বর্তমান বিশ্বে একতরফাবাদ বাড়ছে। এ আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে, পাকিস্তান চীনের সাথে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ন্যায্যতা ও বৈচিত্র্য রক্ষায় কাজ করে যেতে ইচ্ছুক।
ওমর হামিদ বলেন, গত ২০ বছর ধরে চীনের অর্থনীতি দ্রুত উন্নত হয়েছে; সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ অব্যাহত থেকেছে; এবং দেশটির মানুষ দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পেয়েছে। আর এর মাধ্যমে চীন সকল উন্নয়নশীল দেশের জন্য একটি মডেল হয়ে উঠেছে। হামিদ বলেন,
“আমি মনে করি চীনে বড় পরিবর্তন ঘটেছে এবং আজ দেশটির বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। চীনের সংস্কার বহু মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে এনেছে। চীন সব উন্নয়নশীল দেশের জন্য মডেলস্বরূপ।”
ওমর হামিদ বলেন, চীনের সার্বিক জাতীয় শক্তি বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় দেশটির প্রভাব বেড়েছে। বিশেষ করে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ন্যায্যতা ও বৈচিত্র্য বজার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে চীন। তিনি বলেন,
“আমি মনে করি, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় যোগদানের পর থেকে চীন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে উঠেছে। একই সময়ে, একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে, চীন উন্নয়নশীল দেশগুলির স্বার্থ রক্ষা করার পাশাপাশি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বৈচিত্র্য বজায় রাখতেও ভূমিকা রাখছে।”
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় প্রভাবের দিক দিয়ে চীন অনেক প্রভাবশালী দেশকে ছাড়িয়ে গেছে। কিছু দেশ চীনের বাণিজ্যকে নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, যা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ন্যায্যতার নীতির পরিপন্থি। ওমর হামিদ মনে করেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সংস্কার করা উচিত, এবং তা হওয়া উচিত ন্যায্যতা ও স্বচ্ছতার উপর ভিত্তি করে।
ওমর হামিদ বলেন, বর্তমানে একতরফাবাদ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে, যা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার কাজকে গুরুতরভাবে আঘাত করছে। এটি বন্ধ করা উচিত। চীন সর্বদা একটি বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আহবান জানিয়ে আসছে। পাকিস্তান চীনের সাথে কাজ করতে ইচ্ছুক। তিনি বলেন,
“শুধু বহুপক্ষবাদ শক্তিশালী উন্নত দেশগুলির দমনমূলক শাসন থেকে সৃষ্ট সমস্যার সমাধান করতে পারে। ছোট উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বাঁচানোর উপায় হলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা। একে অপরের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার প্রতিক্রিয়া ও কাজ পুনরুদ্ধারে অবদান রাখতে হবে, যা একতরফাবাদ ও সুরক্ষাবাদ থেকে এসব দেশের স্বার্থ রক্ষা করবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি যে, একতরফাবাদ এবং সুরক্ষাবাদের প্রবণতা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার প্রতিষ্ঠার আগে থেকেই ছিল। অতএব, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মূল উদ্দেশ্য হলো এই নেতিবাচক প্রবণতা দূর করা এবং একটি বহুপাক্ষিক ও স্বচ্ছ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। ”
(জিনিয়া/আলিম/শুয়েই)