নভেম্বর ২৯: এই বছর বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় চীনের যোগদানের ২০তম বার্ষিকী। গত ২০ বছরে চীন ক্রমাগত সংস্কার গভীরতর করেছে এবং উচ্চ-মানের উন্মুক্তকরণ এগিয়ে নিয়েছে। চীনের নিজস্ব অর্থনৈতিক শক্তি ও সামগ্রিক দেশীয় শক্তি উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে, চীন বিশ্বকেও বড় ধরনের উন্নয়নে সহায়তা দিয়েছে। এ বিষয়ে ইতালির রোমের দ্বিতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির সহযোগী অধ্যাপক আন্দ্রেয়া অ্যাপোলোনি চায়না মিডিয়া গ্রুপের সাংবাদিকের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাত্কারে বলেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় চীনের যোগদান বিশ্ব অর্থনীতিতে গভীর পরিবর্তন এনেছে। বিস্তারিত শুনুন আজকের সংবাদ পর্যালোচনায়।
২০০১ সালে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় যোগদানের পর থেকে, চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিশ্বকে তাক লাগানো সাফল্য অর্জন করেছে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি, পণ্য বাণিজ্যের বৃহত্তম দেশ এবং বৃহত্তম বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণকারী দেশে পরিণত হয়েছে। এ বিষয়ে ইতালির রোমের দ্বিতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির সহযোগী অধ্যাপক আন্দ্রেয়া অ্যাপোলোনি চায়না মিডিয়া গ্রুপের সাংবাদিকের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাত্কারে বলেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় যোগদানের পর, গোটা বিশ্বের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে চীনের গড় বার্ষিক অবদান প্রায় ৩০ শতাংশ হয়েছে, যা বিশ্ব অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি। যা শুধু চীনের উন্নয়নই নয়, বরং বিশ্ব অর্থনীতিতে গভীর পরিবর্তন এনেছে।
তিনি বলেন, “বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় যোগদান করা চীনের নিজের অর্থনৈতিক উন্নয়ন জোরদারের সঙ্গে, সারা বিশ্বের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যা বিশ্ব অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছে। চীন মধ্যবিত্ত জনসংখ্যার বৃহত্তম দেশ। বিশ্বের ১২০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলের বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার চীন। এটা বলা যেতে পারে যে বিশ্ব বাণিজ্যে এটা খুবই ইতিবাচক একটি পরিবর্তন।”
গত ২০ বছরে, চীনের অর্থনীতি বিশ্ব অর্থনীতিতে তার একীকরণের কাজ সম্পন্ন করেছে। টানা ৪ বছরের চীন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলা ইতালির কোম্পানিগুলির জন্য চীনা বাজারে প্রবেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম সৃষ্টি করেছে। অ্যাপোলোনি মনে করেন, খাদ্য, ওয়াইন, বিলাসদ্রব্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইতালির কোম্পানিগুলি ভবিষ্যতে চীনা বাজার উন্নয়নের সুযোগ পেয়েছে এবং ভবিষ্যতেও পাবে।
তিনি বলেন, “ইতালি হলো জি-৭ গ্রুপের মধ্যে প্রথম দেশ যা ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগে যোগ করেছে, এই উদ্যোগ চীন-ইউরোপ আর্থ-বাণিজ্যিক সম্পর্কে আরও কৌশলগত সহযোগিতার সুযোগ সৃষ্টি করবে। ইতালির কোম্পানিগুলিও চীনে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতার সুযোগ লাভ করবে।”
বর্তমান বিশ্ব অর্থনীতির পুনরুদ্ধার এখনও মহামারী, মুদ্রাস্ফীতি এবং সরবরাহ খাতের ঘাটতিসহ বিভিন্ন অনিশ্চিত কারণের সম্মুখীন হচ্ছে। একতরফাবাদ ও সুরক্ষাবাদ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মৌলিক নীতিগুলো গুরুতরভাবে লঙ্ঘন করেছে।
চীন সর্বদা দৃঢ়ভাবে বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে সমর্থন করে এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহজ করার জন্য কাজ করছে। অ্যাপোলোনি বলেন, অনেক চীনা কোম্পানি আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে বিশ্ব অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
তিনি বলেন, “চীন ভালোভাবে মহামারী নিয়ন্ত্রণ করেছে এবং উত্পাদন ও অভ্যন্তরীণ ভোগ খাত উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। অনেক অর্থনীতিবিদ উল্লেখ করেছেন যে, এটি হলো অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতা। চীনা কোম্পানিগুলি বিদেশের সঙ্গে সহযোগিতা করছে, কিছু দেশ সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে, তারা অর্থনীতি পুনরুজ্জীবনে সাহায্য করতে পারে। তাই এই পর্যায়ে চীনের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যেসব চীনা কোম্পানি বিদেশে বিনিয়োগ করে।”
(জিনিয়া/তৌহিদ/শুয়েই)