হাবিবুর রহমান অভি: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সবোর্চ্চ ব্যবহার করছে চীন। ভবন নির্মাণ থেকে শুরু করে করপোরেট অফিস, সব বিভাগেই সুফল বয়ে আনছে প্রযুক্তির নিত্য নতুন উদ্ভাবন। প্রকৌশল বিজ্ঞানের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের পরিশ্রমের সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভারসাম্যপূর্ণ ব্যবহার করে বিশ্বে অনন্য উদাহরণ তৈরি করেছে চীন।
অফিসের উঠবার সময় লিফটের জন্য অপেক্ষা করছেন। হঠাৎ করে লক্ষ্য করলেন একটি রোবটিক গাড়িটি জায়গা করে নিয়েছে আপনার পাশে, একই লিফটে।
এরপর অফিসে ঢুকে দেখলেন এই যন্ত্রটি আপনার জন্য প্রয়োজনীয় ফাইল এনে দিচ্ছে। এমনকি আপনার ফাইলটি সহকর্মীকে পাঠাতে চাইলেও সহযোগিতা করছে পারে এই রোবটিক মডিউল।
না, এটি বড় কোন গাড়ি নয়। অত্যাধুনিক চীনা ট্রাকের কনসেপ্ট থেকে বানানো হয়েছে এটি। আকারে ছোট ভার্সনের ক্যারিয়ার ভেহিকল। অফিসের ছোট ছোট কাজ থেকে শুরু করে বড় পরিসরে সব ধরনের কাজেই এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সবোর্চ্চ ব্যবহার করছে চীন।
হাতের কোন রকম স্পর্শ ছাড়াই ডেস্কে গিয়ে বসতে পারবেন আপনি। কারণ অফিসে এসেই দেখবেন একের পর এক দরজা খুলে যাচ্ছে, আর স্বয়ংক্রিয়ভাবে জ্বলে উঠছে লাইট। এমনকি কনফারেন্স রুমে রাউন্ডটেবিল মিটিংয়ের সময় আপনার শরীরের তাপমাত্রা বুঝে প্রয়োজনীয় বাতাস সরবার করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্প্ন্ন এয়ার কন্ডিশান।
প্রকল্পের দক্ষ প্রকৌশলীরা বলছেন, নির্মাণ কাজের একদম শুরুতে, প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়। সবমিলিয়ে খুব কম সময়ের মধ্যেই ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ করা সম্ভব হয়।
এই ল্যান্ডমার্ক ভবন নির্মাণের কাজ চলছে চীনের শেনচেন শহরে। নির্মাণ কাজের প্রশাসনিক প্রধান প্লানিং অ্যান্ড ডিজাইন ডিপার্টমেন্ট অফ টেনসেন্টের জেনারেল ম্যানেজার।
ওয়ান ছাও
‘ওয়ান ছাও বলেন, “যেকোন ভবন তৈরির আগেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করছি আমরা। এজন্য দীর্ঘ সময় আলোচনা করতে হয়। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে বিশেষ করে গুরত্ব দেয়া হয় চৌকশ প্রকৌশলীদের।
ওয়ানের টিমে রয়েছে বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠানে কাজ করে আসা একদল উদ্যমী তরুণ। যারা নিজের দেশকে তথ্যপ্রযুক্তির মানচিত্রে শক্ত অবস্থানে নিয়ে যেতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।
বিশ্ব বিখ্যাত ডিজাইনার রবার্ট মানকিন কাজ করেছেন গুগল, অ্যামাজন ও স্যামসাংসহ জনপ্রিয় কোম্পানীতে। চীনে এসে ভবন নির্মাণের কাজ করতে গিয়ে এক রকম অভিজ্ঞতা হয়েছে তার।
রবার্ট মানকিন
“বিশ্বে সম্ভবত প্রথমবারের মতো এতো নিখুঁতভাবে ভবন তৈরী হচ্ছে চীনে। যা সত্যিই সাহসী এক পদক্ষেপ। প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো নজর দিয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায়। আর দক্ষ প্রকৌশলীর তত্ববধায়েন তৈরি হচ্ছে স্টাইলিশ সব ভবন।“
প্রকৌশল বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের পরিশ্রমের সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভারসাম্যপূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিত করা হচ্ছে প্রতিটি প্রকল্পেই। আর এভাবেই অত্যাধুনিক আর নান্দনিক ভবন তৈরী করে পুরো বিশ্বকে প্রতিনিয়ত তাক লাগিয়ে দিচ্ছে চীন।