নভেম্বর ১৯: গতকাল (বৃহস্পতিবার) চীনের জাতিসংঘ সমিতি এবং চীনের গণ কূটনৈতিক সমিতি অনলাইনে যৌথভাবে ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত পর্যালোচনা করা এবং ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচার রক্ষা করা: জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ২৭৫৮ নম্বর প্রস্তাবের গুরুত্বপূর্ণ তাত্পর্য’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনার আয়োজন করে। সেমিনারে অংশগ্রহণকারী দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরা বলেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ২৭৫৮ নম্বর প্রস্তাবে চিহ্নিত আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নিয়মগুলো বিকৃত বা চ্যালেঞ্জ করা উচিত নয়। এই প্রস্তাব বিকৃত করা এবং ‘একচীন নীতি’কে উপেক্ষা করা গ্রহণযোগ্য হবে না।
১৯৭১ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ২৬তম অধিবেশনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে ২৭৫৮ নম্বর প্রস্তাব গৃহীত হয়। এতে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের সমস্ত অধিকার পুনরুদ্ধার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং স্বীকার করে নেওয়া হয় যে, গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের সরকারের প্রতিনিধিত্ব হচ্ছে জাতিসংঘে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের শুধুমাত্র বৈধ প্রতিনিধিত্ব। এর একটি ঐতিহাসিক তাত্পর্য রয়েছে।
চীনের গণ কূটনৈতিক সমিতির প্রধান এবং চীনের জাতিসংঘ সমিতির প্রধান ওয়াং ছাও এবারের সেমিনারে বলেন, ‘একচীন নীতি’ হচ্ছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ২৭৫৮ নম্বর প্রস্তাবে চিহ্নিত আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নিয়ম, এটি কখনও বিকৃত করা বা চ্যালেঞ্জ করা উচিত নয়। এই সম্পর্ক তিনি বলেন
“জাতিসংঘের সকল সদস্যদেশের উচিত ‘জাতিসংঘ সনদ’ –এর বিষয় এবং জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ২৭৫৮ নম্বর প্রস্তাব মেনে চলা, সকল দেশের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো, এবং একে অপরের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না-করাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নিয়ম অনুসরণ করা। কোনো উপায়ে জাতিসংঘে তাইওয়ানের যোগদানকে কোনোভাবেই সমর্থন করা উচিত হবে না। অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা, যেগুলোতে কেবল সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলো যোগ দিতে পারে, সেখানেও তাইওয়ানের অংশগ্রহণ থাকতে পারে না।”
যাইহোক, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে, কয়েকটি দেশ ও তাইওয়ানের ‘মিন চিন’ পার্টি এই সত্যকে উপেক্ষা করে ২৭৫৮ নম্বর প্রস্তাব লঙ্ঘন করে আসছে। তথাকথিত ‘জাতিসংঘের সিস্টেমে তাইওয়ান যোগ দিতে আগ্রহী’ শীর্ষক বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে আন্তর্জাতিক সমাজে তথাকথিত ‘একচীন, এক তাইওয়ান’ ধারণা সৃষ্টি করা ও ‘একচীন নীতি’র জন্য চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া, যা আন্তর্জাতিক আইন ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নিয়মের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। গায়ানার সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড লা মোটা বলেন
“যদিও তারা ১৯৭১ সালে ভয়ানকভাবে পরাজিত হয়েছিল, তবুও তারা তাইওয়ানের স্বাধীনতার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের পদক্ষেপ আঞ্চলিক উত্তেজনা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে নেওয়া হচ্ছে। এটি একটি নির্লজ্জ উস্কানি এবং বেআইনি কাজ। আজকের সেমিনারে, আমাদের পুনর্ব্যক্ত করা উচিত যে, তাইওয়ান চীনের একটি প্রদেশ, যা মূল ভূখণ্ডের সাথে একীভূত হওয়া উচিত।”
বছরের পর বছরের অনুশীলন সম্পূর্ণরূপে প্রমাণ করে যে, জাতিসংঘ এবং এর সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদেশগুলো স্বীকার করে যে, বিশ্বে কেবল একটি চীন আছে এবং তাইওয়ান চীনা ভূখণ্ডের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাইওয়ানের ওপর চীনের সার্বভৌমত্বের অনুশীলনকে সম্পূর্ণভাবে সম্মান করতে হবে। এই নীতিমালা অর্ধেক শতাব্দী আগে আন্তর্জাতিক সমাজে সর্বজনীনভাবে স্বীকৃতি পেয়েছিল। মিসরের সাবেক উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী শিফনি বলেন
“জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ২৭৫৮ নম্বর প্রস্তাব একটি প্রতিষ্ঠিত সত্য। ‘একচীন নীতি’ অব্যাহতভাবে সমর্থন পেতে থাকবে। তাইওয়ান প্রণালীর দু’তীরের ঐক্য সময়ের ব্যাপার মাত্র।” (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)