আকাশ: সুপ্রিয় শ্রোতা, সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠানে। আপনাদের আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমাদের সাপ্তাহিক আয়োজন ‘রোববারের আলাপন’। আপনাদের সঙ্গে আছি এনাম এবং আকাশ।
এনাম ভাই, আপনি স্বল্প দূরত্বের দৌড় পছন্দ করেন? ছোটবেলায় তা করেছেন? চীনের স্কুলগুলোতে স্বল্প বা বেশি দূরত্বের দৌড় প্রশিক্ষণ ও প্রতিযোগিতা হয়। স্কুলগুলো একে অনেক গুরুত্ব দেয়। এখনো আমার মনে আছে, শিক্ষক আমাদের প্রতিদিন দীর্ঘ পথ দৌড়াতেন। আপনার কি এই ধরণের কোনো স্মৃতি বা মজার গল্প রয়েছে? যা আমাদের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন।
এনাম:...
আকাশ: আচ্ছা, তাহলে আজ আমরা দৌড়ের একটি গল্প আমাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করব, কেমন?
বন্ধুরা, গত পয়লা আগস্ট টোকিও অলিম্পিক গেমসের পুরুষদের ১০০ মিটার দৌড় প্রতিযোগিতার ফাইনালে চীনের দৌড়বিদ সু পিন থিয়ান নয় সেকেন্ডে ৯৮ মিটার অতিক্রম করে রেকর্ড গড়ে প্রতিযোগিতায় ষষ্ঠ হন। তিনি এশিয়ার খেলোয়াড়দের জন্য নতুন ইতিহাস রচনা করেন।
আজ আমরা আপনাদের তাঁর গল্প শোনাব, কেমন?
গত পয়লা আগস্ট টোকিও অলিম্পিক গেমসের পুরুষদের ১০০ মিটার দৌড় প্রতিযোগিতার ফাইনালে চীনের দৌড়বিদ সু পিন থিয়ান নয় সেকেন্ডে ৯৮ মিটার অতিক্রম করে রেকর্ড গড়ে প্রতিযোগিতায় ষষ্ঠ হন। তিনি এশিয়ার খেলোয়াড়দের জন্য নতুন ইতিহাস রচনা করেন। তার আগে আয়োজিত সেমিফাইনালে তিনি ৯ সেকেন্ডে ৮৩ মিটার অতিক্রম করে রেকর্ড গড়েন। এটিও এশিয়ার খেলোয়াড়দের গড়া একটি নতুন রেকর্ড।
সু পিং থিয়ানের বর্তমান বয়স ৩২ বছর। স্বল্প দূরত্বের দৌড়ের সেরা সময় তিনি ইতোমধ্যে পার করে এসেছেন। তবে তিনি সফলতা অব্যাহত রেখেছেন। এর পিছনের রহস্য কী? কোন সন্দেহ নেই, তার আত্ম-শৃঙ্খলা এবং আত্মবিশ্বাসই এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
তাঁর কাছের বন্ধুরা বলেন, সু পিং থিয়ান কখনো ধুমপান করেন না। বাইরের খাবার খান না। শপিং মলে গিয়ে দামি জিনিসও কিনতে পছন্দ করেন না। তিনি সারা দিন প্রশিক্ষণ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন।
সু পিং থিয়ানের বড় ভাই বলেন, প্রতিবার পার্টির সময়, সবাই অনেক খেয়ে থাকেন। তবে সু পিন থিয়ান কখনো উল্টাপাল্টা কিছুই খান না।
কুয়াং তোং প্রদেশের খেলোয়াড় দল অথবা জাতীয় খেলোয়াড় দলের প্রশিক্ষণের সময়, খাবারের বেলায় খেলোয়াড়গণ অনেক কঠোর নিয়ম মেনে চলেন। তবে ছুটিতে বাসায় ফিরে, অনেকে একটু আয়েশ করে থাকেন। কিন্তু সু পিং থিয়ান ছুটিতে বাসায় ফিরেও কঠোরভাবে সংশ্লিষ্ট নীতিমালা মেনে চলেন।
অন্যদিকে, প্রশিক্ষণের সময় প্রথমবার ১০ সেকেন্ডের মধ্যে রেকর্ড গড়ার পর, প্রতিদিন ঘুমানোর আগে তিনি দৌড়ের সব প্রক্রিয়া পর্যালোচনা করেন। শরীরকে একই তালে এবং স্পন্দনে অভ্যস্ত করার চেষ্টা করেন। তিনি প্রশিক্ষণে অনেক একনিষ্ঠ। অভিজ্ঞতা যোগ করা, বই পড়া এবং প্রশিক্ষণ তিনি পছন্দ করেন। দৌড়ের সব পদ্ধতি প্রয়োগে তিনি চেষ্টা করেন।
তার উচ্চতা ১৭২ সেন্টিমিটার। তাই তিনি পদক্ষেপের বেলায় তেমন সুবিধা পান না। এ সমস্যা মোকাবিলা করতে তিনি আরো কঠোর প্রশিক্ষণ নেন। বছরের পর পছর ধরে শুধু একটি কাজের পুনরাবৃত্তি করতে থাকেন। অধিকাংশ লোকেরা আশাহত হয়ে যায়, তবে, আত্ম-শৃঙ্খল মানুষদের জন্য এটিই হচ্ছে সাফল্যের একমাত্র ভিত্তি।
শরীর সুস্থ রাখতে সু পিন থিয়ান তাঁর জীবনে অনেক আত্ম-শৃঙ্খলা এনেছেন। তিনি রোজ সকাল ৭টায় ওঠেন, এবং রাত ১১টায় সময়মত ঘুমাতে যান। ঘুমানোর আগে তিনি মোবাইল বন্ধ করেন। বিছানায় তিনি কখনো মোবাইল দেখেন না।
নিজের প্রশিক্ষণ তিনি কখনো গোপন করেন না। যারা স্বল্প দূরত্বের দৌড় পছন্দ করেন, তাদেরকে তিনি মাঝে মাঝে কিছু কৌশল শিক্ষা দেন। তাঁর সামাজিক যোগাযোগা মাধ্যমের অ্যাকাউন্টে নিয়মিত তিনি প্রশিক্ষণের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। আত্ন-শৃঙ্খলা তাঁর অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। ফলে সু পিন থিয়ান সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে সক্ষমতা অর্জন করেছেন। তাঁকে আমরা অভিবাদন জানাই।