'চকচকে লাল তারা'
2021-11-11 09:38:07

'চকচকে লাল তারা'_fororder_红星1

'চকচকে লাল তারা'_fororder_红星2

'চকচকে লাল তারা'_fororder_红星3

'চকচকে লাল তারা'_fororder_红星4

গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের দোলনা হিসেবে পরিচিত চিয়াংসি প্রদেশের রুইচিন শহরের উদ্যোগে নির্মিত বিরাটাকারের অরিজিনাল মিউজিক্যাল অনুষ্ঠান ‘চকচকে লাল তারা’ সম্প্রতি বেইজিংয়ে মঞ্চস্থ করা হয়। এই অনুষ্ঠানের প্রধান কর্মীদের গড় আয়ু ২৫ বছরেরও কম। তাদের যৌথ প্রচেষ্টায় এই ক্লাসিকাল শিল্পকর্ম রিমেক করার পর আবারও মঞ্চস্থ হয়।

‘চকচকে লাল তারা’ নামের উপন্যাসটি প্রকাশের পর উপন্যাসের প্রধান চরিত্র পান তোং চি দর্শকদের মনে গভীর দাগ কাটে। অগাস্ট ফাস্ট ফিল্ম স্টুডিওয়ের উদ্যোগে ১৯৭৪ সালে তৈরি একই নামের ফিচার ফিল্ম চীনে সুপরিচিত এবং প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে মানুষের ওপর প্রভাব ফেলেছে।

এ চলচ্চিত্রের কয়েকটি গানের মনোরম সুর কোটি কোটি মানুষের মনে স্থান করে নিয়েছে।

‘চকচকে লাল তারা’ নামের মিউজিক্যালে এমন একটি গল্প তুলে ধরা হয় যে, ১৯৩৪ সালে লাল ফৌজের লং মার্চের পর সেন্ট্রাল সোভিয়েত এলাকায় পান তোং চি নামে এক কিশোর স্থানীয় জনগণের সঙ্গে শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করা এবং ‘সাদা হররের’ মধ্যে টেম্পারিং এবং ধীরে ধীরে বড় হওয়ার গল্প ফুটে ওঠে। কঠিন ও কষ্টকর সংগ্রামে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যের মূল লক্ষ্য কীভাবে গ্রামীণ এক কিশোরের হৃদয়ে আদর্শের বীজ বপন করে- তা স্পষ্ট দেখা যায়।

সৃজনশীলতা বাস্তবায়নের সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরা হয়, অর্থাত্, ইতিহাস ও বাস্তবতার মধ্যে একই আবেদন খোঁজা হলো আমরা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এবং নতুন যুগে আমার মতো সাহিত্য ও শিল্পকর্মীদের নতুন চাহিদা।’ ‘চকচকে লাল তারা’ নামের মিউজিক্যালের চিত্রনাট্যকার ছাও ইউ এভাবেই বলছিলেন।

পাণ্ডুলিপিতে প্রধানত বেড়ে ওঠার ওপর ফোকাস করা হয়। উপন্যাসের ক্লাসিক চিত্রে নতুন যুগের তাৎপর্য তুলে ধরা হয়। কেন পান তোং চি সুস্থভাবে বেড়ে ওঠেন? কারণ বিপ্লবে ঝাঁপিয়ে পড়া বাবা মা তাকে যথেষ্ট ভালোবাসা ও স্বপ্ন দেখান। কেবল ভালোবাসাই ভালোবাসাকে এগিয়ে নিতে পারে এবং কেবল আদর্শই আদর্শকে আলোকিত করতে পারে।

মিউজিক্যালে পান তোং চি’র বাবা পান শিং ই লাল ফৌজে যোগ দেন। শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করার সময় তিনি আহত হন। অপারেশন করার সময় তিনি নিজে চেতনানাশক অন্যের হাতে তুলে দেন। বাবার আচরণে পান তোং চি ভীষণভাবে মুগ্ধ হয়। পান তোং চি’র মা নিজের বাস্তব পদক্ষেপের মাধ্যমে শত্রুদের বিরুদ্ধে পার্টি ও লাল ফৌজের সংগ্রামকে সমর্থন জানান এবং তার আচরণ সন্তানদের মনে গভীর প্রভাব ফেলে। বাবা লাল ফৌজের সঙ্গে স্থানান্তর হতে বাধ্য হন। চলে যাওয়ার আগে তিনি পান তোং চিকে একটি লাল তারা দিয়ে যান। এই ‘চকচকে লাল তারার’ কারণে অন্ধকারের পুরানো জগত্ ভেঙ্গে আলোকিত দিন দেখা যায় এবং পান তোং চি’র মনে বিপ্লবের বীজ রোপণ হয়। ফলে পান তোং চি আলোর পিছনে ছুটে চলা সেই মানুষে পরিণত হন।

সম্প্রতি বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত একটি আলোচনা সভায় বিশেষজ্ঞরা বলেন যে, ‘চকচকে লাল তারা’ নামে মিউজিক্যালে স্টাইলিশ ও শৈল্পিক পদ্ধতিতে লাল ক্লাসিক শিল্পকর্ম তুলে ধরা হয়েছে। ক্ল্যাসিকাল শিল্পকর্মের উত্তরাধিকার এবং উদ্ভাবনে বিপ্লবী আদর্শের প্রতি আকাঙ্ক্ষা ও সাধনা ফুটে ওঠে। সেই ‘উজ্জ্বল লাল তারা’কে শক্তিশালী আধ্যাত্মিক শক্তি দেয়; যা চীনা কমিউনিস্টদের মূল লক্ষ্য কিশোরদের হৃদয়ে ‘বিশ্বাসের শক্তি’ এবং ‘আদর্শের আলো’ প্রদান করে।

‘চকচকে লাল তারা’ নামের উপন্যাসের লেখক লি সিন থিয়েন বলেন, তার এ শিল্পকর্মে জীবন সম্পর্কে তার অভিজ্ঞতা, শিল্পের প্রতি তার সাধনা এবং কিশোরদের প্রতি তার আশার কথা বলা হয়েছে। ‘চকচকে লাল তারা’ নামের মিউজিক্যালে তরুণ দর্শকদের ইতিহাস বুঝিয়ে দেওয়া ও বিপ্লবী সংগ্রামের কষ্ট পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।

আজকের অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় আমরা ‘ইন দ্য মুড ফর লাভ’ নামে হংকংয়ের একটি চলচ্চিত্রের সঙ্গে পরিচিত হবো।

হংকংয়ের বিখ্যাত পরিচালক ওয়াং কার ওয়াই এ চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন। এ চলচ্চিত্রের প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে হংকংয়ের নামকরা অভিনেতা টোনি লেউং চিউ উয়াই ৫৩তম কান চলচ্চিত্র উত্সবের শ্রেষ্ঠ অভিনেতার খেতাব পান। ২০০৯ সালে সিএনএন এ চলচ্চিত্রটিকে ‘এশিয়ার শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র’ তালিকার প্রথম স্থানে নির্বাচন করে। ২০১৯ সালে ব্রিটেনের ‘The Guardian’ পত্রিকা এ চলচ্চিত্রটিকে ‘২১ শতকের শ্রেষ্ঠ একশ চলচ্চিত্রের’ পঞ্চম স্থানে নির্বাচন করে।

১৯৬০ এর দশকের হংকংয়ের কথা। এক লোক ও তার স্ত্রী একটি অ্যাপার্টমেন্টে ওঠেন। অন্য এক মহিলা তার স্বামীর সঙ্গে পাশের বাড়িতে ওঠেন। বাড়িওয়ালা উদার মনের মানুষ ও আড্ডাবাজ। লোকটি প্রতিদিন দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করেন, স্ত্রীর সঙ্গে প্রায় দেখা হয় না বললেই চলে। অন্যদিকে, মহিলাও দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করেন। তার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য; তারও নিজের স্বামীর সঙ্গে খুব একটা দেখা হয় না। তাদের নৈশভোজগুলো হয় বাড়ি থেকে দূরে ও একাকী। কিন্তু, সময় থেমে যায়, যখন আবদ্ধ দরজার পাশ দিয়ে তারা একে অন্যকে পাশ কাটিয়ে যান। প্রায়ই ধোঁয়াটে বসার ঘরে তাদের সঙ্গীদের অজান্তে তাদের চোখ একে অন্যকে দেখে। রসহীন বিয়ে চূড়ান্তভাবে তাদের ঠেলে দেয় একে অন্যের দিকে। 

প্রথমে তারা প্রলোভনের কাছে নতি স্বীকার করতে ইতস্তত বোধ করে। আর দশজনের মতো তারা কাছাকাছি হতে চায় না। শেষপর্যন্ত তারা নতি স্বীকার করে। একে-অন্যের প্রেমে পড়ে যায়। সবার চোখের আড়ালে তারা প্রায়ই হোটেল রুমে সাক্ষাৎ করে, না বলা কথা তাদেরকে অনুপ্রাণিত করে। বর্তমানই তাদের একমাত্র ভবিষ্যত, লড়াই যেন গোটা পৃথিবীর সাথে। বিবর্ণ রঙ, লাল রঙের দেয়াল, গোপন সাক্ষাৎকার, দোষী চাহনি, কাব্যিক ফ্রেমসমূহ, শৈল্পিক বৃষ্টি– তাদের গল্প যেন মহাকাব্যিক।

কিন্ত, ওয়াং কার ওয়াই এর চলচ্চিত্রটি তাদের নিয়ে নয়। বরং, 'ইন দ্য মুড ফর লাভ' নির্মিত তাদের সহজ-সরল সঙ্গী চৌ মু ইয়ুন  ও সু-লি চেন তথা মিসেস ছেনকে কেন্দ্র করে, যারা দ্রুতই বিশ্বাসঘাতকতার সূত্রে ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। তবু, মিস্টার চৌ-ও একজন লোক যিনি তার স্ত্রীর সাথে একটি অ্যাপার্টমেন্টে ওঠেন। আবার, মিসেস ছেনও একজন মহিলা যিনি তার স্বামীর সাথে পাশের বাড়িতে ওঠেন। তাদের ক্ষেত্রেও সময় ধীরে কাটে যখন তারা আবদ্ধ দরজা দিয়ে একে অন্যকে পাশ কাটিয়ে যান। 

'ইন দ্য মুড ফর লাভ'-এ নীরবতার কোনো স্থান নেই। এমনকি নীরবতার গুরুত্ব বোঝানো দৃশ্যগুলোতেও রয়েছে সঙ্গীত অথবা চারপাশের শব্দের ব্যবহার। এতে নীরবতার স্থান না থাকার কারণ হলো- চলচ্চিত্রটির মূলে রয়েছে স্মৃতিকাতরতা। ইংরেজিতে অনুবাদ করলে চলচ্চিত্রের নাম আসলে দাঁড়ায় 'ফ্লাওয়ারি ইয়ার্স' অথবা 'দ্য এজ অফ ব্লসম', যা নির্দেশ করে 'ইন দ্য মুড ফর লাভ' তৈরি হয়েছে স্মৃতিকাতরতার উপর ভিত্তি করে। 

শুরুতে 'ইন দ্য মুড ফর লাভ' এর গল্প লেখা হয়েছিল 'দ্য স্টোরি অফ ফুড' হিসেবে। অতীতের খুবই গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলোর একটি হলো সেই সময়ের খাবার। এ কারণে, স্মৃতিকাতরতার বহিঃপ্রকাশে খাবার অতীব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। গোটা চলচ্চিত্র জুড়ে আমরা দেখতে পাই মূল চরিত্রগুলো খাচ্ছেন, খাবার তৈরি করছেন অথবা খাবার কিনছেন। বিখ্যাত 'করিডোর গ্ল্যান্স' সিকোয়েন্স বাদে খাবার নিয়ে প্রতিটি দৃশ্য দর্শকদের সেই সময়কার খাদ্য সংস্কৃতির সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।

চলচ্চিত্রটির প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্য কোনো না কোনোভাবে খাবারের সঙ্গে জড়িত। খাবার অন্তরঙ্গতার একটি পথ এবং একইসাথে একজনের খাদ্যাভ্যাস সেই ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে অনেক কিছু বলে দেয় যা আমরা দেখেছি সু-লি চেন ও চৌ মু-ইয়ুন যখন তাদের সঙ্গীদের পরকীয়ার কারণ সন্ধান করতে শুরু করে তখন। আবার, এই দুজন নিজেদের আবদ্ধ ঘরে বসে থাকাকালে একাকিত্বের সম্মুখীন হলে এর থেকে বাঁচার পথ হিসেবে যখন খাবার আনাকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে একে অন্যের সাথে সাক্ষাৎ করেন, তার মাধ্যমেও আমরা দেখেছি চলচ্চিত্রে খাবারের গুরুত্ব। 

'ইন দ্য মুড ফর লাভ'-এ সঙ্গীত আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ওয়াং কার ওয়াই’র অন্যান্য চলচ্চিত্রগুলোয় সাধারণত ব্যতিক্রমহীনভাবে চীনা সঙ্গীতের ব্যবহারই বেশি দেখা যায়। কিন্তু এই চলচ্চিত্রে অন্যগুলোর তুলনায় সঙ্গীতের বাছাই একেবারে অনন্য। তিনি এতে মূলত ন্যাট কিং কোলের স্প্যানিশ ভাষায় গাওয়া কিছু গান ও কিছু কালজয়ী চীনা সঙ্গীত ব্যবহার করেছেন। গানগুলো কিংবা জাপানি সংগীতশিল্পী শিগেরু উমেবায়াসির ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক, দুইয়েরই মূল বিষয়বস্তু হারানো কোনোকিছুর জন্য আকুল আকাঙ্ক্ষা। স্মৃতিকাতরতার উপর ভিত্তি করে নির্মিত চলচ্চিত্রগুলোতে পূর্বের দিনগুলোর আনন্দ নির্দেশ করতে প্রায়ই নৃত্যের ব্যবহার দেখা যায়। কিন্তু এই সিনেমায় নেই কোনো নৃত্যের দৃশ্য। তবুও এর একটি সিকোয়েন্সকে ছন্দময়, দ্রুত সম্পাদনার মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে নৃত্যের সারাংশ। 

ওয়াং কার-ওয়াই এর চলচ্চিত্রগুলো বিখ্যাত তাদের সজীবতার জন্য, যা তিনি শিখেছেন তার গুরু প্যাট্রিক টামের কাছ থেকে। আলোচ্য সিনেমায় '৬০-র দশকের রাস্তা, অট্টালিকাগুলোর নির্মাণ একদম নিখুঁত। রাস্তাগুলো আধুনিক যুগের হাইওয়ের মতো নয়, সেগুলোর স্থানে স্থানে রয়েছে ফাটল। উয়াং তার শৈশব কাটান '৬০ ও '৭০ এর দশকের হংকংয়ে। তবে চলচ্চিত্রটির মূল চরিত্রগুলো হংকংয়ের হলেও তিনি নিজে শাংহাইয়ের মানুষ। তার শৈশবের দিনগুলোর সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যেগুলো একজন ব্যক্তি হিসেবে তার জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ, সেসবেরই বহিঃপ্রকাশ 'ইন দ্য মুড ফর লাভ'। কিন্তু তার দর্শকরা হংকং হোক কিংবা অন্য কোনো স্থানের হোক, তারা তো আর সেই সময়কার সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বৈশিষ্ট্যগুলো সম্পর্কে অবগত নন। তাহলে ওং কীসের মাধ্যমে তার শৈশব সম্পর্কে আমাদের পরিচিত করতে পারেন?

উত্তর হচ্ছে- পুনরাবৃত্তি ঘটানোর মাধ্যমে। পুরো দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি ঘটানো হয়েছে মাঝেমধ্যে এবং একই সিকোয়েন্স ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতিতে কয়েকবার করে দেখানো হয়েছে। যেমন- সু এবং চৌ একই ছায়াতলে বারবার দেখা করেছেন। এমন করার মূল লক্ষ্য দুটি- ১. তাদের সম্পর্কের কোন মুহূর্তে তারা রয়েছে দর্শকদের কাছে তা নির্দেশ করা, ২. রাস্তা ও অট্টালিকাগুলোর সাথে দর্শকদের পরিচয় করানো। পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে রাস্তা, নুডলসের দোকান, সিড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, ২০৪৬ এর করিডর- সব দর্শকের মনে জায়গা করে নেয়। গানগুলোর পুনরাবৃত্তি ঘটে, খাবারগুলোর পুনরাবৃত্তি ঘটে এবং ওং কার-ওয়াইয়ের মনের ভেতরকার পৃথিবী দর্শকের মনের ভেতরকার পৃথিবীতে রূপ নেয়।

চলচ্চিত্রে এমন একটি কথা আছে :That era has passed. Nothing that belonged to it exists anymore।

এই উক্তির মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে- পরিচালক ও দর্শকদের উভয়কেই নিজেদের অতীত ভুলে যেতে হবে। অতীত এখন সময়ের দখলে এবং পুষ্পময় দিনগুলোর শেষ হয়েছে। পুষ্পময় দিনগুলো সু এবং চৌ-কে অন্তরঙ্গতার সীমাবদ্ধতা ও অনুভূতি সম্পর্কে ভুল ধারণা জন্মাতে সাহায্য করেছে। এরপরই আসে নতুন যুগ, পরিপক্কতার যুগ, যেখানে আবেগ ও অনুভূতিগুলো লুকায়িত থাকে এক স্থির ভবিষ্যতের খোঁজে। কিন্তু সু অথবা চৌ- দুজনের কেউই অতীত ভুলে যেতে পারেননি। চলচ্চিত্রের শেষদিককার অনেক ঘটনাতেই দেখা যায় তারা পুষ্পময় দিনগুলোর স্মৃতির উপর নির্ভর করে দিন কাটাচ্ছেন। শেষপর্যন্ত, তারা দুজনেই ভবিষ্যতের দিকে তাকান বটে, কিন্তু অতীত ভুলতে না পেরে স্মৃতিকাতর হয়ে ওঠেন। 

আগে বলেছি,টোনি লেউং চিউ উয়াই এ চলচ্চিত্রে চৌ মু ইয়ুনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। ম্যাগি চিউং প্রধান নারী চরিত্র অথবা সু লি চেনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তাদের পারফরমেন্স ছিল অনবদ্য। এতে অভিনয়ের সুবাদে টোনি লেউং চিউ উয়াই জিতে নেন কান চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা অভিনেতার পুরস্কার। এর সিক্যুয়াল '২০৪৬'-এও তিনি মূল চরিত্রে অভিনয় করেন। তিন সিনেমাটোগ্রাফার ক্রিস্টোফার ডয়েল, কয়ান পাং-লিউং এবং মার্ক লি পিং-বিং ষাটের দশকের ব্রিটিশ হংকংয়ের সৌন্দর্য সুনিপুণভাবে তুলে ধরেছেন এতে। বিশেষ করে তাদের ক্যামেরায় বৃষ্টির কথা আলাদাভাবে বলতে হয়। পরিচারক ওয়াং-এর নিয়মিত কোলাবরেটর উইলিয়াম চ্যাং ছিলেন আর্ট ডিরেক্টর হিসেবে। সেই সময়কার হংকংয়ের চারপাশের পরিবেশ পুনরায় সৃষ্টিতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

লিলি/তৌহিদয/শুয়ে