হাবিবুর রহমান অভি, সিএমজি বাংলা: প্রাচীন কৃষি ব্যবস্থায় আধুনিক রূপ এনে দিতে স্যাটেলাইট প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করছে চীন। বিশেষ এই প্রকল্পে কাজ করছেন একসময়ের নাসা কর্মকর্তা চীনা নাগরিক চাং কং। বিশেষজ্ঞ টিমে আরও রয়েছেন আবহাওয়াবিদ থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা। সব মিলিয়ে চীনের এই উদ্যোগে উপকৃত হচ্ছেন স্থানীয় কৃষকসহ সব স্তরের জনগণ।
আপেল গাছে ফুল ফোটার জন্য সব মিলিয়ে সময় লাগে ৭ দিন। এই সময়টাই বেছে নিয়েছেন একসময়ের নাসা বিজ্ঞানী চীনা নাগরিক চ্যং কং।
শানসি প্রদেশের ছিয়ান ইয়াং কাউন্টির এই বাগানে ৬ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে লাগানো হয়েছে আপেল গাছ। ফুলের পরাগায়ন থেকে শুরু করে চাষাবাদের নানা পর্যায়ে ব্যবহার হচ্ছে ড্রোন। মাটির গুণাগুণ জেনে সর্বোচ্চ উৎপাদন নিশ্চিত করতে ব্যবহার হচ্ছে আধুনিক প্রযুক্তির সব ধরনের উদ্ভাবন।
সর্বোচ্চ ফলন নিশ্চিত করতে এই বিজ্ঞানী জানতে চান গাছের সংখ্যা। কিন্তু তার হাতে সময় আছে মাত্র ৭ দিন।
চাং কং, প্রতিষ্ঠাতা, জি এ জি ও
"ড্রোনের মাধ্যমে শুধু গাছের সংখ্যা নয়, একটি গাছে কি পরিমান ফুল ফোটে তাও জানা যায়। ফুলের সংখ্যা জানা গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটা থেকেই অনুমান করা যায় উৎপাদনের ভবিষ্যৎ।“
চাং কংয়ের বিশেষজ্ঞ টিমে কাজ করেন আবহাওয়াবিদ, কৃষিবিদ থেকে শুরু করে নাসা, সিলিকন ভ্যালিসহ বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠানে কাজের অভিজ্ঞতা আছে এমন কর্মকর্তারা।
“মানব চোখের পক্ষে এত পরিমাণ ফুলের সংখ্যা কম সময়ের মধ্যে নির্ণয় করা অসম্ভব ব্যাপার। তাই ড্রোনে ব্যবহার করেছি স্যাটেলাইট প্রযুক্তির ক্যামেরা। এতে করে কয়েক মিনিটের মধ্যেই আমরা বের করে ফেলতি পারি লাখ লাখ ফুলের সংখ্যা।“
পুরো বিশ্বকে তাক লাগানো স্যাটেলাইট প্রযুক্তি কৃষিজমিতে প্রয়োগ করেছে চীন। একইসঙ্গে ব্যবহার হচ্ছে স্যাটেলাইট ডেটা সিস্টেম। প্রকল্পের তরুণ কর্মকর্তারা মনে করেন, এসব প্রযুক্তি কৃষি ক্ষেত্রকে আধুনিকতার সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছে দিচ্ছে।
এই যন্ত্রটি শেকড়ের কাছাকাছি পুতে দেয়া হলে খুব সহজেই জানতে পারা যায় মাটির গুনাগুন। মনিটর পর্যবেক্ষণ করলেই বোঝা যায় মাটির আর্দ্রতা। আরও রয়েছে স্বয়ংক্রিয় সেচ ব্যবস্থা। মনিটরের এসব তথ্য ব্যবহার করে প্রকৃতির বৃষ্টির সঙ্গে সমন্বয় করে সব কিছুর মধ্যেই একটা ভারসাম্য রাখছেন কৃষি কর্মকর্তারা। তাদের মতে, মানসম্মত উৎপাদনের লক্ষ্যে সবকিছুর মধ্যেই রাখতে হয় পরিকল্পনা আর প্রযুক্তিগত কৌশল।
"যুক্তরাষ্ট্রে কৃষিপণ্য উৎপাদনের জন্য আছে বড় বড় জায়গা। একজন কৃষক চাইলেই সেখানে ফসলি পণ্য উৎপাদন করতে পারে। কিন্তু সেই একই মানুষের যদি কম পরিমাণ জমি থাকে, তাহলে সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ উৎপাদন প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। তবে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার আর দক্ষ জনবল থাকলে ছোট্ট জমিতেই বিপুল পরিমাণ শাকসবজি ফলমূল সবই উৎপাদন করা সম্ভব। চীন এই কাজটাই করছে "
কৃষি ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন এনে নিজ দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও সতেজ ও পুষ্টিকর ফলমূল পৌঁছানোর লক্ষ্য নিয়েই নিরলস কাজ করছেন তারা।
অভি/সাজিদ