নভেম্বর ৯: চতুর্থ চীন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলা শাংহাইয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মেলাটি অনলাইন এবং অফলাইনে চলছে। অংশগ্রহণকারীরাও লাইভস্ট্রিমিংসহ নানাভাবে মেলাকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরছেন। তাই একে পুরোপুরি ডিজিটাল মেলা বলা চলে। অনলাইন প্রযুক্তি মেলাকে করেছে বৈশিষ্ট্যময়।
চতুর্থ চীন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলার ছয়টি প্রদর্শনী এলাকা রয়েছে। খাদ্য ও কৃষিজাত দ্রব্যের প্রদর্শনী এলাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আধুনিক ডিজিটাল প্রযুক্তি দিয়ে ইন্টারনেটে ‘লাইভস্ট্রিমিং’ এবং ‘অনলাইন প্রদর্শনীর’ পদ্ধতিতে নিজেদের পণ্যকে আরো বেশি ক্রেতাদের কাছে তুলে ধরছে এবং বেশ ভালো মুনাফা অর্জন করছে।
আমদানি মেলা প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এবারের মেলার খাদ্য ও কৃষিজাত দ্রব্যের প্রদর্শনী এলাকায় প্রায় ১০০টি দেশের সহস্রাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। তাদের মধ্যে ৩০টি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ৫০০ প্রতিষ্ঠানের অন্তর্ভুক্ত। অনেক প্রদর্শনী স্টোরেই লাইভস্ট্রিমিং রুম রয়েছে। এর মাধ্যমে মেলায় অংশগ্রহণকারীরা যারা আমদানি মেলায় আসতে পারেনি, তাদের কাছে নিজেদের পণ্য অনলাইনে তুলে ধরছে।
অনেক খাদ্য ও কৃষিজাত দ্রব্যের পণ্যের প্রতিষ্ঠান প্রতিদিন বিকালে লাইভস্ট্রিমিং কক্ষ বা নিজেদের প্রদর্শনী স্টোরে অনলাইনে নেটিজেনদের কাছে নিজেদের পণ্য তুলে ধরেন। দ্যা ল্যান্ড দুধ কোম্পানির লাইভস্ট্রিমিং উপস্থাপিকা বলেন, লাইভস্ট্রিমিং ভালোভাবে নিজ কোম্পানির ব্র্যান্ডকে জনপ্রিয় করে তুলছে, এবং ভোক্তারা আরো সস্তায় নিজের প্রিয় পণ্য কিনতে পারছেন।
তিনি বলেন, আজকে সবাইকে জানাতে চাই যে, আমাদের এমন এক বিক্রয় পদ্ধতি রয়েছে, যাতে সবাই অনলাইনে আমাদের লাইভস্ট্রিমিং দেখতে পারেন। মেলার জন্য অনলাইনে আমাদের বিশেষ মূল্য ছাড় রয়েছে।
মহামারি প্রতিরোধ প্রস্তাব অনুযায়ী, মেলায় প্রবেশ করা সব পণ্যের, বিশেষ করে খাদ্য ও কৃষিজাত দ্রব্য, কঠোরভাবে পরীক্ষা করাতে হয়। যাতে নিরাপদভাবে বিভিন্ন পণ্য প্রদর্শন করা যায়। একদিকে দাম অনেক কম, অন্যদিকে নিরাপদ। এবারের আমদানি মেলায় ই-কমার্সের লাইভস্ট্রিমিং অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জন্য ভালো মুনাফা এনে দিয়েছে।
দ্যা ল্যান্ড দুধ কোম্পানীর লাইভস্ট্রিমিং উপস্থাপিকা বলেন, অনলাইনে অনেক বিক্রি হয়েছে। প্রতিদিন বিক্রির পরিমাণ সন্তোষজনক। অনলাইন অর্ডারের সংখ্যাও অনেক বেশি।
ল্যাকটালিস গ্রুপের চীনা বাজারের ম্যানেজার চুও চিয়ে মনে করেন, অনলাইন লাইভস্ট্রিমিং এবং অনলাইন প্রদর্শনী শুধু বিক্রির পরিমাণ বাড়াচ্ছে, এমন নয়; পাশাপাশি এটি ক্রেতাদের কাছে বিভিন্ন দেশের সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য এবং খাদ্যের অভ্যাস তুলে ধরতে পারছে। এর মাধ্যমে নতুন বাজার উন্মোচন হচ্ছে। তিনি বলেন,
কিছু কিছু পনির ফরাসিরা প্রতিদিন খায়, তবে তা হয়তো চীনাদের জন্য অনুকূল নয়। আমরা লাইভস্ট্রিমিং করি, একজন বাবুর্চি খুঁজে পেয়েছি, তিনি নিজেই একজন ফরাসি, কিন্তু তিনি চীনে অনেক বছর ধরে রয়েছেন। তিনি চীনাদের স্বাদ বেশ ভালো জানেন। তিনি ফ্রান্সের সংস্কৃতি চীনে নিয়ে আসতে চান, এবং চীনা ভোক্তাদের অভ্যাসও বুঝেন।
চীন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলার রাষ্ট্রীয় প্রদর্শন ব্যুরোর পশ্চিম এশিয়া এবং আফ্রিকা এলাকার কর্মকর্তা কুও ইং হুই জানান, অনলাইন প্রদর্শনীর আয়োজন সবচেয়ে অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের জন্য খুব সহায়ক। তিনি বলেন,
এবার অনলাইন রাষ্ট্রীয় প্রদর্শনীতে মোট ৫৮টি দেশ ও ৩টি আন্তর্জাতিক সংস্থা অংশ নিয়েছে। পনেরটি দেশ প্রথমবারের মত অনলাইন প্রদর্শনীতে দর্শকদের সঙ্গে হাজির হয়। তাদের মধ্যে পাঁচটি দেশ প্রথমবারের মত আমদানি মেলায় যোগ দিয়েছে। আর এর মধ্যে তিনটি হল সবচেয়ে অনুন্নত দেশ। অনলাইন রাষ্ট্রীয় প্রদর্শনীর আয়োজনের ফলে একদিকে করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাব এড়ানো যায়, অন্যদিকে সবচেয়ে অনুন্নত দেশও সহজেই মেলায় অংশ নিতে পারে। উন্নয়নশীল দেশও অনলাইন প্রদর্শনীতে অংশ নিতে আগ্রহী।
(শুয়েই/এনাম/জিনিয়া)