বিশ্বের প্রশংসা কুড়িয়েছে সিপিসির শত বছরের সাফল্য
2021-11-08 15:07:00

নভেম্বর ৮: চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) ১৯তম কেন্দ্রীয় কমিটির ষষ্ঠ পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন আজ (সোমবার) বেইজিংয়ে শুরু হয়েছে। সিপিসি প্রতিষ্ঠার শত বছরের গুরুত্বপূর্ণ এই সময়ে আয়োজিত পূর্ণাঙ্গ এই অধিবেশনে সার্বিকভাবে শত বছরে সিপিসির সংগ্রামে অর্জিত গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য ও ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতার সারসংক্ষেপ তৈরি করা হবে। সেসঙ্গে ওই সারসংক্ষেপের ভিত্তিতে ‘ইতিহাসের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যত উন্মোচনের’ গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক প্রস্তাব প্রণয়ন করা হবে।

 

একশ’ চল্লিশ কোটিরও বেশি জনসংখ্যাকে নেতৃত্বদানকারী বিশ্বের বৃহত্তম রাজনৈতিক পার্টি হিসেবে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি শত বছরের উন্নয়নে কী কী উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে? এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে সিপিসির কেমন প্রভাব রয়েছে? এসব বিষয়ে বিস্তারিত শুনুন আজকের সংবাদ পর্যালোচনায়।

 

গত ১০০ বছরের ইতিহাস স্বাক্ষী দেয়, সিপিসি জনগণের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত, জনগণ-নির্ভর, এবং জনগণের জন্য নিবেদিত একটি পার্টি। শতাব্দিব্যাপী তার উন্নয়ন ও জয়ের পিছনে এটিই মূল কারণ।  সিপিসি প্রতিষ্ঠার শত বছরের উদযাপনী অনুষ্ঠানে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেছিলেন:

 

দেশ মানে জনগণ, এবং জনগণ মানে দেশ। দেশ প্রতিষ্ঠা ও রক্ষা করা মানে জনগণের মন জয় করা। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির মূল প্রোথিত রয়েছে জনগণের মধ্যে। সিপিসির মূল শক্তিও জনগণ থেকে উত্সারিত। সিপিসি সবসময় জনগণের মৌলিক স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করে, এবং সবসময় জনগণের সঙ্গে থাকে। পার্টির নিজস্ব বিশেষ কোনো স্বার্থ নেই। এটি কখনো কোনো স্বার্থপর গ্রুপ, কোনো ক্ষমতারধর শক্তি, বা কোনো বিশেষ মর্যাদার স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করে না। এটি কেবল জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে।

 

গত একশ’ বছরের পর্যালোচনায় দেখা যায়, বিপ্লব, নির্মাণ ও সংস্কারের বিভিন্ন ঐতিহাসিক পর্যায়ে সিপিসি ও দেশের ভবিষ্যতের সঙ্গে জড়িত গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলোতে সিপিসি সবসময় জনগণের স্বার্থকে বিবেচনা করেছে, এবং জনগণের মৌলিক স্বার্থের নীতি প্রণয়নে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। এটিই তার একমাত্র রাজনৈতিক মানদণ্ড।

 

চীনে নিযুক্ত লাউসের রাষ্ট্রদূত খামভাও এর্নথাভান মনে করেন,

সিপিসির সব কাজের উদ্দেশ্য হল জনগণের সুখী জীবন নিশ্চিত করা। এটি সিপিসির উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য, এবং অন্যান্য রাজনৈতিক পার্টির সঙ্গে এর বৃহত্ পার্থক্য। চীনা জনগণ খুব সুখী জীবন কাটাচ্ছে। আমার মতে, সিপিসি হল চীনের এবং চীনা জনগণের জন্য সবচেয়ে উপযোগী পার্টি। সিপিসি চীনকে নেতৃত্ব দিয়ে চীনা বৈশিষ্ট্যের সমাজতন্ত্রের পথ খুঁজে বের করেছে।

 

সিপিসি প্রতিষ্ঠার পর গত একশ’ বছরে চীনে অনেক পরিবর্তন ঘটেছে। চীন ইতোমধ্যে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক গোষ্ঠী, এবং আন্তর্জাতিক প্রভাববিস্তারকারী শক্তিতে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে চীনা জনগণের মাথাপিছু আয় ১০ হাজার মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। দেশে মধ্যবিত্তের সংখ্যা ৪০ কোটি, যা বিশ্বের বৃহত্তম। চীন বিশ্বের বৃহত্ সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ দেশেগুলোর অন্যতমে পরিণত হয়েছে। 

 

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান মনে করেন, চীনের দ্রুত উন্নয়ন সিপিসির প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। তিনি বলেন,

সিপিসির প্রশাসন ব্যবস্থা খুব অনন্য। আগে আমরা মনে করতাম, সমাজে নিজেকে সুসংহত করার শ্রেষ্ঠ পদ্ধতি হল পাশ্চাত্য গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা। তবে সিপিসি বাস্তবতা দিয়ে প্রমাণ করেছে, এই বিশ্বে আরেকটি ব্যবস্থা আছে, তা আমাদের জন্য শিক্ষনীয়। আসলে সিপিসি নিজস্ব পদ্ধতিতে চীনা সমাজে বিরাট উন্নয়ন বাস্তবায়ন করেছে। যা অনেক পশ্চিমা দেশ বাস্তবায়ন করতে পারেনি। এটি আসলে অসাধারণ সাফল্য। চীনের এত দ্রুত অগ্রগতি অর্জনের মূল কারণ হল তাদের দ্রুত সংস্কার।

 

চীন সবসময় বিশ্ব শান্তির নির্মাতা, বিশ্বের উন্নয়নের অবদানকারী, এবং বিশ্ব শৃঙ্খলা রক্ষাকারী। সিপিসি মানবজাতির ভবিষ্যতের ওপর নজর রাখে, এবং বিশ্বের অগ্রগতি সর্বশক্তিদিয়ে এগিয়ে নিয়ে যায়। সিপিসি দৃঢ়ভাবে ইতিহাসের সঠিক পথে দাঁড়াবে, মানবজাতির অগ্রগতির পক্ষে দাঁড়াবে। মানবজাতির অভিন্ন ভাগ্যের কমিউনিটি গড়ে তোলার চেষ্টা করবে, এবং আরো বেশি সুন্দর বিশ্ব গড়ে তুলবে। চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেন,

সিপিসি অব্যাহতভাবে শান্তিপ্রেমী দেশ ও জনগণের সঙ্গে শান্তি, উন্নয়ন, ন্যায্যতা, গণতন্ত্র এবং স্বাধীন মানবজাতির অভিন্ন মূল্যবোধে অবিচল থাকবে, সহযোগিতা করবে, বৈরিতার বিরোধিতা করবে, উন্মুক্ততা এগিয়ে নেবে, এবং অবরোধের বিরোধিতা করবে। পারস্পরিক কল্যাণের জন্য কাজ করবে, প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে না, আধিপত্যবাদ ও শক্তির রাজনীতির বিরোধিতা করবে, এবং মানবজাতির সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য অবদান রাখবে।

(শুয়েই/এনাম/জিনিয়া)