নভেম্বর ৪: চলতি বছর হচ্ছে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকার সমন্বয়ে গঠিত জোট ব্রিক্স প্রতিষ্ঠার ১৫তম বার্ষিকী। গত ১৫ বছরে এসব দেশের বাস্তব সহযোগিতায় গুরুত্বপূর্ণ সুফল অর্জিত হয়েছে। যা বিশ্বের শান্তি ও উন্নয়নের জন্য ইতিবাচক অবদান রেখেছে। গতকাল (বুধবার) আয়োজিত চলতি বছরের ব্রিক্স দেশসমূহের প্রশাসন-বিষয়ক সেমিনারে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, ব্রিক্স দেশসমূহের উচিত সর্বশক্তি দিয়ে সহযোগিতা চালানো, পারস্পরিক সম্মান, ভিন্নতাকে সংরক্ষণের ভিত্তিতে অভিন্ন ক্ষেত্র খুঁজা, এবং পারস্পরিক শিক্ষার ভিত্তিতে বহুপক্ষবাদের সংলাপ জোরদার করা এবং বৈশ্বিক প্রশাসন ব্যবস্থাকে ন্যায্যতা ও সুশৃঙ্খলার দিকে এগিয়ে নেয়া।
সংশ্লিষ্ট তথ্য মতে, ব্রিক্সের সদস্য দেশসমূহ প্রতি বছর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণা খাতে যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করে, তা বিশ্বের মোট পরিমানের এক ষষ্ঠাংশের বেশি। এসব দেশে উচ্চ প্রযুক্তিগত পণ্যের রপ্তানির পরিমাণ বিশ্বের মোট পরিমাণের এক চতুর্থাংশের বেশি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতের গবেষণাকারীদের পরিমাণ বিশ্বের মোট পরিমাণের ২০ শতাংশেরও বেশি। উদ্ভাবন সক্ষমতা উন্নয়নে এসব দেশ হাতে হাত রেখে ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য মজবুত ভিত্তি সৃষ্টি করেছে।
চীনের ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের উপপ্রধান রং ইং সেমিনারে বলেন, ব্রিক্স দেশসমূহের সহযোগিতা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার গত ১৫ বছরে সহযোগিতার খাতের সম্প্রসারণ চলছে এবং তাদের আন্তর্জাতিক প্রভাব দিন দিন জোরদার হচ্ছে। যা বহুপক্ষবাদ রক্ষার খাতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে।
তিনি বলন,“বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ত্বরানিত্বকরণ, বৈশ্বিক বাণিজ্য বিনিয়োগ পুনরুদ্ধার, আন্তর্জাতিক ন্যায্যতা এবং ন্যায়বিচার প্রমোট এবং একতরফাবাদ ও সুরক্ষাবাদের বিরোধিতায় ব্রিক্স দেশসমূহের সহযোগিতা অপরিবর্তনীয় ভূমিকা পালন করে আসছে। চীন ব্রিক্সের অংশীদারদের সাথে একযোগে প্রকৃত বহুপক্ষবাদ রক্ষা ও প্রমোট করা, সার্বিকভাবে সব খাতের সহযোগিতা জোরদার এবং আরো ঘনিষ্ঠ ও বাস্তব অংশীদারি সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করার প্রত্যাশা করে। যাতে অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সহজ হয়।”
রুশ অ্যাকাডেমি অব সাইন্সেসের বিশেষজ্ঞ ভ্লাদিমির পেত্রোভস্কি বলেন, ব্রিক্স দেশসমূহের উচিত পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বহুপক্ষবাদকে জোরদার করা। যাতে আরো ন্যায্য একটি অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা যায়।
তিনি বলেন,“ব্রিক্স দেশসমূহের অব্যাহতভাবে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাপনাকে জোরদার ও সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দেয়া উচিত; যাতে তা আরো অন্তর্ভুক্তিমুলক এবং প্রতিনিধিত্বশীল হয়।”
দক্ষিণ আফ্রিকার মানব বিজ্ঞান গবেষণা পরিষদের বিশেষজ্ঞ কৃশ চেটি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ব্রিক্স দেশসমূহের অভিন্ন লক্ষ্য রয়েছে, তাই তাদের উচিত সহযোগিতা জোরদার করা।
তিনি বলেন,“আমাদের উচিত আরো বেশি সহযোগিতা চালানো। গবেষণা খাতের সহযোগিতার পাশাপাশি স্থানীয় সরকারসহ নানা খাতে একযোগে প্রচেষ্টা চালানো উচিত। এতে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা হবে।”
চায়না মিডিয়া গ্রুপ(সিএমজি) থেকে আকাশ