নভেম্বর ৩: চলতি বছর হল জাতিসংঘে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের বৈধ আসন ফিরে পাওয়ার ৫০তম বার্ষিকী। বিশ্বের বৃহত্তম উন্নয়নশীল দেশ ও জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা এবং জাতিসংঘের কাজকর্ম এগিয়ে নেয়ার জন্য চীন ইতিবাচক ভূমিকা রেখে আসছে। গতকাল (মঙ্গলবার) গ্লোবালাইজেশন থিংক ট্যাঙ্ক ও চীনে নিযুক্ত জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠানসমূহের উদ্যোগে “চীন ও জাতিসংঘ: ৫০ বছর সহযোগিতার প্রক্রিয়া ও ভবিষ্যতের উন্নয়ন” নামক একটি সম্মেলন আয়োজিত হয়। এতে অংশগ্রহণকারীরা জাতিসংঘে চীনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার উচ্চ প্রশংসা করেন এবং চীনের সাথে সহযোগিতা আরো জোরদারের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
চীনে নিযুক্ত জাতিসংঘের সমন্বয়ক সিদ্ধার্থ চ্যাটার্জি জানান, ১৯৭৯ উনাশি সাল থেকে গত ৪০ বছরের বেশি সময়ে জাতিসংঘ চীনের দাতা থেকে সহযোগীতে পরিণত হয়েছে। তিনি জানান, ভবিষ্যতে চীনে নিযুক্ত জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠানসমূহ চীনের সাথে বিভিন্ন খাতের সহযোগিতা আরো জোরদার করতে চায়।
তিনি বলেন, “বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার মুখে চীন তার মহান উন্নয়ন লক্ষ্য বাস্তবায়নের পথে অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। যেমন: নগর ও গ্রামের মধ্যকার উন্নয়নের ব্যবধান কমানো, সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন, অরক্ষিত গোষ্ঠীর যত্ন নেয়া ইত্যাদি।দেশের সর্বস্তরের মানুষের জন্য সবুজ, ন্যায্য ও টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়ন করতে চাইলে, চীনকে উন্নয়নের নতুন পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে।আমরা অনেক খুশি যে, দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে এ সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় চীনের প্রস্তুতি রয়েছে। চীনের সরকার ও জনগণের সাথে সহযোগিতা চালিয়ে একযোগে সমস্যা সমাধানের প্রস্তুতি আমাদেরও রয়েছে।”
চীনে নিযুক্ত জাতিসংঘ শিশু তহবিলের প্রতিনিধি সিনথিয়া ম্যাক ক্যাফরি জানান, চীনে তাদের কাজ পরিচালনার ৪০ বছরে শিশুদের কল্যাণ এগিয়ে নেয়া ও রক্ষার খাতে সংস্থাটি চীনের সরকারের সাথে কার্যকর সহযোগিতা চালিয়ে আসছে। ভবিষ্যতে এসব সাফল্যের অভিজ্ঞতা আরো বেশি দেশে প্রমোট করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
তিনি বলেন, “চীনে আমাদের অনেক অভিজ্ঞতা জমা হয়েছে। বিগত ৪০ বছরে এ সব অভিজ্ঞতা আমরা বিশ্বের অন্য দেশ ও অঞ্চলে ভাগাভাগি করেছি।”
চীনে নিযুক্ত আফ্রিকান ইউনিয়নের প্রতিনিধি রহমতুল্লাহ এম ওসমান জানান, চীন বরাবরই বহুপক্ষবাদের বাস্তবায়নকারী। চীন অব্যাহতভাবে আফ্রিকার নিজের সক্ষমতা উন্নয়নে সমর্থন দিয়ে আসছে। আফ্রিকার বিশ্ব ব্যবস্থায় ইতিবাচক ভূমিকা পালনেও চীন সাহায্য করে আসছে।
তিনি বলেন,“নিজস্ব উন্নয়ন অভিজ্ঞতা বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশের সাথে শেয়ার করতে ইচ্ছুক চীন। তা বিশ্বের দারিদ্র্যবিমোচনের প্রক্রিয়াকে তারানিত্ব করছে।”
চীনে নিযুক্ত সেনেগালের রাষ্ট্রদূত মামাদো দিয়াই জানান, অনেক আফ্রিকান দেশ চীনের সাফল্যের অভিজ্ঞতা থেকে শক্তি পেয়েছে। ভবিষ্যতে জাতিসংঘের সমর্থনে চীন ও আফ্রিকার সহযোগিতা আরো জোরদার করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
তিনি বলেন, “চীনের উন্নয়ন ও দ্রুত অর্থনৈতিক রূপান্তর প্রক্রিয়া থেকে আফ্রিকার দেশসমূহ উপলব্ধি করে যে, দারিদ্র্যকে পরিবর্তন করা যায় এবং দূর করা যায়।”
(আকাশ/এনাম/রুবি)