গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের জাতিসংঘে বৈধ আসন ফিরে পাওয়ার ৫০ বছর পূর্তী
2021-10-29 20:41:00

 

চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং গত ২৫ অক্টোবর গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের জাতিসংঘে বৈধ আসন ফিরে পাওয়ার ৫০তম বার্ষিকীতে দেওয়া ভাষণে বলেছেন, “আগেকার তাঞ্জানিয়া ও জাম্বিয়া রেল স্টেশন থেকে আজকের ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ পর্যন্ত চীন বিভিন্ন পদ্ধতিতে উন্নয়নশীল দেশকে যথাসাধ্য সহযোগিতা দিচ্ছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরহিস এ দিন বলেন,  চীনের উন্নয়ন বিশ্বকে সুযোগ দেবে”। সি চিন পিংয়ের এ কথা থেকে বোঝা যায়, চীনের দ্রুত উন্নয়নের গাড়িতে বিভিন্ন দেশকে স্বাগত জানায় চীন। বিগত ৫০ বছরে চীনের শান্তিপূর্ণ উন্নয়ন হয়েছে। চীনের অর্থনীতি বহু বছর ধরে স্থিতিশীলভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে; যা বিশ্বের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে টানা ১৫ বছর ধরে শীর্ষ স্থানে রয়েছে। চীন বিভিন্ন দেশের জন্য বাজারের সুযোগ, বিনিয়োগের সুযোগ এবং প্রবৃদ্ধির সুযোগ দিয়ে আসছে।  আরও বিস্ময়কর বিষয় হলো, চীন সার্বিক সচ্ছল সমাজ গড়ে তুলেছে এবং চরম দারিদ্র্য দূর করেছে। জাতিসংঘের ২০৩০ এজেন্ডার টেকসই উন্নয়ন প্রক্রিয়ার ১০ বছর আগে দারিদ্র্যমুক্তকরণের লক্ষ্য বাস্তবায়ন করেছে। বিশ্বের টেকসই উন্নয়নেও চীন ব্যাপক অবদান রেখেছে।

 

শুধু চীনের উন্নয়ন নয়, বিশ্বের কেমন আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা দরকার- সে বিষয়ে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং তাঁর নিজস্ব প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমাদের উচিত জাতিসংঘের কর্তৃত্ব ও মর্যাদা রক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং যৌথভাবে প্রকৃত বহুপক্ষবাদ অনুশীলন করা।” বর্তমান জটিল প্রেক্ষাপটে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের এ মন্তব্যের বাস্তব তাত্পর্য রয়েছে। শত বছরের পরিবর্তন ও মহামারির কারণে বিশ্ব শান্তি ও উন্নয়ন বহু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। কিছু পশ্চিমা দেশ ইচ্ছেমতো আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা লঙ্ঘন করছে এবং বৈরিতা ও বিচ্ছিন্নতায় উস্কানি দিচ্ছে; যা জাতিসংঘ সনদের নীতিমালা ক্ষতিগ্রস্ত করছে। জাতিসংঘের যৌথ প্রতিষ্ঠাতা দেশ হিসেবে সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতার ৫০ বছরে চীন একটি গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। তা হল: জাতিসংঘের আদর্শ রক্ষা করা এবং বহুপক্ষবাদের পথে এগিয়ে যাওয়া। এবারের ভাষণে সি চিন পিং জোর দিয়ে বলেছেন, বিভিন্ন দেশের উচিত পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে জাতিসংঘ পরিবারকে রক্ষা করা। পাশাপাশি, জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য দেশের উচিত যৌথভাবে আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা প্রণয়ন করা।

 

গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের জাতিসংঘে বৈধ মর্যাদা পুনরুদ্ধারের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠানে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের ভাষণকে সময়োপযোগী ও তাত্পর্যপূর্ণ বলে বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন। জাতিসংঘের জেনেভা কার্যালয়ে পাকিস্তানের প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত খলিল-উর-রহমান হাশমি বলেন, অতীতে চীন শান্তিপূর্ণ উন্নয়ন বাস্তবায়ন করেছে, যা একটি দৃষ্টান্ত। চীনের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের আকার ও গুণগতমান মানবজাতির ইতিহাসে অতুলনীয়। ৫০ বছর আগে জাতিসংঘ সম্মেলনে ২৭৫৮ নম্বর প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল। এতে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন বৈধ আসন ফিরে পায়। এ প্রস্তাব উত্থাপনকারী ও সমর্থনকারী দেশ হিসেবে পাকিস্তান গৌরব বোধ করে। সে প্রস্তাব বিশ্বের ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছে।