অক্টোবর ২৬: ‘চীনা জনগণ শান্তিপ্রিয় এবং শান্তি ও নিরাপত্তার মূল্য তাঁরা ভালোই বোঝে। চীন সবসময় স্বাধীন ও শান্তিপূর্ণ কূটনীতি অনুসরণ করে, সুবিচার ও ন্যায্যতার পক্ষে, আধিপত্যবাদ ও শক্তির রাজনীতির বিরোধিতা করে আসছে।’ গতকাল (সোমবার) জাতিসংঘে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের বৈধ আসন ফিরে পাওয়ার ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক বিশেষ সভায় চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এ সব কথা বলেন।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, চীন অবিচলভাবে শান্তি ও উন্নয়নের পথে সামনে এগিয়ে যাবে এবং বিশ্বশান্তির পক্ষে শক্তি হিসেবে কাজ করে যাবে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরহিস একই দিন বিশ্বশান্তি ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে চীনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ও অবদানের প্রশংসা করেন।
‘নয়াচীন আসছে!’ ১৯৭১ সালের ২৫ অক্টোবর নিউইয়র্কে জাতিসংঘস্থ পাকিস্তানের অ্যাসোসিয়েট প্রেসের সাংবাদিক ইফতিহার আলী প্রথমে একটি ইংরেজি সংবাদের মাধ্যমে বিশ্বের সামনে এ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেন। পরে জাতিসংঘে চীনের বৈধ আসন পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে জাতিসংঘে সত্যিকারের আন্তর্জাতিক সংস্থায় পরিণত হয়। শুধু তাই নয়, এতে বিশ্বশান্তির পক্ষের শক্তিও উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পায়।
গেল ৫০ বছরে চীন শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পাঁচ নীতি মেনে চলেছে এবং কখনও যুদ্ধের উস্কানি দেয়নি। চীন কোনো দেশের ভূখণ্ড দখল করেনি; চীন সবসময় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষের সঙ্গে সহযোগিতা করেছে এবং বিশ্বের ন্যায্যতা রক্ষা করে গেছে।
জাতিসংঘের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতাদেশ হিসেবে চীন শান্তিপূর্ণ পদ্ধতিতে রাজনৈতিক মতভেদ সমাধানকে সমর্থন করে এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ে যথেচ্ছা সামরিক শক্তির ব্যবহারের বিরোধিতা করে।
একটি বড় দেশ হিসেবে নিজের দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করা, বিশ্বশান্তি রক্ষা করা, এবং মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি গঠনে অবদান রাখার লক্ষ্যে, চীন সবসময় সক্রিয়ভাবে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনগুলোতে অংশগ্রহণ করে আসছে। ১৯৯০ সালে চীন প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ কার্যক্রমে ৫ জন সামরিক পর্যবেক্ষক পাঠায়। এর পর, এ পর্যন্ত, চীনের মোট ৫ লাখ সৈনিক ও পুলিশ জাতিসংঘের ৩০টিরও বেশি শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করেছেন।
চীনা শান্তিরক্ষীরা এশিয়া ও আফ্রিকাসহ বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশে যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ, বিদ্যমান উত্তেজনা প্রশমন, বেসামরিক নাগরিকদের জানমাল রক্ষা, বিপজ্জনক অঞ্চলের নিরাপত্তা রক্ষা, বিভিন্ন কাজে সমর্থন বা সহায়তা দেওয়া, ইত্যাদি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে ও করছে। চীনা জনগণ শান্তি ভালবাসে এবং বৈশ্বিক শান্তি রক্ষায় নিজেদের ভূমিকা রাখতে চায়। কারণ, তারা বিশ্বাস করে, বিশ্ব ভাল থাকলে চীন ভাল থাকবে; আর চীন ভাল থাকলে বিশ্বও ভালো থাকবে।
চীনের সার্বক্ষণিক বিশ্বশান্তি রক্ষার ধারণা চীনা জাতির পাঁচ হাজার বছরের সংস্কৃতিতে রয়েছে। আবার চীনের ক্ষমতাসীন পার্টির রক্তেও এ ধারণা প্রবাহিত হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট সি তার ভাষণে এমন কথাই বলেছেন। তিনি বলেছেন ‘মানবজাতির উচিত্ সম্প্রীতি ও সহাবস্থানের মাধ্যমে অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি গঠনের দিকে এগিয়ে যাওয়া এবং সুন্দর ভবিষ্যত গড়ে তোলা।’ (ইয়াং/আলিম/ছাই)