৩৬ বছর ধরে লোকজনের প্রাণ উদ্ধারে ‘খাল নির্মাণকারী ব্যক্তি’ হুয়াং তা ফা
2021-10-21 10:26:31

৩৬ বছর ধরে লোকজনের প্রাণ উদ্ধারে ‘খাল নির্মাণকারী ব্যক্তি হুয়াং তা ফা

৩৬ বছর ধরে লোকজনের প্রাণ উদ্ধারে ‘খাল নির্মাণকারী ব্যক্তি’ হুয়াং তা ফা_fororder_huang1

৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে একটি কাজ। ২০ বছর বয়সী তরুণ মানুষ যখন এই মহান কাজ শেষ করেন, তখন তাঁর বয়স হয় প্রায় ৬০ বছর। এই ব্যক্তির নাম হুয়াং তা ফা, তিনি শতাধিক গ্রামবাসীকে নিয়ে ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে খাড়া উঁচু পাহাড়ের মধ্যে একটি ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘আকাশের খাল’ খনন করেছেন। তা দেখলে মনে হয় আকাশ থেকে ঝুলে আছে। আর তা স্থানীয় পাহাড়ি গ্রামের চেহারা পরিবর্তন করে দিয়েছে। আজকের অনুষ্ঠানে আপনাদেরকে তাঁর গল্প জানাবো।

 

হুয়াং তা ফা কুই চৌ প্রদেশের চুন ই শহরের থুয়ান চিয়ে গ্রামের সিপিসি’র শাখা সম্পাদক। তাঁর নেতৃত্বে তৈরি এই খাল স্থানীয় সহস্রাধিক কৃষকের জীবনকে পরিবর্তন করেছে, আগের সেই দরিদ্র গ্রাম এখন একেবারে নতুন চেহারা লাভ করেছে। গ্রামটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১২৫০ মিটার উঁচুতে অবস্থিত। চার পাশে উঁচু পাহাড়। বৃষ্টি হলে সব পানি গড়িয়ে চলে যায়, কোনোভাবেই তা ধরে রাখা যায় না।

 

গত শতাব্দীর ৯০ দশকের আগে গ্রামের কৃষকরা সবচেয়ে কাছাকাছি স্থানে গিয়ে পানি নিয়ে আসত, আর সেই জায়গায় একবার যেতে দুই ঘণ্টা সময় লাগত। মাঝে মাঝে পানির জন্য মানুষের মধ্যে ঝগড়াও হতো।

পানীয় জল সংগ্রহে অনেক কষ্ট করতে হতো। তাই কৃষকরা পানি খুব সাশ্রয় করতো। প্রথমবার, পানি দিয়ে সবজি ধুয়ে, তারপর সেই সবজি ধোয়া পানি দিয়ে হাত-মুখ ধুয়ে নিত। তারপর সেই পানি পশুকে খাওয়ানোর জন্য ব্যবহার করা হত। জেলার কর্মকর্তা গ্রামটি পরিদর্শন করেন, তখন কৃষকরা তাঁকে পানি পান করতে দেন- যা হলুদ রংয়ের। অর্থাত্ পানিতে অনেক বালি মিশ্রিত ছিল।

৩৬ বছর ধরে লোকজনের প্রাণ উদ্ধারে ‘খাল নির্মাণকারী ব্যক্তি’ হুয়াং তা ফা_fororder_huang2

পানির অভাব কৃষকদের কৃষিকাজেও প্রভাব ফেলত। যে শস্য উত্পাদনে পানির প্রয়োজন কম, তারা সেই শস্য চাষ করত- যেমন ভুট্টা। তারা শুধু ভুট্টা খেতে পারত।

আসলে, পানি ছাড়া মানুষরা খাওয়ার সমস্যা সমাধান করা যায় না। তাই কখনওই কোনও শিল্প উন্নয়নের কথা চিন্তাও করা যেত না। কিছু পরিবারকে লবণও ধার নিতে হত।

 

দরিদ্র জীবনের ঘটনা হুয়াং তা ফা অন্যদের চেয়ে আরও বেশি জানেন। অল্প বয়সে তাঁর মা মারা যান। তাঁর বাবা আফিম খেয়ে নেশা করে পরিবারের সব টাকা নষ্ট করে মারা যায়। মাত্র ১৩ বছর বয়সে হুয়াং তা ফা অনাথ হয়ে পড়েন। তাই দারিদ্র্য থেকে মুক্তির জন্য তিনি অন্যদের চেয়ে আরও দৃঢ় ভূমিকা রাখেন।

 

১৯৫৮ সালে হুয়াং তা ফাকে গ্রামের প্রধান হিসেবে নির্বাচন করা হয়। গ্রামে দারিদ্র্যের মূল কারণ হল- পানির অভাব। তাই যে কোনও পদ্ধতিতে গ্রামে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে, সবাইকে ভাত খাওয়াতে হবে। তখন এই সমস্যা সমাধানের সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

 

গ্রামের পাশে পাহাড়ের পিছনে ছিল এক নদী। গত শতাব্দীর ৬০-এর দশক থেকে কাছাকাছি কয়েকটি গ্রামের সহযোগিতার মাধ্যমে যৌথভাবে একটি ‘লাল পতাকার খাল’ তৈরি করতে চান তিনি। যাতে এই পানির উত্সকে স্থিতিশীল করা যায়। আর হুয়াং তা ফা হলেন এই প্রকল্পের প্রধান। তখন এই খাল নির্মাণের জন্য মাঝখানে ১১৬ মিটার লম্বা এক টানেল নির্মাণ করতে হয়। সবাই মনে করে, এটি অনেক কঠিন একটি কাজ, যা সম্ভব নয়। তাই হুয়াং তা ফা সিদ্ধান্ত নেন, তিনি গ্রামবাসীদের নেতৃত্ব দিয়ে এই কাজ বাস্তবায়ন করবেন।

 

তখন কোনও আধুনিক যন্ত্র ছিল না। তাই গ্রামবাসীরা পুরানো পদ্ধতিতে নির্মাণকাজ শুরু করেন। বাঁশ দিয়ে মাপ দেন, খালি চোখে যাচাই করেন। যখন খনন আরও গভীর হয়, তখন তিনি কান পেতে পাহাড় খননের অবস্থা যাচাই করেন। অবশেষে তাঁর নেতৃত্বে এই টানেল নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছিল।

 

তবে অর্থ, প্রযুক্তি ও শ্রমিকের অভাবে, হলুদ মাটি দিয়ে তৈরি করা টানেল দশ/বার বছর ব্যবহারের পর ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়ে। গত শতাব্দীর ৭০ দশকেই তা বন্ধ হয়ে যায়।

তবে হুয়াং তা ফা আশা ছেড়ে দেন নি।

৩৬ বছর ধরে লোকজনের প্রাণ উদ্ধারে ‘খাল নির্মাণকারী ব্যক্তি’ হুয়াং তা ফা_fororder_huang3

১৯৭৬ সালে স্থানীয় জেলা সরকারের কর্মকর্তা হুয়াং চু ওয়েন সেই গ্রামে যান এবং হুয়াং তা ফার বাসায় ওঠেন। তাঁর মতে, হুয়াং তা ফা ছোটখাটো, তবে মনে অনেক দৃঢ় সংকল্প। পুরো হাতেই কড়া পড়েছে। তা দেখে ওই কর্মকর্তা মনে ভীষণ কষ্ট পান। পুরো রাত ধরে দু’জন আলাপ করেন; তখন হুয়াং তা ফা আবারও খাল নির্মাণের দৃঢ়তা প্রকাশ করেন।

 

আবার হুয়াং তা ফাকে দেখা যায় ১৯৯০ সালের ডিসেম্বর মাসে। সেদিন প্রচুর তুষার পড়েছিল। যদিও মাঝখানে দশ বছর পার হয়েছে; তবুও এই কর্মকর্তা প্রথম দেখায় হুয়াংকে চিনতে পারেন। তিনি খুব জরাজীর্ণ এক জুতা পরে ছিলেন, পায়ে কোনও মোজা ছিল না। পায়ের আঙুল বাইরে বের হয়ে রয়েছে, গায়ে কোনো মোটা কাপড় নেই।

 

হুয়াং তা ফা’র ব্যাগে ছিল, একটি খাল নির্মাণের আবেদনপত্র।

হুয়াং তা ফা ওই কর্মকর্তাকে বলেন, আমি দুই দিন ধরে হেঁটে হেঁটে জেলায় এসে পৌঁছেছি, আমি তোমাকে খুঁজছি। আমি খাল নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চাই, তুমি সাহায্য করো। আমি গ্রামের প্রধান, খাল নির্মাণের দায়িত্ব আমার। গ্রামের মানুষ ও পশুপাখির পানীয় জলের সমস্যা সমাধান করতে হয়, তা না হলে দরিদ্রতা কখনওই শেষ হবে না। এবার আমি প্রাণ হারালেও এই কাজ সম্পন্ন করবো।

 

জেলা প্রশাসন অবশেষে খাল নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়। তবে হুয়াং তা ফার সামনে আরেকটি সমস্যা এসে দাঁড়ায়। নির্মাণের টাকা কোথায় পাওয়া যাবে?

 

তখনকার স্থানীয় নীতি অনুযায়ী, এই প্রকল্প নির্মাণের জন্য, সরকার বিভিন্ন সামগ্রী দিয়েছিল এবং কিছু অর্থ সমর্থনও দিয়েছিল। এবার গ্রামবাসীদের নিজেদের পরিশ্রমের অর্থ এবং প্রয়োজনীয় বাকি অর্থ সংগ্রহ করতে হয়। পুরো গ্রামের নয় শতাধিক মানুষ ১৩ হাজার ইউয়ান অর্থ সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়।

 

সেই বছরে, গ্রামবাসীর মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৮০ ইউয়ান।

হুয়াং তা ফা গ্রামবাসীদের সম্মেলনে প্রত্যেক পরিবারকে টাকা দেওয়ার অনুরোধ জানান। গ্রামের প্রধান হিসেবে তিনি সবার আগে ১০০ ইউয়ান দেন।

 

খাল নির্মাণের উত্সাহ আবারও প্রজ্বালিত হয়। সেদিন রাতেই কিছু কিছু লোক গ্রামের বাইরে যায়। পরদিন ভোরে, গ্রাম থেকে বের হওয়ার ছোট পথে অনেক মানুষজন দেখা যায়। সবাই ডিম, ডাল ও মধু নিয়ে বাইরের মেলায় যাচ্ছিল। তারা এসব পণ্য বিক্রি করে খাল নির্মাণের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে চায়।

 

গ্রামবাসী ইয়াং ছুন ইউ বলেন, এত বছর ধরে স্বপ্ন দেখলাম, এবার খাল নির্মাণের সুযোগ এসেছে। পারিবারিক জীবন অনেক কঠিন হলেও এতে সমর্থন দেওয়া উচিত।

৩৬ বছর ধরে লোকজনের প্রাণ উদ্ধারে ‘খাল নির্মাণকারী ব্যক্তি’ হুয়াং তা ফা_fororder_huang4

অবশ্য, কেউ কেউ এর বিরোধিতা করে। কেউ বলে, এই খাল নির্মাণ করতে পারলে আমি হাত আগুনে জ্বালিয়ে তোমার জন্য রান্না করবো। আর হুয়াং তা ফা বলেন, কাজ সম্পন্ন করতে না পারলে আমি তোমাকে আমার প্রাণ দিয়ে দেবো।

 

হুয়াংর স্ত্রী সুই খাই মেই তাঁকে বলেন, আর কয়েক বছর পর, যখন সবার আর্থিক অবস্থা একটু ভালো হবে, তখন এই খাল নির্মাণ করা যাবে। হুয়াং তা ফা বলেন, আর অপেক্ষা করা যায় না। আকাশের মতো বড় সমস্যা থাকলেও এই কাজ এগিয়ে নিতে হবে। পানি সরবরাহ ছাড়া সবার আর্থিক ব্যবস্থা কীভাবে ভালো হবে?

 

আহ্বান জানানোর তৃতীয় দিনে, ১৩ হাজার টাকা যোগাড় হয়ে যায়। জেলার কর্মকর্তারা মুগ্ধ হন। তারা বলেন- এটা প্রকল্প নির্মাণের টাকা নয়, এটা গ্রামবাসীদের হৃদয়।

১৯৯২ সালের জানুয়ারি মাসে, তুষারময় একটি দিনে, আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্পটির নির্মাণকাজ শুরু হয়।

 

হুয়াং তা ফা বলেন, কর্মকর্তাদেরও কাজ করতে হয়, জনগণ আমাদের দেখছে। সামগ্রী পাঠানো থেকে নির্মাণকাজ পর্যন্ত, প্রায় ৬০ বছর বয়সী হুয়াং তা ফা সবসময় সবার আগে ছিলেন। প্রয়োজনীয় বিস্ফোরক, তিনি ৩৬ কিলোমিটার পথ হেঁটে কাঁধে করে নিয়ে এসেছেন। নির্মাণের জন্য সিমেন্টও তাঁরই পাঠানো। একবার সিমেন্ট পরিবহনের গাড়ি চলতে চলতে হঠাত্ মাটিতে পড়ে যায় ও আটকে যায়। সিমেন্ট চুরি হওয়ার আশংকায় হুয়াং তা ফা সেই রাত সিমেন্ট ব্যাগের শুয়ে থাকেন।

 

প্রকল্পের শুরু থেকে সম্পূর্ণ খাল তৈরি শেষ হওয়া পর্যন্ত মোট ৩ বছর সময় লেগেছে। হুয়াং তা ফা বলেন, এত বছরের টেকসই নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ার প্রধান কারণ হল সিপিসি’র সদস্যদের সবার আগে কাজ করা, সবাই একসাথে কাজ করা।

 

নির্মাণকাজে অংশগ্রহণকারী গ্রামবাসী ৭২ বছর বয়সী সুই খাই ছেং স্মরণ করে বলেন, প্রতিদিন ভোট ৬টায় দুই শতাধিক কৃষক বিভিন্ন যন্ত্র নিয়ে, ভুট্টার তৈরি করা খাবার নিয়ে নির্মাণস্থলে যায়, তারপর বিকাল ৬টায় কাজ শেষ করে বাসায় ফিরে আসে। সিমেন্ট ও বালি সবই কাঁধে করে বহন করে। শীতকালে জমিতে কৃষিকাজ কম হয়। এ সময়টি খাল নির্মাণের ভালো সময়। সবাই তুষার মুছে দিয়ে এক ইঞ্চি, এক ইঞ্চি করে খাল কেটে খনন করেন। দুপুরে, সবাই একসাথে বসেন, কিছু শুকনো কাঠ জ্বালিয়ে শরীর উষ্ণ করেন, সিদ্ধ আলু খান। আরও আগে খাল চালু হওয়ার জন্য কিছু কিছু কৃষক রাতেও নির্মাণস্থলে শুয়ে থাকেন।

 

খাল নির্মাণকালে, হুয়াং তা ফার মেয়ে ও নাতি অসুস্থ হয়ে মারা যান। সে বছর বসন্ত উত্সবের আগে হুয়াং তা ফা পরিবারের পশু বিক্রি করে ১শ’ ইউয়ান পান, স্ত্রী মনে করেন এ টাকা মেয়ের চিকিত্সার জন্য ব্যবহার করবেন তিনি। তবে না, হুয়াং তা ফা সেই  টাকা দিয়ে খাল নির্মাণের জন্য বিস্ফোরক কিনেন।

স্ত্রী বলেন, অভিযোগ করার দরকার নেই। আমরা তাকে সমর্থন না জানালে সে কীভাবে এই কাজ করবে?

 

১৯৯৪ সালে খালের প্রধান অংশ চালু হয়।

পরিচ্ছন্ন পানি প্রথমবারের মতো গ্রামে প্রবেশ করে; বহু বছর ধরে খরায় শুকনো মাটি প্রথমবারের মতো সিক্ত হয়ে ওঠে।

গ্রামের শিশুরা খালের পানির সঙ্গে দৌড়ায়, গ্রামবাসীরা হাত দিয়ে সেই পানি তুলে পান করে। তারা তৃপ্তির সঙ্গে বলে- এত মিষ্টি...

কেউই এর আগে হুয়াং তা ফা’কে কাঁদতে দেখেন নি। কিন্তু এবার তারা দেখেন, তাদের প্রবীণ নেতা এক কোণায় দাঁড়িয়ে কাঁদছেন, এই অশ্রু দুঃখের নয়, আনন্দ অশ্রু; দীর্ঘ পরিশ্রম ও ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত সাফল্যের অশ্রু।

৩৬ বছর ধরে লোকজনের প্রাণ উদ্ধারে ‘খাল নির্মাণকারী ব্যক্তি’ হুয়াং তা ফা_fororder_huang5

১৯৯৫ সালে তিনটি গ্রাম অতিক্রম করা প্রধান খালের দৈর্ঘ্য হয় ৭২০০ মিটার। খালের শাখার দৈর্ঘ্য ২২০০ মিটার। লোকজন হুয়াং তা ফা’র নামে এই খালের নামকরণ করে- তা ফা খাল।

স্থানীয় কর্মকর্তারা বলেন, বর্তমান দৃষ্টিভঙ্গি বিবেচনা করলে বলা যায়- এই খাল প্রকল্প যেন একটি মিরাকল।

 

পানির সমস্যা সমাধানের পর হুয়াং তা ফা আবার স্থানীয় কৃষকের জমির সংস্কার শুরু করেন। স্থানীয় জমিগুলো সিঁড়ির মতো জমিতে পরিণত হয়। গ্রামের অধিবাসী সুই কুও সু’র জমিও পরিবর্তন হয়। এখন সব জমিতে ধান চাষ করা হয়েছে। ১৯৯৬ সালে প্রতি মু’তে ৫শ’ কেজিরও বেশি চাল পাওয়া যায়। তাঁর এখনো মনে আছে, চাল পাওয়ার দিন, পরিবারে খুব বড় এক হাঁড়িতে ভাত রান্না করা হয়। চাল হাঁড়িতে দেওয়ার পর থেকে সবাই আর কিছু করে না, শুধু রান্না ঘরে বসে অপেক্ষা করতে থাকে। তাদের সবার মুখে হাসি। ভাত খাওয়ার মুহূর্তে জীবনে প্রথম ভাতের সুগন্ধ তাদের সবার নাকে লাগে; জীবনে প্রথম সুস্বাদু ভাতে তাদের পেট ভরে যায়। এত বছর পর সেই স্বাদের স্মৃতির কথা স্মরণ করে গ্রামবাসী সুই কুও সু বলেন, সেদিন আমরা পেট ভরে খেয়েছি; কত যে আনন্দ হয়েছিল, তা কখনও ভুলব না।

 

এরপর হুয়াং তা ফা’র গ্রামে স্কুল তৈরি হয়, সড়ক তৈরি হয় এবং বিদ্যুত্ সংযোগের স্বপ্নও বাস্তবায়িত হয়। এখন গ্রামটিতে ২০/৩০জন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আছে।

লোকজনকে নেতৃত্ব দিয়ে ৫০ বছরেরও বেশি সময় সংগ্রাম করেছেন তিনি। হুয়াং তা ফা কাছাকাছি সব পাহাড় গিয়েছেন, তিনি সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার দূরের চুন ই শহরেও গিয়েছেন।

 

তিনি মদ খান না, সিগারেট খান না, মাংস খান না। পরিবারের কাজের দিকে কোনও খেয়াল করেন না। এই ৮০-ঊর্ধ্ব বৃদ্ধ সারা জীবনটা তার গ্রামকে দিয়েছেন। তিনি গ্রামবাসীদের নেতৃত্ব দিয়ে ধনী হওয়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছেন।

 

(শুয়েই/তৌহিদ)