অক্টোবর ১৯: ১৮৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন বা আইটিইউ হলো তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত জাতিসংঘের বিশেষ সংস্থা। আমরা সাধারণত ফোনের মাধ্যমে কল করি, ইন্টারনেট সার্ফ করি বা ই-মেইল পাঠাই; যা আইটিইউ-এর কাজের সঙ্গে জড়িত।
চীন থেকে আইটিইউ’র মহাসচিব চাও হাউ লিন সম্প্রতি সিএমজি’র কাছে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেন, আইটিইউতে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার পর চীনের বৈধ মর্যাদা পুনরুদ্ধার হয় এবং চীন টেলিকম খাতে বিশাল সাফল্য অর্জন করে। ভবিষ্যতেও এ খাতে চীন আরো বেশি চালিকাশক্তি যোগ করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
চাও হাও লিন বলেন, ১৯৭২ সাল থেকে আইটিইউতে চীন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। চীন সক্রিয়ভাবে আইটিইউ’র নানা কাজে অংশ নিয়েছে। দু’পক্ষের প্রায় ৫০ বছরব্যাপী সহযোগিতায় চীনের টেলিযোগাযোগ শিল্পে বিরাট অগ্রগতি হয়েছে এবং আইটিইউ কার্যকলাপে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে দুর্দান্ত সাফল্য অর্জন করেছে চীন।
আইটিইউতে চীনের যোগদানের প্রথম দশ বছরে চীন প্রধানত অন্যদের কাছ থেকে শিখেছে। তারপর সংশ্লিষ্ট মানদণ্ড ও নিয়ম প্রণয়নে অংশ নিয়েছে। ২০০০ সালে অর্থাত্ এ শতাব্দীর প্রথম দিকে চীন উন্নত যোগাযোগের ক্ষেত্রে নিজের মানদণ্ড উত্থাপন করেছে এবং এটিকে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণ করা হয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন অব্যাহতভাবে অর্থনীতি ও সমাজের উচ্চ গুণগত মানের উন্নয়ন এগিয়ে নিয়েছে। ফাইভ-জি, বিগ ডেটা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, তথ্য ও প্রযুক্তি এবং মহাকাশ শিল্পে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। এ নিয়ে চাও হাউ লিন খুব আনন্দিত। তিনি বলেন,
‘গত দশ বা বিশ বছরে উচ্চ প্রযুক্তি খাতে চীনের উন্নয়ন লাফিয়ে লাফিয়ে এগিয়েছে। ফাইভ-জি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও বিগ ডেটাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্র রেডিও তরঙ্গ ব্যবহারের সঙ্গে জড়িত। আইটিইউ বিশ্বের একমাত্র অনুমোদিত সংস্থা, যা রেডিও প্রযুক্তির বিকাশ এবং রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে থাকে। তাই এ ক্ষেত্রে আমরা চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা বজায় রাখছি। ভবিষ্যতে আরও ভালোভাবে মহাকাশ ও গভীর সমুদ্রে ব্যবহারের জন্য চীনের পণ্ডিতগণের সঙ্গে গবেষণার নতুন ক্ষেত্র সম্প্রসারণ করতে পেরে আমরা খুব আনন্দিত।’
৫০ বছরে চীন জাতিসংঘের বিভিন্ন শিল্প উন্নয়নে সক্রিয় অবদান রেখেছে। মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটির গঠন এবং যৌথ আলোচনা, নির্মাণ ও সমন্বিত অর্জনের নীতি উত্থাপনের পাশাপাশি আইটিইউ’র উন্নয়নও বেগবান হয়েছে। চাও হাউ লিন মনে করেন, চীনের উত্থাপিত নানা প্রস্তাব বিশ্বের ডিজিটাল অর্থনীতি উন্নয়নে চীনের বুদ্ধি যুগিয়েছে। তিনি বলেন,
‘বহু বছর ধরে বিশ্বের ডিজিটাল অর্থনীতির উন্নয়ন এবং তথ্য সমাজ নির্মাণে চীনের জ্ঞান দারুণ অবদান রেখেছে। জাতিসংঘের অনেক সদস্য দেশ চীনের প্রস্তাবকে স্বাগত জানায়। এবার নভেল করোনাভাইরাস মহামারী বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ায় তা থেকে সবার স্পষ্টভাবে সচেতন হওয়া উচিত্ যে, এই বিশ্বে কেউ একা থাকতে পারে না। সবার ভাগ্য একসঙ্গে জড়িত। তাই মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি গঠন করা উচিত্। এটাই আমাদের মতৈক্য।’
জাতিসংঘে বৈধ মর্যাদা পুনরুদ্ধারের ৫০ বছরে অধিক থেকে অধিকতর চীনা মুখ জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থায় দেখা যায়। ২০১৪ সালে চাও হাউ লিন আইটিইউ’র মহাসচিব নির্বাচিত হন এবং তিনি এই সংস্থার ১৫০ বছরের ইতিহাসে প্রথম চীনা মহাসচিব। ২০১৮ সালে তিনি পুনর্নির্বাচিত হন। ভবিষ্যতে আইটিইউ’র সংশ্লিষ্ট কাজে চীন আরো বেশি চালিকাশক্তি যোগ করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
লিলি/তৌহিদ/শুয়েই