অক্টোবর ১৩: গত রোববার চীন ও ভারতের মধ্যে সামরিক কমান্ডার পর্যায়ের ত্রয়োদশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। চীন ও ভারতের চুশুল-মলদো সীমান্তের চীনা অংশে এই বৈঠক হয়। চীনের গণমুক্তি ফৌজের মুখপাত্র কর্নেল লং সাও হুয়া বলেন, চীন দুই দেশ ও দুই বাহিনীর মধ্যে সুসম্পর্ক রক্ষার জন্য সীমান্ত পরিস্থিতি শান্ত করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং এ ব্যাপারে পুরোপুরি আন্তরিক। তবে, নয়াদিল্লী অযৌক্তিক ও অবাস্তব দাবিতে অবিচল রয়েছে। এটা সীমান্ত আলোচনার জন্য ক্ষতিকর। মনে রাখতে হবে, চীন তার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অবিচল। আশা করা যায়, ভারত পরিস্থিতির ভুল বিশ্লেষণ করবে না। তিনি বলেন,
“২০২০ সালে গ্যালভান উপত্যকা অঞ্চলে চীন-ভারত সীমান্ত-সংঘর্ষ হওয়ার পর দু’দেশের সম্পর্ক খুব খারাপ হয়ে যায়। দু’দেশের সম্পর্ককে পুনরায় সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন রকমের প্রচেষ্টা চালিয়েছে চীন। এ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে চীন ভারতকে কোভিড-১৯ মহামারীর গুরুতর আঘাত কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করেছে। সীমান্ত ইস্যুতে দু’দেশের মধ্যে সামরিক কমান্ডার পর্যায়ের ১২ দফা বৈঠকও ইতোমধ্যেই অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে কিছু অগ্রগতিও অর্জিত হয়েছে। তবে, এবারের চীন-ভারত সামরিক কমান্ডার পর্যায়ের ত্রয়োদশ বৈঠকে ভারতের আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়।”
সম্প্রতি কিছু ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘চীনা সৈন্য সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে ঢুকে আটক হয়েছে’ মর্মে মিথ্যা খবর প্রচার করে। অন্যদিকে, চীনা সংবাদমাধ্যম সত্য ঘটনা তুলে ধরে। সত্য ঘটনা হচ্ছে: চীনের সীমান্তরক্ষীরা সীমান্তে নিয়মিত টহল দেওয়ার সময় ভারতীয় বাহিনী কর্তৃক অন্যায়ভাবে বাধাগ্রস্ত হয়। তখন চীনা অফিসার ও সৈন্যরা রুখে দাঁড়ায়। ঘটনার পর চীনা সামরিক কর্মকর্তা ও সৈন্যরা ঘাঁটিতে ফিরে আসে। অথচ, ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো এ নিয়ে মিথ্যাচার করেছে।
“আসলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের এই ধরণের আচরণ নতুন কিছু নয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন ও ভারতের সীমান্ত ইস্যু নিয়ে প্রতারণামূলক খবর ও অপপ্রচার চালিয়ে আসছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো। আর মাঝেমধ্যেই সীমান্তে উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে ভারত। এই ধরণের আচরণ কোনো পক্ষের জন্য কল্যাণকর নয়। এর আগে চীন ও ভারতের মধ্যে বহুবার সামরিক পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সীমান্ত পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নত হচ্ছে। ভারতের উচিত দু’দেশের সম্পর্কের জন্য কল্যাণকর কাজ করা এবং দু’দেশের জনগণের জন্য ক্ষতিকর কাজ যথাসম্ভব কম করা।”
এবারের ঘটনায় ভারত ইচ্ছাকৃতভাবে উস্কানিকমূলক আচরণ করেছে। এ আচরণ চীন-ভারত দ্বিপাক্ষিক চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এর দায়িত্ব পুরোপুরি ভারতের। ভারতের উচিত, দ্বিপাক্ষিক চুক্তি মেনে চলা। আমরা আশা করি, নয়াদিল্লী সীমান্তে কষ্টার্জিত শান্তি বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দেবে।
মোদ্দাকথা, চীন-ভারত সীমান্তে অচলাবস্থার ফল দু’দেশের জন্যই ক্ষতিকর। তবে, এতে ভারতের ক্ষতিই বেশি হবার আশঙ্কা। কারণ, সামরিক শক্তিতে চীন ভারতের চেয়ে অনেক এগিয়ে আছে। নয়াদিল্লীর উচিত এই বাস্তবতাকে মাথায় রাখা এবং যুক্তিসঙ্গত আচরণ করা। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)