লাসার প্রাচীর স্থাপনা মেরামতকারী সিয়া ইয়ু চুন
2021-10-07 19:21:41

অক্টোবর ০৭:  চীনের চিয়াং সু প্রদেশের সু চৌ শহরে জন্মগ্রহণ করেন সিয়া ইয়ু চুন। ২০১৬ সাল থেকে তিনি লাসায় জীবন-যাপন শুরু করেন। বৃটেনের বার্মিংহাম শিল্প একাডেমী থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন সিয়া। তিনি তিব্বতের প্রাচীর স্থাপনা রক্ষার কাজে খুব উদ্যমী। তাঁর চোখে লাসা কী রকম? আর কী কারণে তিনি লাসায় স্থায়ীভাবে কাজ ও জীবন-যাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন? চলুন, শোনা যাক সেব গল্প তাঁর মুখ থেকে।‘আমার কাছে একটি শহরের আকর্ষণ হলো যেটা আমাকে মধ্য রাত পর্যন্ত জেগে থেকে নিজের কাজ করতে উত্তেজিত রাখে।”

 

নিজের দীর্ঘকালীন লাসা জীবন সিয়া ইয়ু চুন এভাবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন লাসায় জীবন-যাপন করা এখানকার সংস্কৃতি ও প্রাচীর স্থাপনা সম্পর্কে জানার একটি দ্রুত উপায়। তিনি বলেন,‘অনেক শব্দ তিব্বতী ভাষার নিজস্ব শব্দ। মূলভূভাগ থেকে তা রূপান্তরিত হয়নি। সে শব্দগুলোর নিজেদের বিশেষ অর্থ রয়েছে। সেগুলো সম্পর্কে জানতে চাইলে এখানে জীবন-যাপন করতে হয় বলে আমি মনে করি। লাসায় স্থাপনায় কালো ও সাদা রঙের ব্যাপক ব্যবধান রয়েছে। অর্থাত্ স্থাপনার রঙিন অংশ ছায়ার পাশে কেন? কারণ এ অঞ্চলে দীর্ঘ সুর্যালোক থাকে। এখানে জীবন-যাপন করার পর সে সম্পর্কে জানতে পেরেছি আমি।’

 

তিব্বতের প্রথম প্রাচীর স্থাপনা সংস্কৃতি ও শিল্প স্পেসটি গত জুলাই মাসের শেষ দিকে চি বেন কাং শিল্প কেন্দ্রে রূপ নিয়েছে।  এ কেন্দ্র  চি বেন কাং লা খাংয়ে অবস্থিত। চি বেন কাং লা খাং লাসার প্রাচীন নগরের ল্যান্ডমার্কগুলোর অন্যতম একটি। সিয়া ইয়ু চুন এর রূপান্তর কাজে অংশ নিয়েছেন। তিনি বলেন,‘চি বেন কাং শিল্প কেন্দ্র রূপান্তরের সময় আমি সকল প্রক্রিয়ার ওপর নজর রেখেছি। একদিকে নিরাপত্তা এবং অন্যদিকে আমাদের নকশার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করেছি। যেমন, কাঠের মেঝে কিভাবে সংযুক্ত হবে ইত্যাদি লক্ষ্য রেখেছি।’

 

চি বেন কাং লা খাং এলাকা অতীতে খাদ্যের মজুদ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এ স্থাপনা থেকে পা বাড়ালেই প্রাণবন্ত পাইকারী বাজারে যাওয়া যায়। খাদ্যের মজুদ থেকে শিল্প কেন্দ্রে পরিণতির কাজ অনেক পরিশ্রমের।

 

নবনির্মিত শিল্প কেন্দ্রটি পার্শ্ববর্তী দোকান মালিক ও আগেকার শ্রমিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। ছোট বেলা থেকে এখানে বড় হয়েছে যারা, তাদের অবাক করে দিয়েছে এ কেন্দ্র। তারা উপলব্ধি করেছে, নিজের জন্মস্থল ‘চি বেন কাং’ কমিউনিটির নামটি ইতিহাস থেকে আসা। এ থেকে নতুন একটি ধারণা সিয়া ইয়ু চুনের মাথায় আসে।

গত বছরের অক্টোবর থেকে সিয়া ইয়ু চুন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিব্বতী শৈলীর স্থাপনা ও লাসার ইতিহাস সম্পর্কে শেয়ার শুরু করেন। তিনি তাঁর পোস্টের মাধ্যমে অধিক থেকে অধিকতর পর্যটন ও তরুণদের লাসার ইতিহাস এবং সংস্কৃতি সম্পর্কে পরিচয় করানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন।

তিনি বলেন,‘আমি লাসার গল্প তরুণদের জানিয়ে দিতে চাই। এখানে আসা প্রত্যেক অতিথি লাসা প্রাচীর সিটি, তার হাজার বছরের ইতিহাস, উপন্যাস, সংস্কৃতি, শিল্প ও সঙ্গীতসহ নানা বিষয়ে জানতে পারবেন বলে আমি মনে করি। একইসঙ্গে আমার মতো বয়সী তরুণ-তরুণীরা লাসার প্রাচীর স্থাপনা মেরামত এবং পুনর্ব্যবহারসহ নানা বিষয়ের নজর রাখবে বলেও আমি আশা করি।’

(রুবি/এনাম/শিশির)