আজকের টপিক চীন-ইউরোপ সহযোগিতা দু’পক্ষ ও বিশ্বের জন্য কল্যাণকর
2021-10-01 19:35:55

অক্টোবর ৭: চীন-ইউরোপ একাদশ কৌশলগত সংলাপ গত ২৮ সেপ্টেম্বর অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়। এতে চীনের  রাষ্ট্রীয় কাউন্সিলার ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এবং ইইরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-র কূটনৈতিক ও নিরাপত্তাবিষয়ক উচ্চপদস্থ প্রতিনিধি জোসেপ বোরেল যৌথভাবে সভাপতিত্ব করেন।

সংলাপে ওয়াং ই বলেন, চীন ও ইউরোপ পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে সহযোগিতা বৃদ্ধি ও মতভেদ হ্রাসের নীতিতে বিশ্বাস করে। জাতিসংঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা বজায় রেখে যৌথভাবে মহামারী ও জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার ধারণাও দু’পক্ষ সমর্থন করে।

ওয়াং ই আরও বলেন, ইইউ বরাবরই চীনের উন্নয়নকে স্বাগত জানিয়ে ও চীনের সঙ্গে ঠাণ্ডাযুদ্ধে না-জড়ানোর কথা বলে আসছে। চীন এই দৃষ্টিভঙ্গির প্রশংসা করে। সম্প্রতি, চীন-ইইউ যোগাযোগ ও সংলাপও বৃদ্ধি পেয়েছে, পারস্পরিক বোঝাপড়া ও আস্থা বাড়াতে যা সহায়ক হবে।

সম্প্রতি ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে অংশ নেওয়ার সময় চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ৬-দফা ‘বৈশ্বিক উন্নয়ন প্রস্তাব’ পেশ করেন। এতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে জাতিসংঘের ‘অবিরাম উন্নয়ন এজেন্ডা, ২০৩০’ বাস্তবায়ন করতে আন্তর্জাতিক সমাজের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। সি চিন পিংয়ের প্রস্তাব ইউরোপীয় ইউনিয়ন কর্তৃক প্রশংসিত হয়েছে। বোরেল বলেন, ইউরোপ প্রেসিডেন্ট চি চিন পিংয়ের ‘বৈশ্বিক উন্নয়ন প্রস্তাব’-কে স্বাগত জানায়। এ প্রস্তাব বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও দারিদ্র্যবিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তিনি বিদেশে নতুন কয়লা বিদ্যুত্কেন্দ্র নির্মাণ না-করার চীনা সিদ্ধান্তেরও ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, এ সিদ্ধান্ত উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সবুজ ও কম কার্বন উন্নয়ন অর্জনে সহায়তা করবে।

বর্তমানে বিশ্ব কোভিড-১৯ মহামারীর বিস্তার, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের অসুবিধা, জলবায়ু পরিবর্তনের আসন্ন প্রতিক্রিয়া এবং দারিদ্র্যের মতো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক সমাজের ঐক্য ও সহযোগিতা দরকার। বিশ্বের দুটি প্রধান সভ্যতা, দুটি বড় শক্তি, ও দুটি বড় বাজার হিসাবে, চীন ও ইইউ সম্প্রতি কিছু বড় ইস্যুতে ঘন ঘন যোগাযোগ করেছে এবং অনেক ক্ষেত্রে মতৈক্যে পৌঁছেছে। এটি উভয় পক্ষের পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়াতে, পারস্পরিক আস্থা প্রসারিত করতে এবং মতভেদ হ্রাস করতে সহায়তা করবে। ওয়াং ই ও বোরেল মনে করেন, দুই পক্ষই সম্পর্ক উন্নয়নে নতুন প্রাণশক্তি যুগিয়ে যাবে।

চীন-ইইউ সহযোগিতা শুধু দু’পক্ষের জন্য নয়, বরং গোটা বিশ্বের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থিংক ট্যাঙ্কের ব্রুগেল ইনস্টিটিউটের সিনিয়র গবেষক অ্যালিসিয়া গার্সিয়া হেরেরো বলেন, "মহামারী এখনও বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্য নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি। এ প্রেক্ষাপটে, ইউরোপ ও চীনের মধ্যে শক্তিশালী সহযোগিতা বৈশ্বিক অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সহায়তা করবে। বিশ্ব অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের পথে বাধা দূর করতে ইইউ ও চীনকে সার্বিক সহযোগিতা আরও গভীর করতে হবে। জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সম্মেলনের গ্লোবালাইজেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্ট্র্যাটেজি বিভাগের পরিচালক রিচার্ড কোজুল রাইটও বিশ্বাস করেন যে, চীন-ইউরোপ সুসম্পর্ক ও সহযোগিতা বিশ্বের শিল্প খাতের শৃঙ্খলা ও সরবরাহ-ব্যবস্থার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)