গত ২২ সেপ্টেম্বর জর্জ এইচ ডাব্লিউ বুশ ফাউন্ডেশন ফর ইউএস-চায়না রিলেশনস এবং ইউএস কার্টার সেন্টার যৌথভাবে আয়োজিত এক সেমিনারে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত চীনের নতুন রাষ্ট্রদূত ছিন কাং একটি গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দিয়েছেন।
ভাষণে তিনি চীন- মার্কিন সম্পর্ক এবং গণতন্ত্রের মূল কথা নিয়ে তাঁর বক্তব্য তুলে ধরেন । সারা দুনিয়ার নেটিজেনদের মাঝে তাঁর এই বক্তব্য ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এটি শুনে এমনকি অনেক পশ্চিমা বিশ্লেষকও চীনের শাসন ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছেন। এককথায় সারা দুনিয়া চীনা বৈশিষ্ট্যের অনন্য গণতন্ত্র সম্পর্কে নতুন করে জানার সুযোগ পেয়েছে এই ভাষণের মাধ্যমে।
রাষ্ট্রদূত ছিন কাংয়ের ভাষণের সারমর্ম হচ্ছে, অনেকে চীন-মার্কিন সম্পর্ককে গণতন্ত্র এবং স্বৈরাচারের প্রতিযোগিতা হিসেবে মনে করেন। আসলে এটি ঠিক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক হচ্ছে বৃহত্তম প্রতিযোগিতা। তবে সেটি তাদের ধারণার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়, বরং এমন ধারণা একেবারে অবান্তর। কারণ চীনে রয়েছে পূর্ণাঙ্গ গণতন্ত্র এবং জনকল্যাণের এক অনন্য শাসন ব্যবস্থা। হাজার বছর ধরে চীনা শাসনের মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে রাষ্ট্রের সবকিছুর মূলে জনগণকে স্থান দেয়া। এটিই চীনা সভ্যতা ও শাসনের অপরিহার্য ভিত্তি, যার সুযোগ্য উত্তরাধিকার হচ্ছে বর্তমানের গণপ্রজাতন্ত্রী চীন।
তিনি বলেন, কোন কোন মার্কিন রাজনীতিক ও তথ্যমাধ্যম গণতন্ত্র এবং স্বৈরাচারের প্রতিযোগিতার কল্পিত একটি গেমস তৈরি করেছেন। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের কেউ কেউ এমন ভুল ধারণা অর্জন করেছেন, চীনের বিরোধিতা করা মানে গণতন্ত্রকে রক্ষা করা। তাই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নয়ন করতে চাইলে প্রথমে গণতন্ত্র, স্বাধীনতাসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন।
তারপার তিনি গণতন্ত্র নিয়ে চীনা দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরার পাশাপাশি এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের বাস্তব অবস্থা ব্যাখ্যা করেন।
রাষ্ট্রদূত ছিন কান বলেন, ‘আমরা কখনো বলিনি, আমাদের রাজনৈতিক ব্যবস্থা সবচেয়ে ভাল। কারণ আমরা বুঝি, একটি দেশের অবস্থার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ব্যবস্থা হচ্ছে সেদেশের জন্য সবচেয়ে ভাল। আসলে সব ব্যবস্থাই ভাল কিনা মন্দ- তা তার অনুশীলনের ওপর নির্ভর করে।’
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের নিজেদের ব্যবস্থায় অবিচল থাকা প্রয়োজন। অপরের জন্য নিজেদের ব্যবস্থার পরিবর্তন করার প্রয়োজন নেই। উভয় দেশের উচিত মতাদর্শের বাধা অতিক্রম করে জিরো-সাম খেলা পরিত্যাগ করে পরস্পরকে সম্মান করা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করা। (শিশির/এনাম/রুবি)