সংবাদ পর্যালোচনা
সেপ্টেম্বর ২৮: ত্রয়োদশ চীন আন্তর্জাতিক বিমান ও মহাকাশযান প্রদর্শনী ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত চীনের কুয়াংতুং প্রদেশের চুহাই শহরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল (সোমবার) অনুষ্ঠিত চুহাই ফোরাম ২০২১-এর কর্মকর্তা জানান, চীনের মহাকাশযান একটি ‘সুপার বছর’ শুরু করেছে। বিভিন্ন দেশের বিমান ও মহাকাশযান শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা চীনের সঙ্গে বিমান ও মহাকাশযান খাতে আরও গভীর ও বিস্তৃত বিনিময় ও সহযোগিতা প্রত্যাশা করছে। বিস্তারিত শুনুন আজকের সংবাদ পর্যালোচনায়।
এবারের চুহাই ফোরামের প্রতিপাদ্য হলো ‘জয়-জয় সহযোগিতার মাধ্যমে ভবিষ্যত্ শুরু করা’। ফোরাম বিভিন্ন মহলের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। মহামারী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের নতুন অবস্থায় ভবিষ্যতের শিল্প ও শিল্প উন্নয়নের পদ্ধতি এবং মহাকাশ খাতে আন্তর্জাতিক বিনিময় ও সহযোগিতা গভীর করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। চীনের মহাকাশ প্রযুক্তি কর্পোরেশনের জেনারেল ম্যানেজার স্যু ছিয়াং উল্লেখ করেন, চীনের মহাকাশযান একটি ‘সুপার বছর’ শুরু করেছে। কেবল প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে নতুন সাফল্যের সূচনাই নয়, বরং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও বিনিময়ের নতুন সম্ভাবনাও দেখিয়েছে।
স্যু বলেন, “‘ত্রয়োদশ পাঁচসালা পরিকল্পনার’ সময় কর্পোরেশন সফলভাবে চীন-ব্রাজিল সম্পদ উপগ্রহ, চীন-ফ্রান্স মেরিন উপগ্রহ, চীন-ইতালি ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক মনিটরিং উপগ্রহসহ বিভিন্ন প্রধান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রকল্প সম্পন্ন করেছে। ১৭বার আন্তর্জাতিক উত্ক্ষেপণ মিশন সফল করেছে এবং ছাং-এ্য ৪-সহ বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যৌথভাবে বৈজ্ঞানিক গবেষণা চালিয়েছে, এবং বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যৌথভাবে মানবজাতির মহাকাশের শান্তিপূর্ণ ব্যবহার এগিয়ে নিচ্ছে।”
তিনি বলেন, নতুন দফায় প্রযুক্তিগত ও শিল্প খাতের দ্রুত উন্নয়নের পাশাপাশি, ভবিষ্যতে মানুষের মহাকাশ অনুসন্ধান এবং ব্যবহার আরও বাড়ানো হবে। এ বিষয়ে সহযোগিতা ও বিনিময়ের প্রয়োজন আরও বাড়বে।
মহাকাশ গবেষণা কাজে রাশিয়ার জাতীয় মহাকাশ কর্পোরেশনের প্রধান প্রতিনিধি সুখভ অ্যালেক্সি মূল বক্তৃতায় রাশিয়ান ফেডারেশনের মহাকাশ গবেষণার পরিস্থিতি ও উন্নয়নের সম্ভাবনা তুলে ধরেন। আরও বেশি দেশের সঙ্গে মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে ভবিষ্যত সহযোগিতার আশা করেন তিনি। তিনি বলেন, বর্তমানে রাশিয়া ও চীন আন্তর্জাতিক চন্দ্র গবেষণা কেন্দ্র প্রকল্প কাঠামোর মাধ্যমে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা করছে এবং সংশ্লিষ্ট চুক্তির কাজ চলছে।
তিনি বলেন, “এই মহাকাশ কার্যক্রমে চীনের সঙ্গে সহযোগিতার বিস্তৃত সম্ভাবনা আছে। যা খুবই তাত্পর্যপূর্ণ। এর কারণ হলো- মহাকাশে দুই দেশের উন্নয়ন, অনুসন্ধান ও ব্যবহারের অভিন্ন স্বার্থ আছে। আমরা বিনিময় করতে পারি এবং যৌথভাবে চাঁদে গবেষণা চালাতে পারি।”
রাশিয়া ছাড়া চীন ও ফ্রান্সের মহাকাশ খাতের সহযোগিতাও দীর্ঘদিনের। ইউরোপীয় গভীর মহাকাশ অনুসন্ধান মিশনে প্রধান ফরাসি কোম্পানি থালেস-এর উত্তর এশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং চীনের প্রধান নির্বাহী জেরেম বেনডেল সাংবাদিকদের বলেন, চীনের মহাকাশ শিল্পের উন্নয়ন আমাদের মনে গভীর রেখাপাত করেছে। এর মধ্যে মহাকাশ শিল্পের উন্নয়ন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। যেমন- চন্দ্র অনুসন্ধান প্রকল্প, মঙ্গলগ্রহে অবতরণ এবং মানববাহী নভোযান খাতের অর্জিত সাফল্য। বিমান চলাচল খাতে আমরা চীনা বাজারের দ্রুত উন্নয়ন দেখে খুশি। আমরা এই বাজারের উন্নয়ন ও বৃদ্ধিতে সমর্থন অব্যাহত রাখবো।
জাতীয় মহাকাশ প্রশাসনের উপ-পরিচালক উ ইয়েন হুয়া উল্লেখ করেন যে, মহাকাশ অনুসন্ধান কাজে মানবজাতির আরও গভীর ও সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য রয়েছে।
তিনি বলেন, “চীন সরকার শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে মহাকাশ অন্বেষণ ও ব্যবহার অব্যাহত রাখবে। জাতিসংঘের কাঠামোর মধ্যে মহাকাশ-সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক নিয়মের আলোচনায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবে এবং এই ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বিষয়ে আলোচনা ও ব্যবস্থা তৈরিতে চীনের বুদ্ধি ও প্রস্তাব দেবে। মহাকাশ গবেষণা উন্নয়নের বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জগুলি যৌথভাবে মোকাবিলা করবে এবং মানবজাতির মহাকাশ খাতের অভিন্ন অগ্রগতি ও দীর্ঘমেয়াদী টেকসই উন্নয়ন এগিয়ে নিয়ে যাবে।”
(জিনিয়া/তৌহিদ/শুয়েই)