জিম্বাবুয়েতে চীনের চতুর্থ দফার কোভিড-১৯ টিকা সহায়তা পৌঁছেছে
2021-09-27 14:06:30

সংবাদ পর্যালোচনা

সেপ্টেম্বর ২৭: গতকাল (রোববার) চীন সরকার জিম্বাবুয়েতে চতুর্থ দফায় কোভিড-১৯ টিকা পাঠিয়েছে। এদিন সেদেশের রাজধানী হারারে-তে টিকাগুলো পৌঁছায়। যা দক্ষিণ আফ্রিকান দেশটিতে টিকা কার্যক্রম জোরদারে সহায়তা করেছে। বিস্তারিত শুনুন আজকের সংবাদ পর্যালোচনায়।

 

রোববার বিকেলে সিনোফার্মের কোভিড-১৯ টিকা বহনকারী বিমান জিম্বাবুয়ের রাজধানী হারারের রবার্ট মুগাবে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। এটি চীন থেকে জিম্বাবুয়েকে পাঠানো কোভিড-১৯ টিকার চতুর্থ চালান।

 

জিম্বাবুয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী কনস্টানটিনো চিওয়েংগা বিমানবন্দরে জিম্বাবুয়ের পক্ষ থেকে টিকাগুলো গ্রহণ করেন। চিওয়েংগা জিম্বাবুয়েকে মহামারী মোকাবিলায় সাহায্য করার জন্য চীনের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, এতে দেখা যায় যে, চীন ও জিম্বাবুয়ের মধ্যে বন্ধুত্ব অটুট রয়েছে।

 

তিনি বলেন, “চীন মহামারী মোকাবিলায় জিম্বাবুয়েকে ক্রমাগত সহায়তা দিয়েছে। যাতে দু’দেশের গভীর মৈত্রী প্রতিফলিত হয়। গত বছরের ২০ মার্চ থেকে জিম্বাবুয়েতে কোভিড-১৯ মহামারী প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। এরপর থেকে চীন মহামারী মোকাবিলায় বড় ধরনের প্রযুক্তিগত ও উপকরণগত সহায়তা দিয়েছে; যা দেশের মহামারী মোকাবিলার ক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে। জিম্বাবুয়েকে নিঃস্বার্থ সাহায্যের জন্য চীন সরকারকে ধন্যবাদ জানায় জিম্বাবুয়ে সরকার।”

 

চিওয়েংগা বলেন, বর্তমানে বিশ্বে টিকা বিতরণে ভারসাম্যহীনতা রয়েছে। জিম্বাবুয়ে চীনের সহায়তাগুলো সময়মত পাওয়ার কারণে দেশে টিকা দেওয়ার কাজ সুষ্ঠুভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। এখন জিম্বাবুয়েতে টিকা দেওয়ার হার ৫৪টি আফ্রিকান দেশের মধ্যে সপ্তম স্থানে রয়েছে।

 

জিম্বাবুয়ের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেদেশের ১৪ মিলিয়ন মানুষের মধ্যে অন্তত ৩.০৩ মিলিয়ন মানুষ টিকার একটি ডোজ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে ২.১৮ মিলিয়ন মানুষের দু’টি ডোজ সম্পন্ন হয়েছে। বেশিরভাগ টিকা হলো চীনের সিনোফার্ম ও সিনোভ্যাক কোম্পানির টিকা।

 

জিম্বাবুয়েতে চীনের রাষ্ট্রদূত কুও সাও ছুন টিকা হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বলেন, কোভিড-১৯ মহামারী প্রাদুর্ভাবের পর থেকে চীন ও জিম্বাবুয়ে সবসময় যৌথভাবে মহামারী মোকাবিলা করে আসছে।

 

কুও বলেন, “চীন ও জিম্বাবুয়ে যৌথভাবে মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে। চীন জিম্বাবুয়েকে প্রতিরক্ষামূলক সামগ্রী প্রদান করেছে, মহামারী প্রতিরোধক চিকিত্সা বিশেষজ্ঞদল পাঠিয়েছে এবং জনস্বাস্থ্য রক্ষায় নানা পদ্ধতিতে সহায়তা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত চীন জিম্বাবুয়েকে চার দফায় কোভিড-১৯ টিকা সহায়তা দিয়েছে। চীন জিম্বাবুয়েকে চীন থেকে টিকা কেনার ক্ষেত্রেও নানা সুবিধা দিয়েছে।”

 

রাষ্ট্রদূত কুও উল্লেখ করেন, মহামারী প্রাদুর্ভাবের পর থেকে, চীন বিশ্বের শতাধিক দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাকে ১.২ বিলিয়নেরও বেশি ডোজ টিকা দিয়েছে। চীন চলতি বছরের শেষ দিক পর্যন্ত বিশ্বকে দুই বিলিয়ন ডোজ টিকা সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বে ‘কোভিড-১৯ টিকা বাস্তবায়ন পরিকল্পনার’ আলোকে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেওয়ার পাশাপাশি ১০০ মিলিয়ন ডোজ টিকা দিয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলিকে মহামারী মোকাবিলায় সাহায্য করবে চীন।

 

রাষ্ট্রদূত কুও জোর দিয়ে বলেন, এই কার্যকর পদক্ষেপ থেকে দেখা যায় যে, চীন দৃঢ়ভাবে মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি প্রতিষ্ঠা করছে এবং মানবসমাজের শান্তি, উন্নয়ন, ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচার রক্ষায় নিজের অবদান রাখছে।

 

এর আগে গত ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও মে মাসে জিম্বাবুয়েকে তিন দফায় কোভিড-১৯ টিকা দিয়েছিল চীন।

(জিনিয়া/তৌহিদ/শুয়েই)