চীনের এমআরএনএ করোনা টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে
2021-09-26 13:59:48

চলতি বছরের জং কুয়ান ছুন ফোরাম এখন বেইজিংয়ে চলছে।  এবারের ফোরামের পার্শ্ব সম্মেলন হিসেবে বিশ্ব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং জীবন ও স্বাস্থ্য ফোরাম গতকাল (শনিবার) অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাতে অংশগ্রহণকারী বিশেষজ্ঞগণ বিশ্বে করোনা টিকার গবেষণা, এবং বিভিন্ন ধরনের টিকার অগ্রগতি নিয়ে কথা বলেছেন।

সামরিক বিজ্ঞান একাডেমির সামরিক মেডিসিন গবেষণালয়ের গবেষক ছিন ছেং ফেং চীনের এমআরএনএ করোনা টিকার গবেষণা ও অগ্রগতি ফোরামে প্রকাশ করেছেন।

তিনি জানান, এমআরএনএ তথা  রাইবোনিউক্লিক এসিড মানব কোষকে নির্দেশনা দিতে পারে এবং মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সক্রিয় করে ভাইরাস প্রতিরোধ করতে পারে।

গবেষক ছিন ছেং ফেং জানান, অন্য টিকার তুলনায় এমআরএনএ করোনা টিকা উত্পাদন ও গবেষণার সময় কম লাগে। কারণ এটি তৈরির পদ্ধতি অনেক সহজ।

তিনি বলেন, এ টিকার উত্পাদন ও গবেষণায় কোন সেলের কালচার মেটিরিয়াল বা গাঁজনের দরকার পড়ে না। এটির উত্পাদন ক্ষমতা সহজে বাড়তে পারে। তাছাড়া, এ টিকা নিরাপদ। কারণ তা নিউক্লিয়াসে প্রবেশ করবে না। চীনে এমআরএনএ টিকার গবেষণা অনেক আগ থেকে শুরু হয়েছে এবং টিউমার চিকিত্সা ক্ষেত্রে ব্যবহারও করা হয়েছে।

কোভিড-১৯ মহামারি শুরু হবার পর চীন এমআরএনএসহ পাঁচটি পদ্ধতিতে করোনা টিকা নিয়ে গবেষণা শুরু করে। চীনের এমআরএনএ করোনা টিকার গবেষণা নিয়ে ছিন ছেং ফেং বলেন, এ টিকার তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা বিদেশে চলছে।

তিনি বলেন, “বর্তমানে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা প্রায় শেষ হয়েছে এবং তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। মেক্সিকো, নেপাল, ইন্দোনেশিয়াসহ নানা দেশে এ পরীক্ষা চালু হচ্ছে। আমরা সবাই তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার ফলাফলের জন্য অপেক্ষায় আছি।”

এ পর্যন্ত বিশ্বে মোট দুটি এমআরএনএ করোনা টিকা ব্যবহারের অনুমোদন পেয়েছে। তা হল জার্মানির বেইনটেক এবং ফাইজারের সহযোগিতায় তৈরি টিকা ও মার্কিন মডার্নার টিকা। টিকা দুটির ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা অনুযায়ী, সংরক্ষণের হার ৯০ শতাংশ ছাড়িয়েছে। তবে এ দুটি টিকার স্টোরেজ তাপমাত্রা যথাক্রমে -৭০ ও -২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ছিন ছেং ফেং বলেন, টিকার তাপমাত্রা সহনশীলতা সমস্যা সমাধানে চীনের গবেষণা দল ধারাবাহিকভাবে টিকা তৈরি পদ্ধতির উন্নয়ন করেছে। এমআরএনএ করোনা টিকা ২-৪ ডিগ্রি তাপমাত্রায় দীর্ঘ সময় ধরে স্টোরেজে থাকতে পারে।

তিনি বলেন, “আমরা অণু থেকে মান নিয়ন্ত্রণ পর্যন্ত নানা উন্নতি বাস্তবায়ন করি এবং আমাদের টিকা ২-৪ ডিক্রি সেলসিয়াসে দীর্ঘ সময় সংরক্ষণ সম্ভব। আমরা ধারাবিহিক পরীক্ষা করেছি এবং নিশ্চিত করেছি, ৬ মাস পর টিকার বিশুদ্ধতা ও অনাক্রম্যতার উল্লেখযোগ্য কোনো ক্ষতি হয়নি।”

ছেন ছেং ফেং আরও বলেন, করোনাভাইরাসের রূপান্তরিত প্রজাতি নিয়েও তাঁরা পরীক্ষা করেছেন। চীনের এমআরএনএ করোনা টিকা আলফা, বিটা, ডেল্টা তিনটি প্রজাতির বিরুদ্ধে কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। (শিশির/এনাম/রুবি)