সেপ্টেম্বর ১৪: চীনের শিল্প ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী সিয়াও ইয়া ছিং গতকাল (সোমবার) বলেছেন, ২০১০ সাল থেক প্রবৃদ্ধিতে চীনের নির্মাণশিল্প টানা ১১ বছর বিশ্বে প্রথম স্থানে রয়েছে। চীন হচ্ছে বিশ্বে শিল্পব্যবস্থার দিক দিয়ে সবচেয়ে সুসম্পূর্ণ দেশ। বিশ্বের ৫০০ রকমের প্রধান শিল্পপণ্যের মধ্যে ৪০ শতাংশ সবচেয়ে বেশি উত্পন্ন হয় চীনে।
এদিন রাষ্ট্রীয় পরিষদের তথ্যকার্যালয়ের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সিয়াও ইয়া ছিং বলেন, ২০১২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত, চীনে শিল্পে খাতের অর্থমূল্য ২০.৯ ট্রিলিয়ন ইউয়ান থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১.৩ ট্রিলিয়ান ইউয়ানে। এর মধ্যে নির্মাণশিল্পের অর্থমূল্য ১৬.৯৮ ট্রিলিয়ন থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬.৬ ট্রিলিয়ন ইউয়ানে। বিশ্বে শিল্পব্যবস্থার দিক দিয়ে সবচেয়ে সুসম্পূর্ণ দেশ হচ্ছে চীন। তিনি বলেন
“বিশ্বের ৫০০ রকমের প্রধান শিল্পপণ্যের মধ্যে ৪০ শতাংশেরও বেশি পণ্যের উত্পাদন সবচেয়ে বিশে হয় চীনে। ফটোভোলটাইক পণ্য, নতুন জ্বালানিচালিত গাড়ি, গৃহস্থালী যন্ত্রপাতি, স্মার্টফোন, ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ শিল্পে বিশ্বে শীর্ষ স্থানে রয়েছে চীন। পাশাপাশি, টেলিযোগাযোগ সাজ-সরঞ্জাম, নির্মাণকাজের যন্ত্রপাতি ও দ্রুতগতির ট্রেনসহ অনেক উচ্চ পর্যায়ের ব্র্যান্ড বিশ্বমানের খুব কাছাকাছি পৌঁছেছে।”
মন্ত্রী সিয়াও আরও বলেন, ‘ছাংএ ৫’ চন্দ্রযানের চাঁদের নমুনা সংগ্রহ, ‘থিয়ান ওয়েন ১’ মঙ্গল অনুসন্ধানযানের সাফল্য, সমুদ্রের ১০ হাজার মিটার নীচে অনুসন্ধানকাজে সাফল্য, ‘পেইতৌ ৩’ বৈশ্বিক উপগ্রহ নেভিগেশন সিস্টেমের সাফল্য—নির্মাণশিল্পে চীনের ধারাবাহিক সাফল্যের প্রমাণ। চীনা নির্মাণ শিল্প ‘চীনা নির্মাণ’ থেকে ‘চীনা সৃষ্টি’-তে রূপান্তরিত হচ্ছে।”
পাশাপাশি, তথ্য ও টেলিযোগাযোগ শিল্পের নতুন উন্নয়ন বাস্তবায়িত হয়েছে। চীনে ইতোমধ্যেই বিশ্বের বৃহত্তম অপটিক্যাল ফাইবার ও মোবাইল যোগাযোগ নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ফাইভ-জি বেস স্টেশন এবং টার্মিনাল সংযোগের সংখ্যাও যথাক্রমে ৭০ ও ৮০ শতাংশ বেড়েছে। চীনের শিল্প ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এবং তথ্য ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থাপনা ব্যুরোর মহাপরিচালক চাও চি কুও বলেন
“২০২১ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত, চীনে ফাইভ-জি বেস স্টেশনের সংখ্যা ১০ লাখ ৩৭ হাজারেরও বেশি ছিল। চীনে সকল প্রিফেকচার পর্যায়ের শহরে ফাইভ-জি প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। বিশেষ করে ‘ফাইভ-জি+শিল্প নেটওয়ার্ক’ নব্যতাপ্রবর্তনের দৃষ্টান্তে পরিণত হয়েছে। ২০২১ সালের প্রথম আট মাসে চীনে ফাইভ-জি মোবাইল ফোন উত্পাদিত হয় ১৬.৮ কোটি, যা ২০২০ সালের তুলনায় ৮০ শতাংশ বেশি। বিশেষ করে আগস্ট মাসে ফাইভ-জি মোবাইল ফোনের ব্যবহার ৭৪ শতাংশ বেড়েছে।”
শিল্প ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী সিয়াও ইয়া ছিং বলেন, বিভিন্ন খাতের জন্য ‘চতুর্দশ পাঁচসালা পরিকল্পনা’ উন্নয়ন কার্যক্রম নির্ধারণ করছে শিল্প ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। চলতি বছর থেকেই এসব কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে প্রবর্তন করা হবে। এতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির স্বনির্ভরতা, শিল্পকাঠামোর সুবিন্যস্ততা, ডিজিটাল অর্থনৈতিক উন্নয়ন, এবং সংস্কার গভীরতর করার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথ সুগম হবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির স্বনির্ভরতা সম্পর্কে তিনি বলেন
“বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নের পথে বাধা দূর করতে হবে। এই প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ বেসিক সফটওয়্যার ও গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক উপাদান কাজে লাগাতে হবে। এতে শিল্পভিত্তির দুর্বলতা কেটে যাবে। পাশাপাশি, শিল্প চেইন ও সরবরাহ চেইনের স্থিতিশীলতা অব্যাহতভাবে উন্নত করতে হবে।” (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)