সেপ্টেম্বর ১৫: গত সোমবার চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)-র সাধারণ সম্পাদক ও দেশের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং শান’সি প্রদেশের ইয়ুলিন শহর পরিদর্শন করেন। তিনি পর্যায়ক্রমে জাতীয় জ্বালানি গোষ্ঠী----ইয়ুলিন রাসায়নিক লিমিটেড কোম্পানি, ‘মি চি’ জেলার ‘ইন চৌ’ রাস্তার ‘কাও সি কৌ’ গ্রাম এবং ‘ইয়াং চিয়া কৌ’ বিপ্লবী পুরাতন ঘাঁটির খোঁজ-খবর নেন। কয়লার বহুমুখী ব্যবহার, মাটির ক্ষয়রোধ ও প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা, বিপ্লবী পুরাতন ঘাঁটি রক্ষা ও ব্যবহার, ইত্যাদি বিষয় তাঁর পরিদর্শনের সময় উঠে আসে।
প্রেসিডেন্ট সি তার সফরকালে সবার আগে পরিদর্শন করেন জাতীয় জ্বালানি গোষ্ঠী----ইয়ুলিন রাসায়নিক লিমিটিড কোম্পানি। সেদিন সকালে তিনি এখানে এসে কয়লার বহুমুখী ব্যবহারসংশ্লিষ্ট প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতির খোঁজ-খবর নেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, জ্বালানি শিল্পের অব্যাহত উন্নয়ন করতে হবে, না-হলে দেশের আধুনিকায়ন সম্ভব হবে না। কয়লার ব্যবহারে পরিবর্তন আনতে হবে, যাতে সবুজ নিম্নকার্বন উন্নয়ন-পথে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়। আর এভাবেই দেশ কার্বন-নিরপেক্ষতার দিকে এগিয়ে যাবে। এই প্রক্রিয়ায় মানবজাতির অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট কমিউনিটি গড়ে তোলার ধারণা কাজে লাগিয়ে পৃথিবীকে সুষ্ঠুভাবে রক্ষা করতে হবে। প্রেসিডেন্ট সি বলেন,
“নতুন উন্নয়ন-ধারণাকে আমাদের উন্নয়নকাজে নির্দেশনা হিসেবে নিতে হবে। জ্বালানি শিল্প আরও উন্নত করতে হবে, না-হলে আমাদের দেশের আধুনিকায়নের লক্ষ্য অর্জিত হবে না। আধুনিকায়নের পূর্বশর্ত হচ্ছে রূপান্তর তথা সবুজ নিম্ন কার্বন উন্নয়ন-পথে চলে এগিয়ে যাওয়া।”
২০৩০ সালের আগ পর্যন্ত চীনে কার্বন নিঃসরণ কমবেশি হবে, কিন্তু এর পর থেকে তা কেবল কমবে, বাড়বে না। আর ২০৬০ সালের আগেই চীন কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জন করবে। এ হচ্ছে লক্ষ্য। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রেসিডন্ট সি এ লক্ষ্যমাত্রার ঘোষণা দেন। বর্তমানে চীন এই দুটো লক্ষ্যকে প্রাকৃতিক পরিবেশ সভ্যতা প্রতিষ্ঠাকাজের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করে, সার্বিকভাবে সবুজ নিম্ন কার্বন অর্থনীতি উন্নয়নের জন্য কাজ করছে।
লোয়েস মালভূমিতে অবস্থিত ‘কাও সি কৌ’ গ্রাম। এটি আগে ছিল খুবই দরিদ্র; এখানে মাটির ক্ষয় ছিল গুরুতর সমস্যা। গত শতাব্দীর ৫০-এর দশক থেকে এখানকার অধিবাসীরা প্রাকৃতিক পরিবেশ সুরক্ষা অভিযান শুরু করে। মাটির ক্ষয় রোধ করে ও ধারাবাহিক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে গ্রামটি দারিদ্রমুক্ত হয়েছে। প্রেসিডেন্ট সি’র এবারের সফরের দ্বিতীয় গন্তব্য ছিল এই গ্রাম। তিনি গ্রামের মাঠে গিয়ে কৃষিকাজের খোঁজ-খবর নেন এবং স্থানীয় অধিবাসীদের সাথে আড্ডা দেন। তিনি বলেন, ‘এখন জীবনমান অনেক উন্নত হয়েছে, আপনাদের আর কী চাই? আপনাদের সুখী জীবন দেখে আমি ভীষণ আনন্দিত।’
একই দিন প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ‘ইয়াং চিয়া কৌ’ বিপ্লবী পুরাতন ঘাঁটিতে এসে এর সুরক্ষা ও ব্যবহারের খোঁজ-খবর নেন। ‘ইয়াং চিয়া কৌ’ সিপিসি’র ইতিহাস এবং চীনা বিপ্লবী ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান দখল করে আছে। ১৯৪৭ সালের ২২ নভেম্বর তত্কালীন সিপিসি’র কেন্দ্রীয় সরকার ‘ইয়াং চিয়া কৌ’–এ স্থানান্তরিত হয়। একই বছরের ২৫ থেকে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত মহান নেতা মাও সেতুং ‘ইয়াং চিয়া কৌ’-এ সিপিসি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সম্প্রসারণ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। এটি হচ্ছে ইতিহাসে বিখ্যাত ‘ডিসেম্বর সম্মেলন’। সম্মেলনে মাও সেতুংয়ের ‘বর্তমান পরিস্থিতি ও আমাদের দায়িত্ব’ শীর্ষক রিপোর্ট গৃহীত হয়েছিল। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)