সেপ্টেম্বর ১৩: আগামী অক্টোবরে ১৩০তম চীনের আমদানি ও রফতানি মেলা তথা কুয়াংচৌ মেলা প্রথমবারের মতো অনলাইন ও অফলাইন—এই দুই পদ্ধতিতেই অনুষ্ঠিত হবে। সম্প্রতি চীনের বৈদেশিক বাণিজ্যকেন্দ্র কুয়াংচৌতে বিদেশি ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে তাদের কুয়াংচৌ মেলায় অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানানো হয়।
১৩০তম কুয়াংচৌ মেলা আগামী ১৫ অক্টোবর শুরু হবে। মেলায় ১৬টি বড় রকমের পণ্যের ৫১টি বুথ থাকবে। এবারের মেলায় ২৫ হাজারেরও বেশি দেশি-বিদেশি উপযুক্ত পণ্য সরবরাহকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান অংশ নেবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
‘হুয়া নান’ মার্কিন ফেডারেশনের প্রধান বহুবছর ধরে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক উন্নয়নে চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। তাঁর পরিচালনায় এই সংস্থার সদস্যসংখ্যা বিগত ১০ বছরে ২০০ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই সহস্রাধিকে। চায়না মিডিয়া গ্রুপ (সিএমজি)-র সংবাদদাতাকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে তিনি বলেন, চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে প্রবৃদ্ধির প্রবণতা বজায় ছিল। দু’দেশের ব্যবসায়িক মহল কোভিড-১৯ মহামারী যৌথভাবে মোকাবিলার সুফল পেয়েছে।
অফলাইনে কুয়াংচৌ মেলা আয়োজন পুনরায় শুরু হওয়া সম্পর্কিত এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, তিনি নিজের প্রতিনিধিদল নিয়ে এতে অংশ নেবেন। এই সম্পর্কে তিনি বলেন
‘প্রথমবারের মতো অনলাইন ও অফলাইনের মাধ্যমে কুয়াংচৌ মেলা আয়োজন করায় বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের মানুষ মেলা থেকে তাদের পছন্দের জিনিস কিনতে পারবে। আমরা উল্লসিত এই ভেবে যে, এসব পণ্য আমাদের দরকার এবং আমরা সরাসরি এই মেলায় অংশগ্রহণ করতে পারব। খুব কাছ থেকে এসব পণ্য দেখতে ও স্পর্শ করতে পারব। অনেকেই অবশ্য কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে চীনে আসতে পারবেন না। তাদের জন্য অনলাইনে মেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে। আমি মনে করি, এবারের কুয়াংচৌ মেলা হবে এক দারুণ মেলা।’
রুশ-এশিয়ার শিল্পবিষয়ক ফেডারেশন প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই চীন ও রাশিয়া এবং এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে বিনিময় বাড়াতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে আসছে। এই ফেডারেশনের ভাইস-চেয়ারম্যান পরপর ৩০ বারে কুয়াংচৌ মেলায় অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি বলেন, রাশিয়া ও চীনের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ বছরের পর বছর ধরে বৃদ্ধি পেয়ে আসছে। চীনা পণ্যের আমদানি ও রফতানির প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কুয়াংচৌ মেলা বেশকিছু অবদান রেখেছে। তিনি বলেন,
‘অনলাইন ও অফলাইনের মাধ্যমে এবারের আয়োজনই কুয়াংচৌ মেলার জন্য এক বিশাল ব্যাপার। আমি আশা করি, এই নতুন রূপে পরবর্তী কুয়াংচৌ মেলাগুলোও আয়োজন করা হবে। আমি বিশ্বাস করি যে, এই প্রক্রিয়ায় নতুন পরিবর্তন আসবে।’
এবারের মেলায় ৪০টি দেশ ও অঞ্চলে ৫২টি ‘ক্লাউড সুপারিশ’ তত্পরতা আয়োজন করা হবে। এতে চীনের গুরুত্বপূর্ণ শিল্পের প্রচার হবে, আন্তর্জাতিক বিখ্যাত ব্যবসায়ী-ক্রেতাদের পারস্পরিক যোগাযোগ হবে, বিদেশি পুঁজি বিনিয়োগকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও দেশি ব্যবসায়ী-ক্রেতারা অফলাইনে মেলায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে।
১৯৫৭ সালের ২৫ এপ্রিল চীনের আমদানি ও রফতানি মেলা প্রথম আয়োজিত হয়। এর পর থেকে প্রতিবছরের বসন্তকাল ও শরত্কালে চীনের কুয়াংচৌতে এ মেলা আয়োজিত হয়। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও কুয়াংতুং প্রাদেশিক সরকারের যৌথ উদ্যোগে এবং চীনের বৈদেশিক বাণিজ্য কেন্দ্রের সহায়তায় অনুষ্ঠিত হয় এই মেলা। এই মেলাকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ‘চীনের প্রথম স্টোর’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন কেউ কেউ। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)