সেপ্টেম্বর ৯: চলতি বছর ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ প্রস্তাবের অষ্টম বার্ষিকী। গত আট বছর ধরে, চীন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের সাথে সাংস্কৃতিক বিনিময় বাড়িয়েছে এবং ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগ বাস্তবায়নকাজের পক্ষে জনমতের ভিত্তি সুদৃ়ঢ় করেছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, চীন এবং মধ্য ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতায় চমকপ্রদ ফল অর্জিত হয়েছে। গ্রীস, চেক প্রজাতন্ত্র ও এস্তোনিয়াসহ মধ্য ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে চীন চলচ্চিত্র খাতে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এ চুক্তির আওতায় চীন ও চেক প্রজাতন্ত্রের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ‘"পান্ডা অ্যান্ড দ্যা মোল’ চলচ্চিত্রটি দু’দেশের শিশুদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
আধুনিক চীনা অ্যানিমেশন কাজগুলো মধ্য ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যেও খুব জনপ্রিয়। ২০১৯ সালে, চীনা অ্যানিমেশনের কাজগুলোর একটি প্রদর্শনী গ্রীসে আয়োজন করা হয়।
সদ্যসমাপ্ত ‘চীন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা—২০২১’-এ ৫৩টি দেশি-বিদেশি পেশাগত কলেজকে নিয়ে গঠিত ‘সিল্ক রোড কারিগর’ ভোকেশনাল কলেজ ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন অ্যালায়েন্স এবং ‘সিল্ক রোড একাডেমি’ আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও বিনিময় প্ল্যাটফর্ম গঠিত হয়। বহুমুখী গণমাধ্যমের মাধ্যমে ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগের আওতায় শিক্ষা খাতে সহযোগিতার চিত্র ফুটে উঠেছে।
জাদুঘরগুলো ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগসংশ্লিষ্ট দেশগুলোর মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় ও পারস্পরিক শিক্ষার প্লাটফর্মে পরিণত হচ্ছে। চলতি বছরের মে মাসে, ICOM এর সংগ্রহ সুরক্ষা কমিটির ১৯তম সাধারণ সভা চীনে অনুষ্ঠিত হয়। কোভিড-১৯ মহামারীতে প্রভাবিত হলেও, বিশ্বজুড়ে ১ হাজার ৫ শতাধিক বিশেষজ্ঞের মধ্যে মতবিনিময় হয়। চীনের রাজ্য প্রশাসনের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য জাদুঘর এবং সামাজিক সাংস্কৃতিক অবশেষ বিভাগের পরিচালক লুও জিং বলেন,“অনেক বিদেশি বিশেষজ্ঞ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন যে অগ্রগতি ও সাফল্য অর্জন করেছে, তাতে বিস্মিত হয়েছেন।”
২০১৯ সালে চীন ও কেনিয়ার বেশ কয়েকটি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান কেনিয়ার লেক বোগোরিয়ার স্থানে প্রত্নতাত্ত্বিক খনন শুরু করার জন্য একটি যৌথ প্রত্নতাত্ত্বিক দল গঠন করে। প্রাথমিক প্রত্নতাত্ত্বিক তদন্তে জানা গেছে যে, গ্রেট রিফট ভ্যালিতে বোগোরিয়া লেকের আশেপাশে খুব সমৃদ্ধ মধ্য-প্যালিওলিথিক সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ রয়েছে, যা আধুনিক মানুষের উত্পত্তি সম্পর্কে অনেক তথ্য দিতে পারে। চীন এবং কেনিয়ার বোগোলিয়া হ্রদ স্থানের যৌথ খনন প্রকল্পে অংশগ্রহণকারী ঝাও কিংপো বলেন,
“কেনিয়া ন্যাশনাল মিউজিয়ামের সাথে আমরা যে প্যালিওলিথিক জরিপ এবং খনন প্রকল্পটি চালিয়েছিলাম তা কেবল 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের অংশ হিসেবেই করা হয়নি, বরং কেনিয়ায় আধুনিক মানুষের উত্পত্তিসম্পর্কিত আরও প্রমাণ খুঁজে বের করার জন্য করা হয়েছিল।”
সংস্কৃতির উত্তরাধিকার হওয়া সংরক্ষণের সঙ্গে জড়িত। সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার সুরক্ষা করলেই পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সম্পদ রেখে যাওয়া সম্ভব। ইউনেস্কোর কর্মকর্তা শ্রী ওউ মিনক্সিং এই ক্ষেত্রে চীনের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন,
“চীন অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলিকে প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করে চলেছে, যাতে তারা কম্বোডিয়ান অ্যাংকর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ এবং নেপালের কাঠমান্ডু উপত্যকার সুরক্ষাসহ তাদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারকে আরও ভালভাবে রক্ষা ও বিকশিত করতে পারে।” (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)